গুচ্ছকবিতা।। এল.এস মীর সাব্বির poems by ls mir sabbir_kuasha



গুচ্ছকবিতা।। এল.এস মীর সাব্বির


দুঃখ ভুলের কারবার 

কষ্ট গুলো সব ফুল হয়ে জন্মাক 
ফুটুক পছন্দের শিউলি হাসনাহেনার মত 
শুভ্রতা ছড়াক বিষন্নতার সকল মুহূর্তে 
মোহেই আকৃষ্ট থাকি প্রতিক্ষণে ।
শত দুঃখ গুলো ভোর হয়ে যাক 
বিরহ সকল শুরু হোক নতুন এক সকাল হয়ে 
ভোরের আলোয় ঢেকে যাক নির্ঘুম রাতের ক্লান্তিগুলো 
জীবন শুরু হোক আধার শেষে নতুন ভোরের আশায়
যেমন করে রাত্রি কেটে আলোর দেখা মেলে ।
ভুল গুলো অনুশোচনায় রূপ নিক 
জাগুক তা থেকে ব্যক্তিগত অনুপ্রেরণা 
অভিজ্ঞতার দুয়ার খুলুক ভুলের খিল ভেঙে 
পরিতপ্ত হয়ে বরং শিক্ষা নেই 
উন্নয়নের সিঁড়ি হয়ে দাঁড়াক ভুলের পাথরে ! 
বেদনা হাজার বোধে পরিণত হোক 
অনুভবে সূচনা হোক জীবন যুদ্ধে বেড়ে ওঠায় 
বেদনায় প্রেম জাগুক মনে 
আত্ম উপলব্ধি হোক ভিতরকে জানার 
 সহনশীলতা ,সহানুভূতি ও ভালোবাসায় রুপ নিক 
কোনো করুণার বিজে আমার জন্ম নয় 
বরং ফুলের ঘ্রাণে আমার মরণ হোক —


নিঃসঙ্গতা

মানুষ যখন একা থাকে তখন তার জমে থাকা 
হাজারো স্মৃতি তাকে ঘিরে রাখে ।
অতীতে হারানো কিছু টুকরো স্মৃতি
পাঁজরের টুকরোর মতোই 
চারিপাশ হাঁটতে থাকে কংকাল হয়ে !
পুরোনো স্মৃতি আর জীবনের গল্পগুলোকে
এক এক করে বের করে আনতে থাকে ।
ঠিক সেই মুহূর্তেই কাছের মানুষটা 
আরও নিঃসঙ্গ করে তোলে 
সেই স্মৃতি গুলো ভেবে  !
সব মিলিয়ে নিজের ব্যক্তিত্বকে ভালবাসতে থাকে 
যার প্রেক্ষিতে এত আয়োজন নিজেকে নিয়ে !
মানুষটি ঠিক সেই মুহূর্তে নিঃসঙ্গতা নামক 
ক্ষুদ্র বাক্যটির মাহাত্ম্য উপভোগ করতে থাকে ।
ঠিক যেমনটা আমিই করে থাকি 
এই নিঃসঙ্গতার উপভোগ্যময় মুহূর্ত টা  !


আগুন 

নিয়তো যে দহনে জ্বলছি 
যে আগুনে পুড়ে ক্ষত হচ্ছি 
তার থেকে নিজেকে ব্যথিত করার উপায় জানা নেই ।
হৃদয় কে পোড়ানোর মতো কোনো 
আগুনের অস্তিত্ব আমার জানা নেই  !
নিজের সাথে যে নীরব যুদ্ধ করে যাচ্ছি ,
এর থেকে কোনো বিশ্বযুদ্ধ আমার খোঁজে নেই  ।
যুদ্ধে ক্ষত রক্ষার্থেই তো ঢাল ব্যবহার হয় –
আমি বরং ঢাল হিসেবে দুঃখ কেই ব্যবহার করলাম ।
বিজয়ী হতে ভাবী না বরং সারেন্ডার করতে ভালোবাসি —
জ্বলন্ত তন্দুরের চুলার আগুনে থেকে ,
দ্বিগুণ বেশি জ্বলছে হৃদয়ে রোজ  ।
সৃষ্ট তাপ বক্ষ পিঞ্জরেই ছড়িয়ে যাচ্ছে 
যেমন করে ছড়িয়ে থাকে তন্দুরের চুলার বাক্স তে ।
তাতে শত তন্দুর রুটি ফুলালেও অবশিষ্ট রয়ে যাবে —
জ্বলন্ত চিতাতে পোড়া আগুনের চেয়ে
দ্বিগুণ ভাবে পুড়ছি দিবারাত্রি —


প্রাচীন দুঃখ যাপন

আমার প্রাচীন কোনো দুঃখ থাকুক 
বরং দুঃখ শত আপন হোক 
সুখ বিহীন জীবনই হোক আমৃত্যু 
তবুও দুঃখ কেই সঙ্গী করি ।
সকল দুঃখের একটা নির্দিষ্ট রং থাকুক 
আমার দুঃখ না হয় সোনালী হোক 
ছাপোষা এ জীবনে কি আর চাওয়ার আছে 
সবই ছারপোকার মত ক্ষুদে পোকার 
জ্বলন্ত কামড়ের ন্যায়।
দুঃখ কেই আপন করতে শিখি এখন 
বিরহের সুর প্রিয়তম গানের মায়া 
জলের কলরবে বিরহ ভেসে উঠুক 
ঢেউ এ হোক হৃদয় খোলার মাধ্যম ।
প্রিয় যমুনার তীরে হোক আমার আশ্রয় ! 
টুকরো সুখের স্পর্শ পেলেই এখন 
নির্বিধায় যেনো টেনশনে ডুবে যাই,
নিশ্বাস আটকে দম বন্ধ লাগে বিষম ।
একটু বাঁচার সাধে শ্বাস নিতে 
ধারণ করি বুকে আপন কোনো দুঃখের সুগন্ধ ।
আমার বাঁচার সাধ হোক একটু যাতনাময় বিরহে 
নিশ্বাস উঠুক কষ্টের ঠুনকো সংস্পর্শে 
হৃদয় জাগুক ব্যথার দেয়াল বেয়ে 
মরণ হোক আমার ফুলের গন্ধে !!
তাই আপন করতে শিখি রোজ 
প্রাচীন কোনো দুঃখের ছোঁয়া |

সুখের ঠিকানায় 

গভীর রাত, নিস্তব্দ শহর, ঘুমন্ত জাতির সবরহ একেলা নির্জন পথ, পায়ের পর পা,হেঁটে চলা নিস্তব্দ শহরে জনাকীর্ণ শহরের সকল মানব যখন ঘুমের ঘরে হেঁটে চলছি একেলা নির্জন পথে,কিছুটা সুখের খোঁজে। ঝিঁঝিঁপোকার শব্দে,কলরব বিহীন এ শহর নীরবে পথচলতে এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে,সকল মানব যখন দিনের সব ক্লান্তি সরিয়ে ঘুমে আচ্ছন্ন। তখনই একটু সুখের খোঁজে পথ হাঁটছি ,ক্লান্তি সরাতে ।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন