মহসিন খোন্দকারের এক গুচ্ছ কবিতা
বাঁধাকপি
শেফালির হাসির ভেতর
বিস্তৃত বাঁধাকপি,পরতে পরতে রেসিপি তারপর
নরম রোদের রেজালা
বাইরে থেকে সস নিয়ে গেলেই
খুলে যায় বহুগামী দরজা,প্লেটে বেড়ে দেয় বোধের বুদবুদ
আর রকমারি রোদ!
চোখ দিয়ে কপি খুললেই-খুশির পিনকোড,
রক্তের আশ্চর্য উলম্ফনে এসে দাঁড়াবে
ডবল হলিডে!
কসবি
গার্হস্থ্যগুঞ্জন থেকে পালিয়ে যাওয়া ইয়ারমেট রোজিনা খুনসুটি বিক্রি করে পুরানটাউনে,মনতলার টঙ্গঘরে তার ফুলফূর্তির দোকান
আবুলের শার্ট,আশুতোষের লুঙ্গি আর পরিমলের
প্যান্ট-রোজই ফূর্তি কিনে,রাতকে লম্বা করে তারা
ঘুমিয়ে যায়-একটি বাজারি ঘ্রাণের ভেতর,তারপর ঘ্রাণ দিয়ে ঘ্রাণ ধরে
বুকে ডবল হলিডে নিয়ে
প্রায়ই দাঁড়িয়ে থাকে রোজিনা,তারপর কর্পূরের ফাঁদে ধরা পড়ে কর্পোরেট বক,আবুলের শার্ট,আশুতোষের লুঙ্গি,পরিমলের প্যান্ট খুবই কর্পূরাক্রান্ত
শনিবার
হাতের তালুতে হুইসেল রেখে-ট্রেন চলে যায়,
উড়িয়ে দেয় সবুজ খুশি,জানালায় ঝুলে থাকে
শনিবার আর কসমেটিকসের কানাকানি
ট্রেন যায় একটি ইশারার ভেতর,কেঁপে ওঠে বাতাসের মাংস
বিপরীত প্রতিক্রিয়ায়
আপ ট্রেন ডাউন হয়,নদী বাঁক নেয়,পুরনো ঘ্রাণে
ফিরে আসে পাখি,ধ্বনির খাপে
ঢুকে যায় ধ্বনি--ভীষণ ঝুলে থাকি শনিবারে!
কবি মজিদ মাহমুদের গুচ্ছকবিতা পড়ুন এখানে
প্রবন্ধ,নজরুলের রহস্য,পড়ুন এখানে
লিসেল মুলারের অনুদিত কবিতা পড়ুন এখানে
ভিন্ন স্বাদের গল্প,কফি হাউজের ওয়েটার' পড়ুন এখানে
নজরুলের রহস্যময়তা নিয়ে প্রবন্ধ পড়ুন এখানে
চৌধুরী মো.তারিকের কবিতা পড়ুন এখানে
শিশির আজমের দীর্ঘ কবিতা পড়ুন এখানে
মিলন ইমদাদুলের কবিতা পড়ুন এখানে
ভুলঘ্রাণ
যে পাল ছিঁড়ে গেছে বখাটে বাতাসে তার ক্ষুধার্ত শরীর টেনে নিয়েছে বর্ণচোরা ভোর
সব রাত নক্ষত্রের নয়,এই কারকে ঝুলে থাকা
প্রজাপতি দেখেনি আকাশ,আকাশের ওপারের
আকাশ যে পাখিহীন-তার ছায়াবাজি পড়া হয়নি কখনো
ভুলঘ্রাণে ঘষে ঘষে
যে ভেঙ্গেছে ঠোঁট-প্ররোচনের পাপড়ি দেখে
সে কেনো ডানা ডুবায় প্রহসনের পেয়ালায়?
দুই পৃষ্ঠা চোখ
দুপুরের দুই পৃষ্ঠা চোখ পড়লাম,উল্লম্ব ইচ্ছার
উচ্ছ্বাস!
ভেতরে তিন ফর্মার আকাশ,চাঁদনিঘাটে
নামছে চনমনে চাঁদ!
রোদের স্যান্ডউইচ খাই,মচমচে সময়ে
হাসি দেয় উড়াউড়ির সস!
রিফিলিং স্টেশন
শহুরে শিসের ভেতর
সোনামুখি সূচের সংসার,অনেকেই রাঁধতে আসেন দারুচিনি দুপুর,ফূর্তি ফুলে বেড়ে দেয় বোতামখোলা বাতাস,স্যুপ ফিসফিস করে তরল তর্জমার তকলিফে!
চোখ ভর্তি দুপুর দিয়ে নিয়ে আসেন
খুশির খোসা আর ডাহুকের ডানা ঝাপটানি!
জ্বালানিশূন্য
এক পৃষ্ঠা রাত এই মাত্র ভরে নিলেন
বহিরাগত বুদবুদ আর দু'টি বিচিহীন আতার
দরদামের রোদ!
জোড়কদমের উপাখ্যান
ধান উড়ানোর সময় ছালেহা ভাতশালিক,চোখে তার স্বরসন্ধির নিবিড় নড়াচড়া,বুকে দ্বৈত চাষের দাঁড়িকমা,বিপরীত পাতে বেড়ে দেয় দোয়েলের দৃপ্ত ভঙ্গিমা!
দুধবাজাল ধানের ফিসফিস চোখে নিয়ে ছালেহা
টেনে লম্বা করে একটি গেঁয়ো দুপুর,একটি সাংসারিক শিস তাকে টেনে কাছে নেয়!
পুলকিত ছালেহা ঠিকঠাক করে স্বরচিত জলিধান
আর জোড়কদমের উপাখ্যান!
গোলাপজান
উত্তরপাড়ার গোলাপজান---সেও জানে কোলাহল থেমে গেলে----তৃষিত ঠোঁট দেখাবে বেগানা বাতাস,পাকাধানের শীষের মতন বারবার দুলে ওঠবে তার জোড়কদম,
চুপচাপ সে ঢুকে যাবে বেয়াড়া বাতাসের
ভূগোলে,স্বগত সংস্কৃতির দ্বিতীয় অধ্যায়ের পাঠ
নিবে বাণিজ্যিক বক্কর
গোলাপজানের চাঁদ উঠে ক্ষুধার
দাঁড়িকমা ছিঁড়ে,দীর্ঘশ্বাসের ঠোঙায় বিক্রি হয়
রঙিন বৈঠার জলাগুন
আর ঢেউডালিমের ধুকপুক,
বিছানায় ডুবে গেলে ক্ষুধার্ত মাস্তুল----গোলাপজান বুঝে নেয় সহজাত সওদা----এক নিশি এক শিশি,আদিম আতরের মূল্যহীন মেলানকলি
তৃতীয় ছায়া
আমাদের দ্বি-ভাঁজ রোদে কেউ একজন রোদ ভেজে খায়--প্রায়শ পোড়া গন্ধ আসে!
আমাদের যৌথ জমিন বেলে-দোআঁশ এখানে কেউ একজন ধ্রুপদী দাবাকলম রোপে,জল দেয় কামনার কোলাহলে,
জিজ্ঞাসার জোড়কলমে
উঁকি দেয় কামাতুর কুঁড়ি,তারপর ভেজা ভুল ঝুলে থাকে ত্রিভঙ্গিম তন্দ্রায়!
আমাদের একান্ত লনে কেউ একজন হাঁটাহাঁটি করে,প্রায়ই পড়ে থাকে জোছনার ছায়া,খুটিনাটি খুশির খোসা আর
সন্দেহের সঘন শিস!
পরকীয়া
টবফুল টপকিয়ে যে রাত ডুবে যায়
বুনোঘ্রাণের বুদবুদে-সে কখনো পড়েনা রাতরসায়ন। বাসাবুনা পাখিও হরহামেশা বাইরে রাত কাটায়,অবলীলায় টোকা দেয় ভিন্নতার বিকিনিতে,ফেরারি ফড়িংডানায় দেখে নেয় সহজিয়া সুন্দর,কখনো দেখেনা নিয়ম অনিয়ম অথবা বিষয়ের ব্যতিক্রম ভগ্নাংশ!
যে রাত ভেসে গেছে অচেনা আহবানে,যে মন দেখেছে অচেনার স্বাদ,তাদের নেই আফসোসের অকারণ আর্দ্রতা,পোড়াপুড়ির পিরামিডে সব মানুষই নিরপেক্ষ!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks