পাখি সমাচার ও অন্যান্য
আমিনুল ইসলাম
আমিনুল ইসলাম
পাখি সমাচার
উড়তে তো মানা নেই; প্রত্নযুগ খুঁড়ে আদি পাখিকুলের ডানায় মেলেনি
কোনো যতিচিহ্নের ছাপ, জানা গেল উত্তরাধুনিক এক পাখিবিশারদের
অভিসন্দর্ভে। আকাশও শানিয়েছে আমন্ত্রণের ভাষা; আর পাখি
শিকারিরাও মুক্তবাজার অর্থনীতিটার বড় বেশি সমর্থক। তাই তো
পয়স্থিবিলেও পাখিশিকারির আস্তানা জ্যামিতিক সূত্রকেই মেনে চলে;
আজকাল গ্রীষ্মমন্ডলের শিকারিরাও বিবিধ উষ্ণতা ভালোবাসে
শীতে অশীতে। আসে বসে উড়ে যায় তাজা পাখি- চঞ্চুতে রঙিন
খুদকুঁড়ো, মুগ্ধ উপার্জন। আর ধনুকের কি অভাব অর্জুন প্রভাবিত
এই বিলজ তল্লাটে! উষ্ণতাই বা বলো কোন্ পালকের স্থায়ী মীরাস?
ফলে পর্ণমোচী সংক্রমণ ছুঁয়ে ফেলে শেষমেশ উন্মুক্ত পক্ষপুটের পুঁজি;
ষড়ঋতুর মিছিল-- এত যে আবিস্কার তবু ঠেকে না কোনো শাসনেই।
ফলে তো শিকারিরা চলে যায় ঘড়িয়ালডাঙার বিল ছেড়ে হাওড়ে বাওড়ে।
আর উত্তরের বিহঙ্গীরা কি করে চিনবে বলো পশ্চিমের সুদক্ষ ব্যাধকে?
এদিকে সেদিনের আলোড়িত পাখি করতোয়ায় তীরছোঁয়া অশ্বত্থের
ডালে বসে মাথা কোটে - কেন যে ফোটে না ডিম? তবে কি উষ্ণতা
বাধাহীন আকাশেও কোনো নিন্দনীয় প্রতিসূত্রের দাস ছিল!- আজও?
মিউজিয়াম
দ্রুতগামী অশ্বদল; অদর্শিত দূরে কালো বোরকায় আবৃত গন্তব্য;
পশ্চাতে পথের দুই পাশে ধুলোবালির তামাটে কুয়াশা
গাছের পাতায় স্তনিত ক্ষুরধ্বনি এবং পেছনে তাকানো মানা
তাকালে সবকিছুই ঘোলাজলের আয়না। রাইডিং না জানায়
সহযাত্রীগণ ছেড়ে গেছে; এখন আমার সাথি পরিত্যক্ত ঘাস।
ধানকুড়ানীর হাতে কোঁচায় তুলে নিচ্ছি অশ্বক্ষুরদলিত
আউশধানের ছড়া, ভষ্মগাদার মঙ্গলকুলো, ঝড়ু কামারের
হাঁপর আর মায়ের ছেঁড়া তসবিহদানা। সোজনবেদের বাঁশির সাথে
বনলতা সেনের স্বহস্তে লেখা একখানা পত্রও ধুলোবালির
স্তুপ থেকে উঠে এসেছে। বাঁহাত দিয়ে কুড়িয়ে নিচ্ছি;
করতোয়ার পাড়ে অদৃশ্যহাতে গড়ে উঠছে মিউজিয়াম;
কোঁচা ভরে গেলে সোনালি আলোতে
মিউজিয়ামে জমা দিয়ে সেসব একদিন প্রান্তরের দিকে চলে যাবো।
স্বপ্ন স্বপ্ন খেলা
হাজার বছর ধরে
একটি স্বপ্নের পেছনে ছুটছি;
সে ঢেউ হলে আমিও ঢেউ হই;
সে ধ্রুব দেখালে
আমি হালে হাত দিই;
সে ঝড় দেখালে
আমি নোঙর দেখাই;
কিন্ত সে যদি হরিণ হয়
আমি চিতাবাঘ হতে চাইনি।
একবার সে আমার
ঘুড়িতে সোয়ার হলে
সুতোয় টান দিয়েছি;
জোরে টান পড়ায়
ডুরিটা ছিঁড়ে গেছে;
ঘুড়ি ছুটছে আবার
আকাশ হতে আকাশে;
কখনো তা মাটি ছুঁয়ে,
কখনোবা উর্ধ্বাকাশে।
আমিও ছুটছি
পেরিয়ে শহর গ্রাম
খানা-খন্দক-জঙ্গল..
পায়ের তলার সে ক্ষতটা
জেগে উঠছে আবার।
পুচ্ছ সংকীর্তন
লেজ। বড়ই উপকারী অংগ! চতুস্পদ হোক, হয় হোক সে দ্বিপদ
প্রাণীমাত্রেই জেনেছে এই যুক্ত-মাহাত্ম্যের মর্মসীমা।
হাত না থাকলে ক্ষতি নেই,
পা না থাকলেও চলে;
এমনকি অপরিহার্য নয় মাথামোটা মাথাটাও;
কিন্তু ওই সোনা অংগ চাই; আহা অংগ সোনা।
ইতর জ্বালাতন অথবা চোরা এলার্জির কুটকামড়ানি
অথবা আবদার অভিব্যক্তি, সে যা-ই হোক-
সফল তরিকামতে লাঙ্গুলই আজও অবিকল্প সহায়;
আর উহার বড়গুণ আপন তরিকায় অটল আস্থা ও অবস্থান।
হাত লাগান আপনি সপরিবারে হেইয়া হো,
চাপিয়ে রাখুন জগদ্দল পাথর দিনসাতেক,
দেখবেন- ধুনকের ছিলার মতো ঠিকই ফিরে আসা তার।
আর কী জলন্ত দৃষ্টান্তসহই না বুঝেছিলেন রাক্ষসকুল
একবার নাক গলিয়ে ঐ তুখোড় লাঙ্গুলে!
হায় বেকুব রাক্ষসকুল! হায়!
আর তাই তো শুধু সেদিনের বোকারাম রঘুপতিই নয়,
লেজ নির্দেশনায় ঘোরে আজকের সর্বজয়ী
সারমেয় শিরোমণিকুলও!
ফলে তো সফল-চালক অংগে হররোজ ভাঁড় উজড়ানো
এবং খুশিও বটে মর্দক-সম্প্রদায়ও।
লেজতরিকায় খেলেনি যে, সে আবার খেলোয়াড়!
আর অভিশাপ ঐ ধবল হিমানি বদনে;
তুষারযুগের সেই অদূরদর্শী প্রভাতে
হিমস্পর্শে খোয়া গেছে আমাদের ঐ বান্ধবঅংগ।
আজ এই অগ্নিতরিকা দিনে তাই নয় হিমকামনা;
এখন শুধুই অগ্নি উৎসব
শুধু পোড়ামুখে প্রার্থনা ঐ সোনাঅংগের জন্য: হায় লাঙ্গুল!
কবরস্থানের পাখি
তিরিশকে দুই ভাগে ভাগ করে কবর কবিতার দাদুর মতন কবর
পাহারা দিয়ে এসেছি; পার্থক্য এই যে আমার সঙ্গে কোনো বালক
ছিল নাকো। রাতের বাতাসে দুলে ওঠা ডালিমের ছায়াটাও মাড়ায়নি
কেউ; যদিও কবরের মাটিতে কান পেতে কিছু একটা শুনে ফেলেছিল
কোনো এক রাতের অশ্বারোহী, এড়িয়ে যাওয়ায় সে আর কোনো
প্রশ্ন তোলেনিকো; ঘোড়া হাঁকিয়ে উধাও হয়ে গেছে পূর্বমুখী।
তারপর কত রাত! কত সে অশ্বক্ষুরের শব্দ! সে-শব্দে সুপ্তবালকের
মতো কবরটা নড়ে উঠলে উষ্ণসিক্ত মাটি দিয়ে ঘুম পাড়িয়েছি;
কিন্তু কোনো এক শরতসকালে শিউলি কুড়াতে এসে তুমি শুনেছিলে
পাতার আড়ালে-থাকা একটি দোয়েলের কবরচারী গান;
পাখিটার আপত্তি সত্ত্বেও তুমি তাকে কবরের গাছ থেকে তুলে নিয়ে
ছেড়ে দিয়েছিলে প্রান্তরের হাওয়ায়; স্মৃতিভ্রষ্টের মতন আমিও
আমার আপত্তির ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তারপর প্রায় প্রতিদিন
গায়ে অন্ধকার মেখে কবরের কাছে এসে তুমি গান শুনিয়েছো-
আমি ভুল যেতে থেকেছি পাখিটির কথা; দিনে দিনে দুপুরমাখা
আড়ালে কবরের শরীরে জমে উঠেছে ঘাস। শিউলির মৌসুম শেষ-
এই অজুহাতে শিশিরস্নাত প্রভাতে তুমি ডানা ভরেছো হাওয়ায়;
তোমার চোখে আজ উপসংহারের আলো; মুগ্ধ আলোয় ফাটল
ধরেছে কবরে; ঝোপের আড়ালে পুনশ্চ পাখসাটের শব্দ, সদ্য মুক্তি
পাওয়া একটা জেলঘুঘু আমার দিকে তাকিয়ে হেসে উঠছে আড়ালে।
আঁধার বন্দনা
যাও হে আটপৌরে আলোর দল- যুগজীর্ণ, নতুনত্বহীন!
আর নয় বিমুগ্ধ বন্দনা।
পৃথিবীর শরীর নিয়ে অমন মাতামাতি,
ঊন্মোচন নিষিদ্ধ সবুজের সে ভাঁজ
প্রকাশ্য আঙুলে, এও এক ব্যাভিচার,
স্বর্গীয় সাফাইয়ে মহিমান্বিত পরকিয়া তোমার!
বেকুফ কবির দল এতদিন
আলো আলো বলে শুধু খুইয়েছে চোখ।
তুমি তবু শেষমেশ থাকোনি আপন।
তাই এবার শুধু টেনে দেওয়া-
পূর্বদিগন্তের সম্ভাব্য উদ্ভাসে
চিরনৈশসম্ভাবনাময় কালো শামিয়ানা।
চেয়ে দ্যাখো, ফুরিয়েছে উদ্ভাসিত অসাম্যের দিন;
এবার শুধু প্রটোকলশূন্য স্বতঃস্ফূর্ততা।
অভিমানী অন্ধ, বিড়ম্বিত মাতাল, কুণ্ঠিত চোর
আর অন্তপ্রাণ কুঁজো-
সবাই ফিরে পাবে অকুণ্ঠিত রাজাধিকার।
বস্তুত সম-অধিকার বা গণতান্ত্রিক সাম্যের
এমন সর্বব্যাপ্ত নিশ্চয়তা মিলবে না কোথাও আর।
ক্ষমতার সমর্থকের মতন হু হহু করে বেড়ে যাবে
নৈশযাত্রীর বহর
আর তাতে অবাক হওয়ারই বা আছে কী!
আর দ্যাখো তৃতীয় বিশ্বের মূর্খ সকালসমূহ
কীভাবে ভরে উঠেছে বিজ্ঞাপিত অন্ধকারের ফসলে
অপরূপ মোড়কে মোড়ানো চেনাচেনা সোনাসোনা!
এবং সাফল্যের যাদুকাঠি তো আঁধারের সিন্দুকেই!
অধিকন্তু, অতিমূল্যের এই উলংগ বাজারে
অতিব্যয় অপবায় কাটছাঁটের বিষয়টিও মহার্ঘ্য বিবেচ্য।
ফলে আমাদের মহান দাতাগণের মহান হাসিসমূহ
বিদ্যুৎ ঝলকের মতো দেখা যাবে আঁধারের তল্লাটে-
একথা ধরেই নেয়া যায় ।
ফলে এই যে বস্ত্রবাবদ ব্যয়, জ্বালানিব্যয় এবং
সর্বোপরি বেতনের ওপর উপরির প্রতিরূপ গ্রন্থবাবদ ব্যয়,
বাতিল অতিথিসেবার মতন বেঁচে যাবে সহসায়
আর অন্ধকারে কেইবা লাগাতে চায় অলঙ্কার!
পানির মতো যারা শ্যাওলাকচুরি নিয়ে উড়িয়েছে
দুর্লভ জলের জীবন,
তাদের অপচয়ে যোগচিহ্নের যোগ নয় আর;
এবার ওখানে পূর্ণযতি।
এবং চলো যাই পাঁকালের গতিতে ডুব দিই
আবছা আড়ালে;
প্রোটোপ্লাজমের মতো সঘন তরল মেখে
জেগে উঠি আত্মাময় প্রাণ
আঁধারের বরপুত্র অন্তপ্রাণ আলোবৈরিতায়!
নিঃসঙ্গতা ধুয়ে দিয়ে যায়
ইতিহাসে মাথা রেখে চিৎ হয়ে শুয়ে আছে মুঠোফোন;
তার বুকেও শতবর্ষের নির্জনতা।
পাপিয়ার কান্না বা শিরিষশাখার গজল
তরঙ্গের পিঠে সওয়ার হয়ে
আসেনিকো এসবের কোনোটাই।
যদিও তুলোহীন তথাপি পৃথিবীর কানে বাজেনিকো
স্বাতী ও অরুন্ধতির কানাকানি;
এমনকি মার্কিনী আগ্রাসনের মতন
অগ্রগামী যে-অন্ধকার
তার উল্লসিত পদধ্বনিও নয়।
ফলে ওয়াকওভারের পায়ে চলে আসে অন্ধকার
তার হাতে গুটিয়ে যায় সোনালি আলোর চাদর।
অধিকন্তু, তুষারের চতুর্মুখী সাক্ষ্যে
মিথ্যা হয়ে আছে ফল্গুধারার দাবিও।
তবু একটা রোদেলা দুপুরের স্বপ্নে
সারেঙবউয়ের চোখে পৃথিবীর দৃষ্টি প্রসারিত।
কোনো এক দুপুরে আলবার্টাসের ডানার শব্দে ভেঙেছিল
হিমশাসিত নির্জনতার চূড়া,
সে-কথা মনে রখে একটা প্রবাদের গায়ে
হেলান দিয়ে সে জেগে আছে;
অথচ ঐতিহাসিক দায়িত্বের কথা বেমালুম ভুলে আছে ইতিহাস।
পাহাড়-বাসনা
পাষাণের সিংহাসনে কে কবে মহারাজ ছিল?
আসলে কতটা অস্বীকৃত বেদনায়
সুজলা-মৃত্তিকার কোষ প্রস্তরিত শিখর-
হয়তোবা সে টানেলে বিমুগ্ধ আলো পড়েনি,
তাই এত এত অন্ধকার।
তবুও সত্য এই যে প্রস্তরযুগের বহু আগেই
বোবা-পাঁজর ভেঙে ছুটেছিল সন্তপ্ত স্রবণ;
অথচ পথের দুই ধারে সবুজের হিল্লোলে
চাপা পড়ে আছে সেদিনের সেই আর্ত-ব্যঞ্জনা।
তবে একথাও ঠিক যে ভোলেনিকো শুধু সমুদ্র ।
তুমি তো সমুদ্র সৈকতে যাও---এবং প্রায়শই,
এবার না হয় লোনা হাওয়ায় আঁচলটি পেতো;
দেখো, তোমার অই জামদানির পাড়
প্রত্নদিনের গল্পের গন্ধে ভরে যাবে।
সে কিন্তু সময় পেলে আজো নবায়ন করে নেয় বন্ধুত্ব,
গেরুয়া-অস্তিত্ব মুছিয়ে দেয় ভেজা-পেঁজা পরশে।
দ্যাখো, অশ্রুত কান্না ছড়িয়ে আছে-
সবুজ শস্যের শীষ আর কবির কলমের ডগায়।
তুমি যদি পাহাড়ে উঠতে চাও
হে খনিবিমুখ উচ্চারোহী,
একবার সমুদ্রের কাছে উন্মোচিত হয়ো;
তোমার সেই পাহাড়-বাসনা যথার্থ হয়ে উঠতেও পারে।
আড়াল
প্রভাতী আলোর মন নিয়ে তোমরা যে বিশ্বাস করো
এই আমাকে,
মিথ্যা বলবো না, ভালোই লাগে আমার;
আর লাগবেই না বা কেন?
শান্তি পুরস্কার পেয়ে তো খুশি হয়েছিল
মধ্যপ্রাচ্যের কসাইও, তাই না!
আমি তো কেবলি আমি! তবু ফৌজদারী
কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় হাত রেখে বলছি,
আমাকে আর ওভাবে বিশ্বাস করো না;
লজ্জার মাথা হাটু এমনকি নাভি-- সব খেয়ে বলছি,
আমার বাহির ফালগুন কিন্তু ভেতর বৈশাখ;
ঠোঁটের হাসি,
মুখের কথা,
কালো চুল,
এমনকি অনেক লিপিস্টিক কবিতার
উপমাপ্রধান পঙক্তি-
বহুযত্নে ধরে আছে
বিউটি পার্লারের মতন মিথ্যুক সাক্ষীর রসনা;
শুধু শুনে কিংবা কেবলই দেখে-
বিশ্বাস যদি করতেই হয়,
বিশ্বাস করো পথপাশের বৃক্ষটিকে,
তার ছায়া মানে ছায়া, অন্যকিছু নয়;
বিশ্বাস যদি করতেই হয়-
দিনের হৃদয় রাতের দৃষ্টি নিয়ে,
বিশ্বাস করো উঠোনের ক্রন্দনরত শিশুটিকে
তার কান্না মানে কান্না, আর কিছু নয়;
এমনকি তুমি তোমার পোষা বেড়ালকেও
বিশ্বাস করতে পারো সবখানি;
অবশ্য তার লেজ ঘষা নিয়ে তুমি
বোদলেয়ার হয়েও উঠতে পারো, যদি চাও,
কিন্তু সত্যের অর্থে তার লেজ থেকে
ছড়িয়ে পড়া অভিব্যক্তি
জসীমউদদীনের ছলনাহীন কবিতা।
কিন্তু আমাকে বিশ্বাসে নিও না সেভাবে;
একেই তো উচ্চশিক্ষিত মানুষ আমি,
তদুপরি হোম মিনিস্ট্রির প্রেসনোট
রচে রচে হাত পাকিয়েছি;
অনেক অসনাক্ত রক্তাক্ত সন্ধ্যা,
অনেক অনিরীক্ষিত অশ্রুর পূর্ণিমা,
বুটজুতোয় থেতলে যাওয়া অনেক শৃঙ্খলিত সকাল--
এবং দাবিয়ে রাখা অনেক আত্মযন্ত্রণার কৃষ্ণপক্ষ
ইত্যাদি জড়িয়ে আছে
রোদেলা দুপুরের ভানমাখা শরীরে;
এখন যা যা বলছি? কী যে মুস্কিলে ফেলো তোমরা!
ঠিক আছে, এ নিয়ে নাহয়
আরেকদিন কথা বলা যাবে সাংবাদিক সম্মেলনে!
তমিজ উদদ্ীন লোদীর গুচ্ছকবিতা পড়ুন এখানে
রোকসানা ইয়াসমিন মণির কবিতা পড়ুন এখানে
মতিন বৈরাগীর কবিতা এখানে পড়ুন
মাসুদ মুস্তাফিজের কবিতা পড়ুন এখানে
অমিত চক্রবর্তীর কবিতা পড়ুন এখানে
বড় ও বিখ্যাত কবির কবিতা পড়ুন এখানে
জিয়াবুল ইবন এর কবিতা পড়ুন এখানে
কাজুও ইশিরোগুরের উপন্যাস বিশ্লেষন প্রবন্ধ পড়ুন এখানে
শূন্য ও আকাশের প্রতি পড়ুন এখানে
অনলাইন সাহিত্যের গুরুত্ব পর্যালোচনা পড়ুন এখানে
এমরান হাসানের কবি পড়ুন এখানে
রাখো তোমার হোমিওপ্যাথ কাব্যতত্ত্ব
গোলাপের ঘরে ঢোকে বুটজুতো পায়ে দ্যাখো জংলী ধর্ষক!
করুণ মাতমে নড়ে হাওয়া! আলীর দু’বাহু ওড়ে দেহচ্যুত;
নীচাকাশে দেখা যায় গোলার হাওয়াই। উপসাগরের জলে
এ বসন্তে লেখা হলো বোয়াল-উৎসব; চেয়ে দ্যাখো-
রক্তস্রোতে ভেসে যায় পাবদাপরাণ, বাঁশপাতা মানবতা।
ডাক্তার ঔষধ নেই; নার্স গেলো কই? আমাদের প্রয়োজন
এ সময়ে, অস্ত্রোপচারের ছুরি, ব্যান্ডেজ বাঁধাই। হোমিওপ্যাথ্
শ্বেতবড়িকা, একপেশে, এতো শিশুসর্দি নয়, তোমরাই বলো
তবে লাগিবে কি কাজে? অধিকন্তু, নয় শুধুই প্রতিকার, আমরা
বেমার-বারণ মহাপ্রতিরোধ চাই। চাই ভিটামিনে ভরপুর
নির্মেদ স্লোগান: আর কোনো মৃত্যু নয় অপ বা অকাল।
ডাউন উইথ মাৎস্যন্যায়। লোভের জীবাণু নেশে আমরা রচিব
বিশ্ব জুজুমুক্ত-বাসযোগ্য আলীর আবাস। আফ্রো-এশিয়ার ঘরে
যে মাফিয়া চক্র আনে বর্গীর উৎসব, হালাকু-মদের নেশা,
আমাদের হাতে তার বাড়াডিশে ছাই।
অতএব গুটিয়ে নিয়ে যাও হে বান্ধব- কাব্যতত্ত্ব বিশারদ-
প্রকরণ পুরিয়া ভর্তি সারে সারে হোমিওপ্যাথ কবিতার বড়ি!
ফ্যাশনের হাটে বন্ধু জেনে গেছি, তুমিও তো সখেরই কবিরাজ।
তোমার চেম্বারে ঝোলে যে সাইনবোর্ড- সে তো আমি আগেও
দেখেছি- আটলান্টিক হাঙরের জলসংহিতায়; ওখানে যাবো না।
ধোঁয়াশা আড্ডায় ওড়ে মত্ত হাতছানি, ঝুঁকে পড়ে হাওয়া।
রেক্টিফাইড স্পিরিটে জমে আত্মরতি; জানি। যাবো না যে।

প্রথম কবিতা টি বেশ লেগেছে । ব্যাধ,পাখি,ধনুক ইত্যাদি দিয়ে কবি সাম্রাজ্যবাদ কে তুলে ধরেছেন কী অবলীলায় ! ছোট একটি কবিতা অথচ কত অলংকার ও যুথসই শব্দ!
উত্তরমুছুনউত্তরাধুনিক,মুক্তবাজার,জ্যামিতিক সূত্র ইত্যাদি পাঠককে পৌঁছে দেবে তৃপ্তির অতলে । কবির ভাষায়
("ফলে তো শিকারিরা চলে যায় ঘড়িয়ালডাঙার বিল ছেড়ে হাওড়ে বাওড়ে।")
বাকি সব কবিতাগুলোও পড়েছি এবং ভালোও লেগেছে , তবে এর মুগ্ধতাকে ছুঁতে পারেনি ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks