সৈয়দ নূরুল আলমের ০৫টি কবিতা।। poems by syed nurul alam,kuasha

সৈয়দ নূরুল আলম।। কবি


সৈয়দ নূরুল আলমের ০৫টি কবিতা 


বাতাসে পোড়া গন্ধ 

ওদের ফোকলা দাঁতের হাসিগুলো আর দেখবে না ক্লাসের ব্লাকবোর্ড, স্কুলের কড়িডোর, সিঁড়ির পাশে  লাগানো বোগেনভেলিয়ার গাছ। 
ডান পায়ের একটা নিঃসঙ্গ জুতো, খয়েরি রঙের স্কুলব্যাচ, ভারি ভারি বইয়ের  স্কুলব্যাগ আগুনে পুড়তে পুড়তে কাঠকয়লা- ডুকরে উঠে কান্নাগুলো, বুকের বাঁ পাশে জমাট বাঁধা। 
কচি হাতের আঁকা দেয়ালে ছবির পঙক্তি কেমন করে ভুলবে, কেমন করে ঘুমোবে, এতএত মৃত্যুর আহাজারিতে।
পুড়ে যাওয়া লাশের ঘ্রাণ নিতে নিতে ক্লান্ত স্বজন। ওদিকে লাশ নিয়ে রাজনীতির বাজার গরম।
ভাত চাই না। টাকাকড়ি চাই না। লাশ চাই। আমার পুতের লাশ দেন, গ্রামে চইলা যাই।

ভাঙা বিকেলের মতন 

বুক পকেটে রাখা একমুঠো বিকেল, কুটিকুটি করে ছিড়ে উড়িয়ে দিই আকাশে, লন্ডভন্ড জীবনের ছায়া লেপটে থাকে বিকেলের মরা রোদে, এখানেই সম্পাদন হয় ইতিহাসের টিপসই, উঁকি দেয় সারপ্রাইজ দেয়ার মতন সন্ধ্যা তারা, ঝোপের আড়াল থেকে বেড়িয়ে আসা একঝাঁক পাখির কোলাহল। 
একটু পরে হুইসিল বাজিয়ে মেলট্রেন চলে যায় পুব থেকে পশ্চিমে, পড়ে থাকে শূন্য ষ্টেশন, চায়ের স্টল, ট্রেনের টিকিট ঘর। এবং একজন একাকী নারী ভাঙা বিকেলের  মতন।

গল্প বরফের ছুরি পড়ুন এখানে
প্রবন্ধ,উত্তরাধুনিক কাব্যধারার যাত্রাঃ মতিন বৈরাগী-এখানে
প্রবন্ধঃ রাজনীতি ও সাহিত্য পারস্পরিক সম্পর্ক পড়ুন এখানে
কবি মজিদ মাহমুদের গুচ্ছকবিতা পড়ুন এখানে
মিলন ইমদাদুলের কবিতা পড়ুন এখানে
তাপস চক্রবর্তীর কবিতা পড়ুন এখানে 
ঋজু রেজওয়ান এর দশটি কবিতা পড়ুন এখানে
নাহিদ হাসান রবিন এর গল্প পড়ুন এখানে ক্লিক করে


শহর ছাড়া মানুষ 

আমি চুপিচুপি শহর ছেড়েছিলাম- ফুচকা মামা, মেসের খালা, আবুল হোটেলের গফুর মামা কেউ আমাকে ধরে রাখতে পারেনি, বৃথাই কেঁদেকেটে অস্থির -তোলপাড় করেছে সময়।
এভাবেই মায়ার মানুষ মায়া কেটে পালিয়ে যায় অবলীলায়। কোথায় যায়, কতদূরে যায়? গন্তব্যের ওপারে কে থাকে অপেক্ষায়?
ময়নার কথা ভেবে, ঝুটওয়ালা লাল মুরগীটা কবে নাগাদ ডিম-বাচ্চা দেবে,  সকাল হতে না হতে ময়নার হাঁসগুলো পুকুর দাপিয়ে সাতার কাটে, সব ভাবতে ভাবতে আমি চুপিচুপি অপ্রেমের শহর ছেড়েছিলাম
কোনো পিছুটান নেই আমার।

মিছিলে মুখ

এই জুলাইয়ে দ্রোহের বর্ষা নেমেছে, ফুটেছে সাহসী কদম ফুল, মানুষের মুখ- মিছিলে মুখ।
নিহত তরুণের লাশ কোথায় লুকাবে, দেয়ালের ওপারে।
ভোর হওয়ার আগে অন্ধকার  সাতরিয়ে ওরা এসেছে স্বাধীন সংলাপে অংশ নিতে, এরপর গাছগুলো সুন্দর হোক এ আশায় দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হয় মিছিলের গল্প।
মুখগুলো উজ্জ্বল, উজ্জীবিত। বাংলাদেশের মাটিভেদ করে আসা দিনগুলোর ইতিহাস, অনিবার্য প্রাসঙ্গিক ও সৃষ্টিমুখর।

জন্মদিনে লাল জামা

এক টাকা মূল্যে সৎ ও সাহসী  মানুষ দাও, আজ আমার জন্মদিন, জন্মদিনে পুতুল বা কোনো খেলনা চাই না, একজন মানুষ চাই, বাবার মতন।
 আমার কাছে বাড়তি কোনো কড়ি নেই। শুধু... 
বাবার পিঠ দেয়ালে ঠেকলেও, মুখটা সামনেই থাকত। দেশ আজ বাবার মতন একজন মানুষ চায়। জন্ম দিনের বেলুন উড়ে বাতাসে।




Post a Comment

Thanks

নবীনতর পূর্বতন