সাজ্জাদ সাদিকের তিনটি কবিতা ।। three poem by sazzad sadik কুয়াশা।। kuasha

সাজ্জাদ সাদিকের তিনটি কবিতা ।। three poem by sazzad sadik কুয়াশা।। kuasha



সাজ্জাদ সাদিকের তিনটি কবিতা

শব্দ দাও পঙক্তিমালা দেব

উত্তাল সমুদ্রের ফেনিল ঢেউ এসে থেমে যায়
প্রেমিকার পায়ের কাছে,
কানের কাছে চুপিচুপি যে শব্দ তুমি উচ্চারণ কর
সে কোমল শব্দগুলো কি আমায় দেবে?  
নাকি ঊর্মিমালার উন্মত্ত কল্লোল কুঁড়িয়ে দেবে আমায়? 
পাহাড়ের গা বেয়ে যে শ্রান্তিহীন অবিরাম ঝর্ণা নেমে আসে
আর সে পাহাড়ের বুকে দাঁড়িয়ে 
প্রেমের কবিতার যে শব্দগুলো তুমি উচ্চারণ কর গলা ছিঁড়ে  
সেরকম গুটিকতক নিঃসংকোচিত শব্দ আমায় দাও
নাকি আমায় দেবে জলপ্রপাতের কলকল কান্নার ধ্বনি ?  
প্রেমিকার গাল বেয়ে কভু অশ্রু ঝড়ে রাত-দুপুরে
সে নোনা জলের গভীরে গুরুগম্ভীর শব্দ'রা লুকিয়ে থাকে
সেখান থেকে কিছু শব্দ এনে আমায় দেবে?
দেবে কি তার অস্পষ্ট গলার নীল বেদনা? 
সে নীল মাখিয়ে ধূসর রঙে 
তোমায় দেবো কষ্টের আঁচড়ে আঁকা পঙক্তিমালা।


আমাকে খুঁজো না

আমাকে খুঁজো না তুমি
খুঁজো না নীল তারার ভেতর।

তুমি নীল অপরাজিতা দেখেছ, নীলা?
দেখেছ কি তার নীল বেদনা,
নীলাভ বেদনা আমার কতটা গুরুতর?

কতটা অন্ধকারে গগনের এককোণে
নিস্তব্ধ হাহাকার নৈঃশব্দ চিৎকারে
কষে পড়ি কতবার?
দেখছ কি আমি কষে পড়ি কতবার?

তারার ভেতর পড়ে থাকা আঁধারি নীল
হাসিরা মলিন, জ্যোৎস্না নেই, নেই চাঁদ
নেই জোনাকির মিছিল।
আমাকে খুঁজো না আর, আমাকে খুঁজো না
খুঁজো না আমায় সুন্দরী ঝিলমিল।


আমায় শব্দ দাও

আমায় শব্দ দাও, দাও কুড়িয়ে 
অবহেলায় পড়ে থাকা ব্যথার স্বরবর্ণ
বুকের ভেতরের কিছু অব্যঞ্জিত ব্যঞ্জনবর্ণ
বর্ণমালা গেঁথে গেঁথে গুটিকয়েক শব্দ বানিয়ে আমায় দাও।  

স্টেশনের প্লাটফর্মে  কিছু জীর্ণ মানুষ 
কখনো কখনো আক্ষেপ নিয়ে অস্পষ্ট কিছু উচ্চারণ করে দীর্ঘশ্বাসে
কখনো তীব্র শীতে ঠোঁট দুটি কেঁপে ওঠে এই মাঘে 
ছোট ছোট বাড়ি-ঘর বস্তির , বাতাসে এলে ঝড় অস্বস্তির 
প্রলয়-নৃত্যে  পৃথিবী তার নেচে যায় বৈশাখে। 

প্রকম্পিত ঠোঁটের প্রতিটি কম্পনে 
যে অসহায়ত্বের ধ্বনি উচ্চারিত হয় বস্ত্রহীনের 
সে ধ্বনি-সমষ্টির নিগূঢ় অর্থ তোমরা বুঝ? 
তবে তাদের বুকের ভেতর হাহাকারের যে আবরণ 
আর আক্ষেপের যে পাহাড় 
সে গভীর থেকে কিছু বিষণ্ন শব্দ এনে আমায় দাও
দাও, ছন্দের মালায় গেঁথে 
তোমাদের হৃদয়ে স্পর্শ করি কবিতার করুণ রসে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন