গুচ্ছকবিতা
লুৎফা শাহিন
কুওতসঞ্চারী প্রহরের দিকে
ইশারাগুলো উড়ে যায় উড়বর্ত অহল্যা অভিমান নিয়ে-
কোনো অপেক্ষার ছন্দিতদৃষ্টিপথে
ঝাঁপিয়ে পড়ে গৃহসারি
নানাভঙ্গির দরোজার ফোকর দিয়ে এই
গতিপথের দুয়ারবিহীন
বাস্তবের শিল্প সম্পন্ন করতে চান তিনি-
নির্বোধ উতালায় চোখের কার্নিশে পুড়ে
একদিন সম্পর্কের ঘুম ভেঙে
ধ্বনিজন্মে গোধূলিদ্বিধার দৌড়-কালস্রোতের অনি:
শেষ দৌড়-রোদের
পথে পথে হাওয়ার আঁচলে এইসব কলহাস্তরিতাদিনে
সংসারের আয়ু ও শক্তির সীমা যেন তাহার
জটিল বিস্তারে সমুদায়ের প্রান্ত স্পর্শ করতে পারে-
কখনো স্বাধীনতাবোধের
অরক্ত আগুনের রক্তাক্ত ছায়ায়
পুর্ণিমা বিষাদময় জোছনা-অনুগত শীতবোধের অনুক্ষণে
অভ্যন্তরীণ ক্ষরণ,রক্তপাত ও
আত্মদংশনের হাহাকার
এই দিগন্তহারানো ক্রমাগত দৌড়ের ভেতর জল ও অন্তরীক্ষে
সমপ্রাণ সখা খুঁজি-সমীকৃত হৃদদেবতার আশ্রয় খুঁজি-
আমার পঞ্চ আঙুলের এই ধৃত মনোহর কলমের দিকে তাকিয়ে
আছে তাহার কুওতসঞ্চারী প্রহরের দিকে দিকে-
আটপৌড়ে কাব্য
অভিমানী কাব্যের নুপুর ফেলে এসেছি গোপনে অবচেতন মনে তোমাকে ভালোবেসেছি কাব্য, তুমি টের পেয়েছো নিশ্চয়! এখন মন খারাপে তোমাকে খুঁজি, একাকিত্বের নির্জনতায় তোমাকে খুঁজি । আনন্দে দিশেহারা বোধ হলে তোমাকে খুঁজি কাব্য। তুমি আমায় ছেড়ে কখনো যাবেনা, তাও জানি, আমার কাছে তোমার কোন প্রাপ্তি রবে না, তাও জানি, ভাবনার অলি গলিতে শুধু তুমি আর তুমি। কাব্য আমি তোমার হাত ধরবো না, তোমার বুকে মাথা রাখবো না, তোমায় জড়িয়ে আলিঙ্গন করবো না, শুধু তোমার চোখে অগ্নিশিখা আমায় মাতাল করিও। কাব্য তোমায় লিখতে খুব ইচ্ছে করে প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ, তোমায় যতেœ বুকে গুছিয়ে রাখি, যেন মলিনতা তোমায় স্পর্শ না করে । কাব্য তোমাকে ভালোবাসি সারাবেলা। তুমি ছাড়া কে আছে বলো, সবাই নিজ স্বার্থে ব্যস্ত, অথচ তুমি ছেড়ে যাও না, কাব্য কতবেশি ভালোবাসলে তোমার শরীরে ডুবে যাবো। কত বেশি যতœ করলে তুমি পবিত্র সুন্দর হবে! কতো বেশি ভালোবাসলে , তুমি আমি একাকার হবো ! ভালোবাসি নিবিড়ভাবে কাব্য, অনুভব ও স্পর্শ জড়িয়ে রাখি আমারই করে নিজের ঈশ্বরে!
ছল-চাতুরির করতলরেখা
মলিন দিগন্ত-ফুঁফিয়ে উড়ছে আকাশে মাতাল সময়ে-
চরম ঘৃণা, ঈর্ষা আর হীনমন্যতার পিঠে বৃদ্ধা আঙুল দেখিয়ে একদিন ঠিক আকাশের মহাশুন্যতায় উঠে এই জরাজীর্ণ সময়ের হাত ছিঁড়ে ফেলবো। জানি-নদীটির ওপাড়ে আরেকটা নদী সাগরের শেষপ্রান্তে ছায়াময় সংসার আর এদিকে দাপটের আড়ালে লুকিয়ে যায় নৈতিকতা! ক্ষমতা অন্ধ করে পৃথিবী নিতে চাই হাতের মুঠোয়! কোথাও ভদ্রতা, সভ্যতা, মানবিকতা খুঁজে পায়না। মিথ্যাকে সত্যি বানানো এক অদ্ভুত তাড়া আজ মানুষের মাঝে! গাড়ি বাড়ি , ব্যাংকে নোট জমানোর নেশা ক্রমশ হাত বাড়িয়ে বুকে জড়িয়ে দীর্ঘ শান্তির বানী, কোথাও আজ আর মানুষ নেই। মানুষ হলে মানসিক শান্তির সন্ধানে সত্যের মুখোমুখি হতো! মানুষ হলে প্রতিবাদের ঝড়ে প্লাবিত হতো,সমগ্র জনতা! আমি মানুষ খুঁজে প্রতিদিন স্বপ্ন বানায়! একদিন সমাজিক পরিবর্তন এসে হাতছানি দিয়ে নম্রতার ছোঁয়ায় আলোচনার মধ্যমনির ভুমিকা জীবনের তাড়নায় উচ্ছ্বাস উদযাপনে ব্যস্ত। আমরা আজ মানুষ বুঝি না । জীবনের প্রয়োজনে অমানুষের সাথে কোলাকুলিতে সঙ্গ খুঁজে যাই , পাই বা না পাই তবুও দিন যায় আশায় আশায়!
থলথল হেসে ওঠে প্রাচীন অন্ধকার-
ছল-চাতুরির করতল ভেঙে একদিন এই স্বপ্নের
বিপুল জঞ্জাল সাপ করে দেবো
স্বাধীনতাবোধ অলক্ত আগুনে জ্বলে আর নেভে
মানুষের ভিড়ে মানুষ আছে- জীবনের বর্ণিল দৌড় কোলাহলের পাশে একাকিত্বের দারুণ সংঘাত। কংক্রিটের মন ভাঙে সামাজিকতার অলীক লৌকিকতার এক গর্তে সব উবে জমা পড়ে আছে। সবাই কিন্তু প্রীতিলতা নয় কিংবা সূর্যসেন! দু:সাহসের বুক সবার জন্ম হয় নাতাই নিরপরাধ নিষ্পাপ প্রমাণ করাও বেশ দুষ্কর!
এই সাহসপ্রেমের অলক্ত আগুনে ছাই হয় অজান্ত ইলোরা রেনু তাই এই মহিমাণি¦ত ক্ষুধায় সুবিবেচকের আজকাল বড্ড অভাব পড়েছে দিনে। জানিপাখির ঝাঁকবাধা দলগুচ্ছ একা স্বাধীন নয়, এরাও কারো না কারো খাঁচায় বন্দি মিথ্যেপাগল ভালোবাসায়। সমুদ্রের বাঁকভাঙা প্রতিশোধ নদীও নিয়ন্ত্রণ হারায়,তারপরও অনন্তের গরলে ধ্বনিজলে ধুয়ে মধ্যমনে প্রতিবাদই একমাত্র শৃঙ্খল ভাঙার প্রধানতম উপায়
হায় অসহায় প্রতিবাদ ! হায় নিরূপায় সাহস-হায়রে আমার বুকের স্বাধীনতা লেপ্টে আছো অনিয়মের চুক্তিপত্রে আর উপেক্ষার স্বাক্ষরে অপ্রকাশিত বালাম উচ্ছশৃংখলতার ভেতর জ্বলে আর নেভে!
ক্রমাগত দৌড়াচ্ছি
তোমাকে দেখার সুখ
তোমাকে দেখার বিসুখ
তোমাকে পাবার মন স্রোতের আলস্যে করিব গমন
প্রতিদিন হানা দ্যায়মহিমাণি¦ত ক্ষুধাময় গোপন হনন
অন্ধকারেও খুঁজিআলো নাকে শুকি সঝরাসূত্রে বিশ্বাস নিয়ম বদলায় জানি
আয়ু কমে দু:স্বপ্নের বিছানায় উড়েযাওয়া সেতু পার হই সুন্দর পায়ে তা মানি
এই আছি
এই যাচ্ছি
আসলে আমরা জীবনের সাথে
ক্রমাগত দৌড়াচ্ছি!
স্বপ্নায়নের জোছনা
প্রশান্তি হিমেল হাওয়া বহে যাক হৃদকমলে-
এই বিভৎস বিশ্ব-পরাজিত বিবেক আর লুটেরা প্রজন্ম
আমরা দেখতে চাই না-
ফিরিয়ে দাও যুক্তিরোগী সূর্যের হাসি, ঢেউ ঠেলা আরোপ
পুনোবাহার থেকে টু পয়েন্টে জাতিসংঘ!
ছিঁড়ে ফেলো এই সব পাতলা তর্ক এবং বিঘটনার সংবেদ
আমরা স্বপ্নায়ানের জোছনায় শান্তি চাই-
| |||||||||||||||
| |||||||||||||||
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks