সাব্বির আহমাদ এর গুচ্ছ কবিতা
মায়াহীন পালক
উদর পুর্তি হয়ে গ্যাছে রাত।গর্ভস্থ যতসব বেদনা বিপুল আনন্দে পিষ্ট করছে হৃদয়ের পথ; হৃদয় মনে হয় ততই থকিত পাথরের এক ফুল।আস্তাবলে পড়ে আছে জিম্মি এক কবুতর।রাত, নিজেকে টেনে হিঁচড়ে শান্তস্বরে পড়ে আছে এখন তার ভগ্ন দেহের পাশে। কোথায় সেইসব রঙিন সোহাগ; যার বর্ণনা পাওয়া যেতো একসময় তোমার নদীয়াম চোখে।জানি, তোমাকেও লুকিয়ে ফেলা হয়েছে গভীর অন্ধকারে। প্রতি মেকি সন্ধ্যায়, যখন হুরমুর করে অন্ধকারের নকশি করা পা; অবাধ্য হয়ে ছড়িয়ে পড়ে গলিতে গলিতে। জানি,ঠিক তখন, ঠিক তখনই তোমাকে আড়াল করে এক জিম্মি কবুতরের মায়াহীন পালক।
অপহরণ
সে হয়তো ডুবে মরার ভান জানতো।
মাঝে মধ্যে এমন আরোহী চোখে তাকাতো ;
মনে হতো একটা জোয়ার ভাঙা ঢেউ সমস্ত ব্যকুলতা
নিয়ে আছড়ে পড়ছে বুকে।
ফুটফুটে জোছনা রাতের দৃশ্যরা অপহরণ করতো আমায়। দূরের দাঁড়িয়ে থাকা একটা পাহাড় ক্রমশ নূজ্ব্য হয়ে
বলে যেতো ; মৃত্যুর জন্য একটা প্রহর ভিষণ ভাবে থেমে আছে এখানে। আর নগ্ন পায়ে বিছিয়ে আছে তার নরোম বিভ্রম হাসির ঢেউ। তুমি অন্ধ ও বধির। তুমি অবশ ও ব্যথিত। তুমি ; তুমি এখানে এসো। এবং উজাড় করে খুলে দাও তোমার বেবাক বিতৃষ্ণার গুঞ্জিত হাহাকার ।
সে হয়তো অভিনয়ও জানতো।
মাঝে মধ্যেই এমন ভাবে খুলে দিতো পাঁজরের হাড় ;
দ্যাখতাম সেখানে একটা ভিষণ একাকী এক ফুল —
দ্রোহের অনলে মগ্ন হয়ে পুড়ছে।
বৃষ্টির দিনের কবিতা
বৃষ্টি হচ্ছে, সিনথিয়া রহমান। বৃষ্টি হচ্ছে খুব জোড়ালো এবং নিমগ্ন হাওয়ায় বয়ে যাচ্ছে স্বপ্নীল কিছু ঘোর।
ভিজতেছি, ভিজতেছি ; রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমি ভিজতেছি তোমার অপেক্ষায়।
সিনথিয়া রহমান, আমাকে দ্যাখো —
কাকের মতো ভিজে চুপসে আছি।
একমনে হেঁটে হেঁটে দ্যাখতেছি ; বৃষ্টিতে ভেজা রঙিন যতসব বিলবোর্ড ; ইন্ডিয়ান অর্ধনগ্ন এ্যাঙলো এ্যাক্টার্সের অন্তর্বাসের হাতছানি।
বৃষ্টি হচ্ছে ধুমসে। বৃষ্টি হচ্ছে এলোমেলো এথারে পাথারে। বৃষ্টি হচ্ছে অপেরা গানের তানে সন্ধিবদ্ধ সুরে। কানের পাশে তোমার গানের সুরের মতো বৃষ্টি হচ্ছে ঝিরিঝিরি।
'আজো রিনিরিনি বর্ষণমুখর বাদলা দিনে'।
বৃষ্টি হচ্ছে সিনথিয়া রহমান। বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টি হচ্ছে যেন তোমার চিক্কণ সুরে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন