গুচ্ছকবিতা
মোহাম্মদ হোসাইন
মোহাম্মদ হোসাইন
আমার এত ক্ষুধা এত ক্ষুধা সব খেয়ে ফেলি। নিঃসঙ্গতা, নির্জনতা, বেদনা, বিষণ্নতা সব সব...!!
কবিতা কি খেয়ে ফেলি!? শব্দ, শব্দের রং, গন্ধ...
কষ্ট ভোলা যায় না খাওয়া যায়
আর সবকিছু ভোলা যায় সব সব...
রক্তপাত ভোলা যায় না। নাড়ি ছেঁড়া নাড়ি কাঁটা ভোলা যায় না! যেমন ভোলা যায় না মা
যেমন ভোলা যায় না নিঃশ্বাস...!
ভালোবাসা কি ভোলা যায়? দুধের বাটি ওম ওম... বিড়াল বিড়াল...
প্রথম দিনের গন্ধ বুকে নিয়ে ঘুরি
প্রথম দিনের বেদনা বুকে নিয়ে ঘুরি
ভালোবাসা বুকে নিয়ে ঘুরি...
আমার এত ক্ষুধা এত ক্ষুধা সব সব খেয়ে ফেলি
একদিন এই রাষ্ট্র, জাতিসংঘও সব খাব...
কবিতার জন্য
কবিতাকে রেখে দেই ভোরের আলোর মতো
শিশুর হাসি যেমন সুঘ্রাণ ছড়ায়, চিকচিক করে
তেমনি আমার শব্দের চারুপাঠ ধ্বনির উচ্চারণ
আমার হাত ভরতি আলো দেহভরতি শিখাময় স্নিগ্ধতা
ঢেউয়ের ভিতর দিয়ে যেতে যেতে কখনো কখনো
সেই আলো ঢেউ হয়ে ফেরে - আমি তার মুঠো মুঠো বুক ভরে রাখি আর সুতনু হয়ে যাই...
কিন্তু কবিতা কি পারে বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে
বেদনাকে বলে দিতে সুখী হও, কেঁদো না!
কিংবা বলে কি দিতে পারে থামো বিধ্বংসী ট্যাংক, নিউক্লিয়ার রিয়াকশন, যুদ্ধবাজ চোখের ঠুলি!?
ভাবি আর কতিপয় শব্দের ব্যঞ্জনা ছুরি দিয়ে কেটে কেটে বুকের রক্ত ঝরাই...!
আহত পূর্ণিমা
আমি কী আর এতটা বুঝি
যতটা বুঝে শীতের বিকেল, ঘন কুয়াশার মিথ
হেঁটে গেলে মানুষ সর্ষে ফুলের রেণু যতটা অবাক
তার চেয়ে অধিক বাতাসের কান, তত্ত্ব কথা! বিলাপ।
সন্ধে মিলিয়ে যায় দেহের আগুনে
কথাগুলো ছায়া, ছায়ার ভিতরে সামাজিক বোধ নাগরিক অন্ধকার...
অতীব প্রাচীন যে কলা লুপ্ত প্রায় মান্দারের গাছ
ফুল নেই -- অথচ, স্বপ্নময় স্বাধীন বিপাশা! তাই
সমস্ত অনর্থ আজ চেপে আছে বুকে
রক্ত খেয়ে চলে গেছে বাঘ - আহত পূর্ণিমা!
কবি আমিনুল ইসলাম মুল্যায়ন প্রবন্ধ পড়ুন এখানে
ইমদাদুল হক মিলনের নুরজাহান উপন্যাস নিয়ে প্রবন্ধঃ পড়ুন
চানক্য বাড়ৈ এর কবিতা পড়ুন এই লিংক এ
ইমদাদুল হক মিলনের নুরজাহান উপন্যাস নিয়ে প্রবন্ধঃ পড়ুন
চানক্য বাড়ৈ এর কবিতা পড়ুন এই লিংক এ
পৃথিবীতে যখন ডাকাত পড়ে
বুড়িগঙ্গা পঁচে গেছে
তোমার চোখ দেখে বোঝা যাচ্ছে
তোমার হাত, হাতের আঙুল দেখে বোঝা যাচ্ছে তুমি কোথায় ছিলে! এত সরল উক্তি এত নির্মোহ মুখমণ্ডল অতীতে কেউ দেখেনি। ঢেউয়ের ভেতরে ঢেউ দেখলে এক ধরনের দোলা লাগে, বাতাস এসে কাছে বসে। কিন্তু, তুমি ঢেউ ভরতি অন্ধকার, রাত ভরতি ঘৃণা নিয়ে এলে - আমরা তা জানতেও পারিনি...!
অসহিষ্ণু হয়ে যাচ্ছে আজ মাঠ, বৃক্ষ ও নদী, মাটি ও মর্তলোক! পৃথিবীতে যখন ডাকাত পড়ে যখন মানুষের ভেতর থেকে মানুষ মরে যায় তখন ষণ্ড ও চণ্ডাল দুধভাত খায়, পূজার শূন্য থালা তখন সন্ধ্যারতির ঘণ্টা বাজাতে থাকে ...
গহবর হা হয়ে আছে দেখেও একদল দুর্ধর্ষ নেকড়ে রক্তের হোলি খেলে...
তিনটি কবিতা
১
হাঁটছি। কখনো কখনো দৌড়ুচ্ছিও
যত হাঁটি যত দৌড়াই রাস্তা তত দূরে চলে যায়!
রাস্তা ও আমি সমান বয়সী
পৃথিবীতে আর কত রাস্তা আছে
আর কত পথ!
পথ যেমন ফুরায় না
জীবনও না..
২
এত প্রাবল্য প্রেমের আর এত প্রতারণার
মনে হয় গ্রহন লেগেছে
অথচ, আমার চোখ জ্বালা করে বুক জ্বালা করে
আমি নদীর কিনারে বসে থাকি
দেখি পৃথিবীতে সন্ধ্যা নামে। আর তার আলো
এসে ভিজিয়ে দেয় আমার বিগত জীবন বিগত পাপ
আমি পবিত্র হয়ে ওঠার আগে আবারও প্রতারিত হই
আবারও প্রেমে পড়ি...
৩
অথচ, আমার কাছে এখনো বৈরাগ্য আসন পেতে আছে। প্রায়শ, রাত-বিরেতে আমি তার পিঠ চুলকে দিই, হাত বুলিয়ে দিই দেহ বরাবর
ভালোবাসা তেমন গাঢ় নয়, দুধের সর উপচে পড়ে যায়। চাঁদের বাটি হা হয়ে থাকে আমার দিকে
আমি চাঁদ ও চাঁদের বাটি দুধসমেত খেয়ে ফেলি
আমি এখন জাদুবাস্তবতায় বাস করি
একজন আফিমখোর যেমন...
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks