অনন্ত সুজন এর গুচ্ছকবিতা।। কুয়াশা

অনন্ত সুজন এর গুচ্ছকবিতা।। কুয়াশা

অনন্ত সুজন এর গুচ্ছকবিতা

না কবিতা 


আক্ষরিক অর্থে তুমিও যাকে নিঃসঙ্গতা বলে অভিহিত করো---তার সংজ্ঞা ও অস্তিত্বকে বরাবরই অস্বীকার করি। জানি না, কিভাবে নিঃসঙ্গ হয় মানুষ! নিজেরই ভেতর অসীম সমুদ্রের উন্মাদনা থাকতেও অহর্নিশ জলের অন্বেষণ করে। অথচ প্রতিটি বিহ্বল বিকেলে নীল তিমি অদেখা হাসি রেখে যায় বালিয়াড়ি জুড়ে। ঘামের প্রশ্রয়ে এত যে লবণ, সে-ও এক গণিত। উপকূলে ঝাউপাতা অবিরাম কাঁপে, ঢেউদল ক্যাঙ্গারুর লম্ফনরীতি রপ্ত ক'রে ঠিকরে আসে হৃদয়ের বেলাভূমি লক্ষ্য করে। সে-সব বিদ্যুৎ অশেষ শোভাকর, পেঙ্গুইনের হিমডানার লঘু অন্ধকারে---পৃথিবীতে প্রথম যারা তুষার ঝরিয়েছিল। তবুও কী কথা অসমাপ্ত রয়ে যায়? বলো সন্ধিক্ষণ, খরগোশের পায়ের নিচে নিভু নিভু কচ্ছপের যাপিত জীবন? এক ঋতু হতে আরেক ঋতুর দূরত্ব বেশি নয়---ওরা রক্তের ভেতর খেলা করা যমজ বোন।


হয়তো অতিকথনকে ফিরিয়ে দিতে পারো---সে কিন্তু বসে থাকে সন্ধের সমভাবে; ফেলে আসা সঙ্গ-প্রসঙ্গের আড়ালে জ্যোৎস্নাখচিত ওই স্মৃতির ডাকপিয়ন।


নিয়তি 


ক্ষুধার আবেগে অদেখার শকুন
ডানার ছায়া ফেলে শূন্যে ধাবমান
তীক্ষ্ণ দৃষ্টির অন্তরাল থেকে ঝরছে---
অগ্নি-মার্বেল।
দূরের নির্মমে কেউ কী দেহদানে
পৃথিবীর ওজন কমিয়ে দিলো?
ভারাক্রান্ত সবুজ উৎসবে সেইসব
বহুবর্ণিল ঘুড়ি মেঘ ছুঁতে চাইছে।
যখন অন্ধকার ক্রমশ ঘনীভূত---
রাষ্ট্রনালীতে।
আপেল ফল কালো হয়ে যায়---চলো,
গুম হবার আগেই খুন হয়ে যাই।



সুইসাইড 


দু'চোখ বন্ধ অচেনা আবেশে
গোধূলি এক্সপ্রেস ছুটে আসছে---
ঝড়ের আবেগে, অযুত চুম্বনে;
পেতেছে শয্যা তাই পাথরে
সুসজ্জিত, নিরাপদ অন্ধকারে।
প্রত্যাশার আলিঙ্গন চূড়ান্ত হয়
তুমুল সংঘর্ষে, হঠাৎ!

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন