তৈমুর খানের গুচ্ছ কবিতা
অলৌকিক স্নান
আমাদের প্লাবিত জীবনে
দু'একটি সোনালি গামছা বুনে দেয়
দু'একটি ধূসর গামছা
কোনও অলৌকিক তাঁতযন্ত্রে
রোদের মিহি সুতোয়
মহাকালের প্রাচীন কোনও তাঁতী
আমরা তাঁতীর কত গল্প শোনাই
ছেলেমেয়েদের
গল্পের ভেতর কেবলই একটি ঘোড়া
দাঁড়িয়ে থাকে
গল্প শেষ হয় না আমাদের
ঘোড়াটিও ছুটতে থাকে
আমরা অনেক বেলা তার অপেক্ষায় থাকি
তারপর এক একটি গামছা নিয়ে
অলৌকিক স্নানে চলে যাই
উদ্বাস্তু
নিজেকে মানুষ বলতে বলতে চলে যাচ্ছি
এত ভিড়ে কেউ শুনছে না কথা
খুব গোলমাল হচ্ছে
চারিপাশে শুধু মানুষের মাথা
কেউ চিনতে পারছে না
আমার পূর্বে কেউ নাম শোনেনি
বাবার নামও শোনেনি
মা তো অন্তঃপুরের বাসিনী
কী বলে দাঁড়াব?
সবাই সম্পর্কহীন
ঠিকানা শুনতে চায় না কেউ
অমন সত্য ঠিকানাও মিথ্যা হয়ে যায়
তবে কোন্ ধর্মের কাছে যাব?
ধর্মও কি নিরাপদ?
অস্ত্রহীন, অস্ত্রহীন শূন্য কপর্দক
হাহাকারের ভেতর দাঁড়িয়ে আছি সারারাত
সৌভাগ্যরা
সৌভাগ্যরা কে কোথায় গেল?
সারা বিকেল তন্ন তন্ন খুঁজে
কারও দেখা পাচ্ছি না
আলোর রোশনি মাখা কিছু যুবক যুবতী
দ্রুত যানে চলে গেল
আর কোকিল ডাকল বাগানে
শব্দগৌরবে পৃথিবী ভরে গেল
কিন্তু কী আশ্চর্য! আমাদের ঘরের চৌকাঠে
পড়ে থাকা মরচে ধরা চাকু
সমস্ত বসন্তকালেও ফুল হয়ে ফুটল না
শরৎকালের নদীতে নৌকা হয়ে ভাসল না
রোদের আকাশে পায়রা হয়ে উড়ল না
চমৎকার কবিতা গুচ্ছ। কবি তৈমুর খান এ সময়ের একজন গুরুত্বপূর্ণ কবি। তার কবিতা পাঠকদের উপহার দিয়ে কুয়াশা একটি মহৎ দায়িত্ব পালন করলো। উভয়ের জন্য শুভ কামনা রইলো
উত্তরমুছুনধন্যবাদ আপনাকে
মুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন