গুচ্ছ কবিতা।। রফিক বকুল
ঐশ্বরিক ছায়া
আমি একটি ছাতিম গাছের ছায়া ধরতে দৌড়াচ্ছি গাছটির অপর প্রান্তে সাজানো গোছানো কতগুলো বিচ্ছেদ, তার উচ্চতর
ডালে ডালে ঝুলে আছে নানান আকৃতির জুলুম,
আমার হাত দুটো দৌড়াচ্ছে ক্রমাগত
সে কষ্টের ছায়া সঙ্গী হতে,
গাছটি আমার বাল্যকাল
অবস্বাদ শরীরের পথ্য।
সন্ধেবেলা ঝাঁঝালো ফুলের গন্ধ, তবুও
আমার হাত দুটো দৌড়াচ্ছে
মরু প্রান্তর হতে আঁকাবাঁকা হিমবাহের দিগন্তে আমি গাছটির দিকে তাকিয়ে
বিচ্ছেদ
জুলুম আর
নির্যাতন গুলো
নামিয়ে বিক্রি করি পৃথিবীর মানবিক দোকানে
গাছটি আমার মায়ের আকৃতি ; বাবার মতো কাঁধে ঝুলিয়ে বহন করে ঐশ্বরিক ছায়া।
কফিনের পোশাক
আমার শরীর বহন করছে একটি কফিন
সাদা পোশাকে সজ্জিত প্রার্থনাগুলোর সাহায্যে
একেএকে খুলে যাচ্ছে কতগুলো অদৃশ্য পেরেক
আমি, আমাকে নিয়ে দৌড়াচ্ছি
একটি কফিনের পোশাক পড়ে, দেখলাম
কতগুলো সরল বৃক্ষ ক্লান্ত শরীরে দাঁড়িয়ে আছে
তার কাছাকাছি জলন্ত আগুনের মহা উৎসব
আমি কফিন থেকে বেড়িয়ে
তারাদের সঙ্গে নিয়ে মহাকাশের অমীমাংসিত ঘুটঘুটে অন্ধকারগুলোর মহত্ত্ব সাজাই
আমার হক গুলো সাদা হোক
আমি একদা অনন্তকালের যাত্রী হবো-
তোমার সাহায্য ; আমার মহত্তম প্রচেষ্টায়
শরীর থেকে খসে পড়ুক কফিনে মোড়ানো পোশাক।
যে কথা হয়নি বলা আজও
আমার চোখ দুটো মহাসমুদ্র
অথচ জল নেই আজ এই সমুদ্রের মধ্যভাগে
কিছু শূন্যতার ভেতর বহন করছি নিজের সত্তা
আমি একটা বিশ্বাসযোগ্য উজবুক
পৃথিবীর মতো সমানুপাতিক কিছু দায়
নিজের কাঁধে
ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে হেঁটে যাচ্ছি গোরস্থানের দিকে
যে কথা হয়নি বলা আজও
আমার ঘুমের মূহুর্তগুলো হয়তো
রাত ও দিনের চেয়ে অধিক পরিমাণে স্বাধীন।
বুকের মহাসমুদ্র
আমি কাকে শুভেচ্ছা জানাবো!
যার প্রতিশ্রুতির একেকটি প্রতিশব্দ
শুকরের তৈলাক্ত চর্বির চেয়ে অধিক পিচ্ছিল।
আমি কাকে নিয়ে উৎসব করবো!
একটি ভূতুড়ে পথহীন-দেশে
রক্ত কিংবা মৃতদের সাথে!
আমাদের সমঝোতা গুলো পুস্তকের মতো সততা বহন করে না
আমি দেখলাম একদল বেদুইন - কেউ বললো ওটা মানচিত্র
আমার চোখ অধিকতর বড় হতে লাগলো!
আমি একপক্ষ চাঁদকে অতিক্রম করতে চাইলাম
দেখি, পশ্চিমের সূর্য আগুনের কুন্ডলী পাকিয়ে
ধেয়ে আসছে আমার বুকের মহাসমুদ্রে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন