তাপস চক্রবর্তীর গুচ্ছ কবিতা
অমরত্বে দাবী নেই
আমার অমরত্বে দাবী নেই—নেই
নেই হাপিত্যেশ কিংবা বর্ণবাদীর স্লোগান।
এখন
লক্ষ্যভেদ শেষে
ব্যারিকেড ভেঙে ফেলা অদম্য পাপী এক
মথুরামোহন কংস।
রাধা হয়ে
তুমিও চোখ বন্ধ করে
বলো
নব্বুই কতদূর!
যদিও আমি স্বৈরাচারী নই
রাষ্ট্রের কেউ নই
সংসারের সংসারী নই
নই
নই
কেবল পশুর আস্তাবলে উচ্ছিষ্ট মাত্র।
একা
একদিন ভাঙা চাঁদ ভেঙে
শেষ বর্ষা শেষে
ধুল পথ কাদা করে যেতে যেতে
বলবো
আমি রাষ্ট্রের কেউ নই
তোমারও কেউ নই
জোয়ান জোয়ারি বাঁধ
বুকের জমানো ছাইগুলো উড়িয়ে দিয়েছি
পারতো কুড়িয়ে নিও
আমিও রাতের আঁধার কুড়িয়ে নিয়েছি
ভরিয়ে তুলেছে ফুলের সাঁজি।
মনে পড়ে, শরত রাতের চোখাচোখি
তখন তোমার হয়তো ষোল
এখন ভরা সংসার, আহ্লাদ লুটে বিছানার চাদর
আমার কাটে শুধু আঁধারের বোল।
এখন মধ্যাহ্ন— এখানে ওখানে ভাসে রাতের ছবি
চটজলদি নেমে আসে রুপোলি চাঁদ
রুপোলি জ্যোৎস্নায় আঁধার কুড়িয়ে দেখি
শঙ্খের বুকে জাগে জোয়ান জোয়ারি বাঁধ।
অবসন্ন শ্মশান
শহরের ইচ্ছেরা আজকাল দরোজা বন্দি
দেখি জানালায় বসেছে কাক।
জুঁই কিম্বা গোলাপের খুশবু— ঈর্ষার নদী
অনেকটা জোঁক, যীশুর গেঁথে দেওয়া শরীর।
ট্রাম কার্ডে রকমারি ডটকম
পিঁপড়ের সারি— গিরিগিটী
ফসিলের আকার যেন ওয়ার্কএনহায়ার।
কাঠগোলাপে মুগ্ধতায় আরেকবার
এসো
সেই উনিশের শেষ পত্রালাপে
কী লিখেছিলাম?
দেখো— রথের ঘোড়াগুলোর টঙের চারপাশে
নির্ঘুম ধর্মান্তরিত ঘাসফড়িং
দেখো— চরিদিকে এখন বিষন্ন শ্মশান
বাবার রেখে যাওয়া আধ পোড়া কাঠ।
জল
জল বাড়ছে→ লোকাল বাসের মতো।
দু'পায়া মানুষ আসে এবং ভাসে
জল ও প্রেমে।
জল কমে যায়
হাসিফুল বাসি হয় ছেঁড়া জামাটার আদলে...
ধারাপাত খুলি—
দেখি
তোমার শূন্যতা অষ্টপ্রহর।
প্রেমের মতোই ধর্মহীনতা
যেন চুনবালি আর জোড়া শালিকের কীর্তন।
অথচ গুনিন সংখ্যার পেছনে আমি
আমাদের বিষাদ ছুঁয়ে যায়—
প্রান্তিক যোগানে।
সাংবিধানিক কলাকৈবল্যবাদ
ধরুণ গনপতি থেকে গণতন্ত্র
তারপর রাষ্ট্র
বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদের উত্থানে
স্বয়ং বিষ্ণু
রজোদোষ রাজ্যের লক্ষ্মী
গাধার পিটে সরস্বতী
ইঁদুর দৌড়ে
উল্লাসিত করমচার যোগান রেখা।
মুখ্য নয় এখানে সূর্যের সাম্যতা— বৃষ্টির সরলতা
বিচুলি পাতায় খুসখুস জীবন
তবুও এসো মুখের লাগাম খুলে বলি
পাখিদের সাংবিধানিক কলাকৈবল্যবাদ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন