সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৭

স্বপ্ন ও শেষ অধ্যায় ।। তৈমুর মল্লিক

স্বপ্ন ও শেষ অধ্যায় 
                     (খণ্ড ৪) 
 
তোমরা সবাই এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করো। অথচ তোমাদের দেখলে একরাশ নিরাশা ভর করে । তোমাদের মধ্যে মায়া মমতা মানবতা ভালবাসা এতটাই কম যে ধীরে ধীরে সমাজ ব্যাবস্থা কোথায় চলেছে সেটা অনুমান করলেই ভয় লাগে । শালীনতা, ভদ্রতা, নম্রতা , ত্যাগের সংকল্প কেমন যেন ফিকে হতে চলেছে । তোমরা কেন আজ একে অপরের কাছ থেকে এত দূরে চলে যাচ্ছ? 
তোমাদেরকে ক্যাম্পাসে চলাচল করতে দেখলে মনে হয় আমরা সেই যুগে চলে গেছি, যেই যুগে ছোট ছোট গোত্রে বিভক্ত ছিল সম্পুর্ন সমাজ ব্যাবস্থা। 
সভ্যতার কল্যাণে বিজ্ঞানের কল্যাণে একটা সময় আমরা এক হয়েছি। কিন্তু আজ অতি আধুনিক সমাজ ব্যাবস্থা আমাদেরকে সেই গোত্রে বিভক্ত করে ফেলছে । কিন্তু কেন? 
বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি পরিচিত এবং সকলের প্রিয় রফিক স্যার কথা গুলি অতি উৎকণ্ঠা নিয়ে ছাত্র ছাত্রিদের উদ্দেশ্যে বলছিলেন।
আসতে পারি স্যার?
এসো। তোমরা এত দেরি করলে কেন? 
দুঃখিত স্যার। 
এর চেয়ে বেশি কিছু না বলে রুমি, রিনি আর বিথি যার যার স্থানে বসে পড়লো।
হাঁ যা বলছিলাম। রফিক স্যার আবার বলতে শুরু করলেন। 
রফিক স্যার পড়াচ্ছেন ঠিক কিন্তু তার চোখ খুঁজে ফিরছে একজনকে । ভালো করে এদিক ওদিক দৃষ্টি দিয়েও সে তাকে খুঁজে পায়না । ছাত্রটির নাম সাগর । রফিক স্যারের খুব প্রিয় একজন ছাত্র । স্যরা কাউকে বুঝতে না দিয়ে তার পাঠদান চালিয়ে যেতে থাকেন । 
কতটা নির্লজ্জ আমারা হয়েগেছি যে -
ভুলে গেছি আমরা কে কোথা থেকে এসেছি। আমরা ভুলে গেছি, আমাদের প্রত্যেকের নিজস্ব একটা সত্ত্বা আছে। আমরা ভুলে গেছি আমাদের প্রত্যেকের বাবা-মা আছে। আমরা ভুলে গেছি আমরা একটা সামাজিক বলয়ের মধ্যে বাস করি। ভুলে গেছি আমাদের যে কোন ভাল কাজের জন্য আমরা নিজেরা যতটা খুশি হয়ে থাকি, তার চেয়ে অনেক বেশি সম্মানিত হন আমাদের বাবা মা। ঠিক একি ভাবে মন্দ কাজের জন্য বাবা-মা হন যার পরনেই অসম্মানিত। যাদের বাবা মা নেই তারা যে আমাদের কর্মের ফল কবরে গিয়ে পেয়ে থাকে, মুসলমান হিসাবে আমাদের সেটা বিশ্বাস করতে হবে। রফিক স্যার ক্লাসে সবার উদ্দেশ্যে এই কথাগুলো বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। 
এভাবেই চলতে থাকে পাঠদান । 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন