গুচ্ছ কবিতা
গোবিন্দলাল হালদার
বয়স দাঁড়িয়ে আছে ত্রিভূজ রাস্তার সামনে। আমি এবং
আমার সহযাত্রীরা দেখি ত্রিভূজ রাস্তার গর্তে অন্ধকার।
সেখানে তুলোর পলিতা নেই,তিল সরিষার তেল নেই।
মাটির বাতি নেই। দিয়াশলাই নেই। আমরা অন্ধকার
তাড়াতে ব্যর্থ হই। নিকটে শুনি বিভ্রান্ত কান্নার ধ্বনি।
অঙ্কের ছাত্র
গেঁড়োর কঠিন অন্তরে প্রতিদিন
শীতল জল দিয়ে আমিও কঠিন
ব্রতে নিমগ্ন হবো। অনির্দিষ্ট সময়ের বৈঠকে।
আবারও অতীতের পাঠে ফিরে যাবো
দিনের প্রতিপাদ্য অনুশীলনে।
এখানে অঙ্কে দেখি বিয়োগের অত্যাচার
আমি তখন কোন অঙ্কের ছাত্র ছিলাম।
কয়েকটি অস্থির দৃশ্যকল্প
আমাদের পাখিরাও সুর বদলায়,জানো?
দিনের বিকলাঙ্গ অত্যাচার ডানায় লিখে
রাতের ঘুটঘুটে ঝিঁঝি আঁধারে পাঠ করে
ডালপালার আড়ালে বেদনা ভয় জীবনী
নির্ঘুমো পলায়ন হৃদয়ে অপলক দৃষ্টিতে।
পাখিদের ভোরের গানে আগের সুর মুদ্রা
খুঁজি কবিতার কয়েকটি অস্থির দৃশ্যকল্পে।
ব্যক্তিত্বের যোলোটি মার্বেল
হেঁটে গেছে কত দূরে ছোটবেলার দিন
এখন স্মৃতি হাতড়িয়ে খুঁজে পাই না
আত্মমগ্ন মার্বেল বেলা।
শুধু কুড়িয়ে পেয়েছি পুটলিতে বাঁধা
খেলায় জিতা ছোট বেলার ষোলোটি মার্বেল।
শেষে এসে অবসরে ভাবি
ব্যক্তিত্বের ষোলোটি মার্বেল
নিজের সন্ধানে কতটি আছে গুণে রাখিনি।
দিনের দূর্বল কথা
বিকাল তুমি হাতের ব্যাগে নিয়ে যাও
দিনের দূর্বল মুহূর্ত।
প্রতিদিন কমতে থাকলে দূর্বলতার লক্ষণ
আমি টাটকা আখের গুড় দিয়ে এক গ্লাস
বাথান গাভীর দুধ খেতাম।
তারপর ঘুমের শরীরে আদর দিয়ে আমিও
দুঃশ্চিন্তা ছাড়াতে পারছি ভেবেই
বহুদিনের বিবর্ণ ছবিটি দেখতাম সানন্দে।
দৃষ্টির সামনে শক্ত বাঁধ
ভাবনা দুরাগ্য রোগী। দ্বিতীয় বার অন্ধকার আমার
বাড়িতে এসে বিছানায় ঘুম যায় একসাথে। আমার
সাথে থাকবে। প্রস্থানের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। প্রতিদিন
গাঢ় হয় অন্ধকারের রূপ।
আমার কতিপয় নৈমিত্তিকতা উবে যাচ্ছে বাতাসের
কামড়ে। রক্তচাপ দ্রুত দৌড়াচ্ছে। যে কারণে সব
যোগফল শূন্যের প্রতিকৃতি। অসহ্যের ঘূর্ণিত ঝড়ে
দৃষ্টির সামনে শক্ত বাঁধ।
নাহিদ হাসান রবিন এর গল্প পড়ুন এখানে ক্লিক করে
উলঙ্গ মুহূর্ত
ভাবনার বৃষ্টি জল জমা হও চেতন নদীর গর্ভে।
বৃষ্টির সৃষ্টি জলে ডুব দিয়ে সযতনে তুলে নিবো
অন্তরের যত গান এবং জীবনের যত মহা ধ্বনি।
সুর আর রসের ডিঙ্গা। ভেসে যাবো নিশ্চিন্তের
মন্দ্রিত স্রোতে।
ভাবনার বৃষ্টি জল শুকনো মনের মাঠ ভিজিয়ে
দাও তোমার কোমল মনের অনুভূতির ছোঁয়ার
বিশুদ্ধ শৃঙ্গারে। প্রায়শই বিপর্যয়ের ঘন্টা ধ্বনি
কানে আসে উলঙ্গ মুহূর্তে।
বিকৃত রুচির আহ্ললাদ
প্রাগৈতিহাসিক গুহা জীবনে ইচ্ছা করে
আবার নিজেকে নিয়ে দেখি বৃহদাকার
গাছের বাকল,পশুর চামড়া,প্রশস্ত পাতা
এগুলোর ব্যবহার সেখানে সবই নিষিদ্ধ
হয়ে গেছে। এই আমি ইদানিং ইত্যাদি
রুচির আচ্ছাদন ব্যবহার করে অভিনব
প্রতিযোগিতায় নিয়মিত তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য
টুকরো প্রচ্ছদে পূর্ণ মূর্তি হয়ে প্রদর্শিত
হই জনসমুদ্রে দৃষ্টির ঢেউয়ে। এভাবে
ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছি বিকৃত রুচির আহ্লাদ।
দূূরের শূন্যপূর
তুলির আঁচড়ে লেখা দেয়ালের বাক্যরা
রোদ জলের যৌথ অত্যাচারে চটে যায়
অদৃশ্য হয়। চিত্রকর অর্থ পায়। এবং সে
ভুলে যায় দেয়াল লিখনের বাক্য বিন্যাস।
ঘুণের উচ্ছিষ্ট মিহিন কণা চোখের ভাষায়
ফ্যাকাশে। রসহীন। পরিত্যাক্ত। অপদার্থ।
আমার বিশ^াস নিজ রূপ চটে যাচ্ছে বলেই
দূরে ছিটকে গিয়ে সম্পূর্ণ এক হয়ে গেছি।
এককিত্বের দহনে একাই তো চলে যাবো
দূরের শূন্যপুর।
বাতাসে ঘুঙুর বাজে
বাতাসে ঘুঙুর বাজে মাটিতে রাখা পায়ের কোলে।
ও ললনা! তুমি নাচছো সেই বাতাসের ভারসাম্যে।
কথা বলছো বাতাসের মুহূর্মূহ সঞ্চালনে। তোমার
এত অহংকার। তুমি কি কথা বলবে না? তোমার
অন্তরে কি বাতাসের আনাগোনা হয় না ? নিশ্চল!
আমি তো দেখছি তোমার চোখের পাতায় বাতাস
করছে উৎসব। তোমার রঙ্গিলা ওষ্ঠাধারে জলবায়ু
দেয় আর্দ্রতা। আমিও বাতাসের মেইলে প্রেমকাব্য
পাঠিয়ে দিলাম। স্পর্শ আর অনুভূতিরা এক সময়
তোমার প্রতিমা রূপ অঙ্গটি ছুঁয়ে দিলে আমি ধন্য।
Khub sundor
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks