প্রেমাংশু শ্রাবণ এর গুচ্ছকবিতা
মতান্তর
তাম্রযুগীয় মানুষের পায়ের হাড়ে আমাকে লিখে রেখেছো তুমি। তলতল করছে
ঐশ্বরিক মাংসের কাহিনি। পাথরের
মতো কিছুটা পাগল ছায়া ফেলেছে আমাদের খেলায়। শিকারের রঙ থেকে তীব্র হাড় খসে পড়ছে অভিনয়ের প্রুফ রিডিংয়ে।
বরফের ভুল বানান থেকে আমাদের শীতলতার দিকে ঝুঁকে পড়ছে ঈশ্বর । মাংসের নগ্নতা থেকে
কেটে কেটে শূন্যতার শব্দ ফেলে রাখছো তুমি।
অসমাপ্ত ঈশ্বরের ফলাফলে আমরা গুছিয়ে রাখছি আগুনের লেলিহান শিখা।
ঊর্ণনাভ - দোষে সে কাহিনি গোটা একটা জন্মদোষ বুনে রাখছে। শস্যচক্র ও কালপুরুষের
মাঝখানে আমাদের শরীরাংশ বহুভাগ জল হয়ে যাচ্ছে। ওলটপালট হয়ে যাওয়া আমাদের খিদে
থেকে কাঁটা বেছে উড়ে যাচ্ছে অগণিত পাখি।
কাঁটায় বিঁধে থাকা শেষ রক্তমাংস থেকে
আমরা মেরামত করে নিচ্ছি কাহিনি।
প্রাগৈতিহাসিক সমস্ত ধাতুবিদ্যার ক্লাসে ঘুমিয়ে পড়া এক ছাত্রীর নোটবুক থেকে তিরতির করে কেঁপে ওঠা চামড়া ছাড়িয়ে নিচ্ছি আমরা।
ফার্নেসের গাঢ় লাল থেকে তৈরী হচ্ছে মতান্তর।
বৃষ্টি কথন
সরীসৃপের দাগ থেকে ভেসে উঠছে ইশ্বরের ছবি। আয়নার ওপাশে অন্ধযুগ থেকে গড়িয়ে পড়ছে ভয়ের ফোঁটা ফোঁটা রঙ। নাভি, উদ্ধ্বত্ত নেলপলিশ। সাহসের ভিতর আমরা চুল আঁচড়ে নিচ্ছি। ফেনাভাতের উপর তীব্র ঠেলে রাখছি উদ্বাস্তু পরিবার।
অলিখিত ঈশ্বরের উপর মাছি উড়ছে।
সে মাছির দংশনশক্তির কথা সময় জানে না।
সময় প্রহরীর বীর্যশক্তি কমে যাচ্ছে ক্ষয়রোগে।
তোমার কমলা মুখ পুড়ে যাচ্ছে আবহমান কালের রোদে।
ঋতুজটিলতায় পড়ে থাকা লবণের ভিতরেই অসুখের পরামর্শ দিচ্ছে চিকিৎসক।
পায়ের শব্দে উড়ে যাচ্ছে অর্থপূর্ণ মাছি।
আর টাটকা মাংসে গেঁথে দেওয়া হিংয়ের গন্ধ খুঁজতে এসে আমি দেখছি আবছা আলোয় তুমি খুঁটে নিচ্ছ পাখিদের খাবার।
রোদ্দুরে মেলে দিচ্ছো ভেজা অভিনয়ের জামাকাপড়।
প্রতারণার পরাগ
রক্তপাতের দূরত্বে আর একটা শব্দ
আমি চিনতে না পেরে বোকার মতো হাসছি
জ্যামিতিক সূত্র মেনে ছায়া ফেলছি তোমার রান্নায়
মসলা থেকে ভুল কান্নার আলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে
ভ্রূণবিন্দুতে ভেসে থাকা একটা সংসারে
খৃষ্টাপূর্ব একটা প্রতারণার পরাগ
আমি আস্তাবলের ধর্মে পা ফেলেছি
অশ্বক্লান্ত মাংসের পাশে মাতৃহীন মেয়ের ভুল ধারণায়
আবার খালি পেটে শব্দোত্তর
আমি উত্তর দিচ্ছি না
সফটওয়ারে রক্তের মতো ভিজে উঠছে
শব্দের থলি ও হিরণ্যগর্ভ
প্রভাত - তরল জ্যোতির মতো একটা খিদেয়।
রেখা
জন্মের ভিতর দিয়ে যে পথ
তার অনুভূমির রেখায় এসে দাঁড়ালে তুমি দেখতে পাবে আমার করতল
হাত ছুঁয়ে দ্যাখো।
গ্রহান্তরের দিকে চলে গেছে তার অমলিন
রেখাগুলি
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন