চৌধুরী মো. তারিকের কবিতাসমূহ
ভোরের আলো উঁকি দেয় জানালায়
বাবার শ্বাশত আওয়াজ এবং পেন্ডুলামের ঘন্টা
থেমে গেছে বহু কাল।
দামী আসবাবের ভিড়ে শত বছরের দেয়াল ঘড়িটা চালান হয়েছে আস্তাকুঁড়ে।
তোমাকে কিনেছিলাম বেতনের টাকা বাঁচিয়ে
মায়ামাখা মুখ সচল হলেনা আর
ঠাঁই হলোনা কোথাও
সব আয়োজন মিথ্যে হলো আজ
কোলাহল ছেড়ে আমার বসবাস ধুসর মৃত্তিকায়
তুমি নিঃসঙ্গ নিবাসে।
স্যাঁত স্যাঁতে উঠোনে পা পড়েনি বহুকাল
কীটপতঙ্গেরা লুকোচুরি খেলে সেখানে
সীমাহীন নিঃসঙ্গতায় আবৃত আমি
ঠাঁই হয়নি লোকালয়ে
আমার ঠিকানা তাই অরণ্যে নিবাসে।
দগ্ধ শরীর
দামী আসবাবের ভিড়ে শত বছরের দেয়াল ঘড়িটা চালান হয়েছে আস্তাকুঁড়ে।
তোমাকে কিনেছিলাম বেতনের টাকা বাঁচিয়ে
মায়ামাখা মুখ সচল হলেনা আর
ঠাঁই হলোনা কোথাও
সব আয়োজন মিথ্যে হলো আজ
কোলাহল ছেড়ে আমার বসবাস ধুসর মৃত্তিকায়
তুমি নিঃসঙ্গ নিবাসে।
স্যাঁত স্যাঁতে উঠোনে পা পড়েনি বহুকাল
কীটপতঙ্গেরা লুকোচুরি খেলে সেখানে
সীমাহীন নিঃসঙ্গতায় আবৃত আমি
ঠাঁই হয়নি লোকালয়ে
আমার ঠিকানা তাই অরণ্যে নিবাসে।
দগ্ধ শরীর
সম্রাটেরা পকেট কাটে নিপুন হাতে
দগ্ধ শরীর মৃত্যু গুনে হাসপাতালে
রাজধানীতে শরীর বিক্রী রাস্তাঘাটে
বনের পাখী বন্দী হয় কাঁটাবনে
শীতার্থদের শীতের জ্বালা কুঁড়েঘরে
আমাদের মূল্যবোধ চালান হয় আস্তাকুঁড়ে।
শোকের মেয়াদ
সব পথ দেখে এলাম
জেগে থাকা কান্না
পথের ধুলোয় মিশে গেছে
দেয়ালে গ্রাফিতি লেখা হয়
সূর্য ডোবার পরে
শোকের মেয়াদ শেষ হয়
তারও আগে।
গন্তব্য
বিন্দু থেকে মৃত্যু
একটাই পথ
সরল সমান্তরাল
পৌঁছে গেছে গন্তব্যে
অন্ধকার মুখোমুখি বসে আছে নি:শ্বাস
ফিরে আসে মগজে
অচেনা লাগে
পড়ে থাকে স্মৃতি,ধুলো জমে আছে
ঝিঁ ঝিঁ পোকাদের বসতে।
ফিরবে না
জীবনের অর্ধেক কেটে গেছে
সতীর্থদের সান্নিধ্যে,
মহুয়া ফুলের গন্ধে মাতাল হাওয়া দোল খায় এখন পদ্মার বালুচরে
কখনো একই শহরে একই বসতে বসত ছিল আমাদের
শীত আর রোদ্দুর মাখামাখি করে খেয়েছি শালুক ফুল।
মতিহারের সবুজ জাজিমে রক্তে ভেজা শিশির খুঁজেছি
শিরিষ গাছের ছাঁয়ায় আলোর মিছিলে শোকের অর্ধেক ভাগাভাগি করে নিতে সতীর্থদের খুঁজেছি
রবীন্দ্র ভবনে
কখনো পদ্মার চিক চিক বালুতে পায়ের ছাপ খুঁজেছি।
সলতের আলোর মত নিভু নিভু হয়ে নিভৃতেই চলে গেছে আমাদের জামাল আখতার চন্দন জিয়া পাশা ফরিদ নির্মল সাইফুল...
বিদায় তো নয় নিয়ে গেছো ছুটি!
ছুঁয়ে আছো আমাদের ছুঁয়ে থাকো
উদ্দীপ্ত যৌবনের বাউরি বাতাসি দিন ফিরবে না কোন টানে
হায়! যে যায় পালিয়ে যায়, বায়না ধরি একটু দাঁড়া!
থামবে না কোন গানে
ফিরবে না কোন টানে।
বেয়াল্লিশ বছরের স্মৃতি মিশে আছে ধমনীতে
ধুলো জমে আছে রোদ মাখা করিডোরে
কারো দাঁড়াবার সময় তো নাই।
শিশির আজমের দীর্ঘ কবিতা পড়ুন এখানে
মিলন ইমদাদুলের কবিতা পড়ুন এখানে
তাপস চক্রবর্তীর কবিতা পড়ুন এখানে
ঋজু রেজওয়ান এর দশটি কবিতা পড়ুন এখানে
শোক সংবাদ
পিচ ঢালা পথে নামলেই আমার ভয় করে
জেব্রা ক্রসিং দেখলেই ভয়ে শিউরে উঠি।
যন্ত্রদানব তৈরী আছে সজোরে ধাক্কা মারার জন্য
মুখ থুবরে পড়ে থাকবো মহা সড়কে
রক্ত জমাট বাঁধবে
লাশ চলে যাবে আন্জুমান মফিদুলে
সিংগেল কলামে ছোট্ট করে নিউজ হবে, শোক সংবাদ...
সম্রাটেরা টিকে থাকবে
আমি আপনি শোক সংবাদের কাতারে চালান হয়ে যাব।
দেনার হিসাব
ভুল শোধরালে শুদ্ধ হওয়া যায়
সিকি আধুলি দেনার হিসাবও মিটিয়ে দিতে হয়
অন্ধ না হলে সব হিসাব চুকিয়ে দিয়ে বলতাম
দেখা হবে আমাদের অন্য জগতে
ততদিন হিসাব টা তোলা থাক।
শুন্য ঘরে অন্ধকার ফিরে আসে
মুখোমুখি শুধু স্মৃতিগুলো থাকে
শোকের সাথে মৃত্যু মিলিত হয়ে
ফিরে যায় ছায়া হয়ে মায়াকে রেখে।
দায়
করোনাকালে বন্দী ছিলাম দীর্ঘ সময়
এখন আবার বন্দী হলাম দাবদাহে
মানুষ ঠকাবে মানুষকে
পৃথিবী কি তাঁর দায় নিবে
মসজিদ মন্দিরে ভীড় বাড়বে
আত্মশুদ্ধি ও সংযমের নামে
মানুষ ঠকাবে মানুষকে
এই পৃথিবী কি তাঁর দায় নিবে
এই পৃথিবী সব জানে।
আড়াল
তুমি আড়ালেই থেকে গেলে
স্বদেশে ফেরার পথ জানা নেই ব’লে
অন্ধকারও আড়ালে চলে যায়
সূর্যকে পথ ছেড়ে দিতে হয়
ভিটে মাটি সব থেকে যায়
মানুষগুলি শুধু আড়ালে চলে যায়
ভালোবাসার চিন্হ রেখে যায়
নৃশংসতার কালো মেঘ বটবৃক্ষের আড়ালে থাকে
বাকী সব অস্হি মজ্জা মাটির আড়ালে চলে যায়,
অসুখটা আড়ালেই থেকে গেলো
উপশমের পথ জানা নেই ব’লে
প্রতিদিন আমাকে দেখে যে চোখ
এতো আয়োজন রেখে
সেও আড়ালেই চলে যাবে।
তুমি আমি আগে পিছে আড়ালে চলে যাব
এটাও মেনে নিতে হয়।
পায়রার ঘরে আগুন
নয়নতারা ফুল গুলি ঝরে পরার আগে
সুখের পায়রার ঘরে আগুন দিল।
বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর শক্তি লাল আগুনে পুড়ে ভস্ম হয়েছে
ঝাউ বনের অট্টহাসি দেখে
অসুখের নীল ধোঁয়াটে চোখে
শুধু মানুষ খুঁজি
পাথর খেকো মানুষ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks