গল্প
সোনিয়ার শাড়ির আঁচল
আহম্মদ হোসেন বাবু
আহম্মদ হোসেন বাবু
শাড়ি নিয়ে অনেক কবিতা হয়েছে লেখা। মায়ের মায়াভরা শাড়ির আঁচল, বোনের স্নেহের আঁচল, মেয়ের অতি আদরের শাড়ির আঁচল, বউয়ের প্রিয়ার আঁচল কিংবা মিছিলে মিছিলে মেয়েদের দ্রোহের আঁচল নিয়ে কবিতা। কিন্তু আজকে লিখতে বসে, কেন জানি আর কবিতা লেখার ইচ্ছে হলো না। শাড়ির ভাঁজ নিয়ে চারিদিকে যে হৈ-চৈ হচ্ছে, তাতে মনস্থির করলাম আজ আর কবিতা নয়- বরং চলুন একটা গল্প শোনা যাক। এটি কেবলমাত্র গল্পই নয়, আমার হৃৎকখনও বলা যেতে পারে।
সাতাশ বছর আমার প্রবাস জীবন। জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে যেতে হয়েছিল। কিন্তু তবু দেশ ছিল সর্বক্ষণ হৃদয়ের গভীরে। সে সময়ে আমাদের দেশের খুব কম মানুষ আমেরিকায় দেখা যেত। সেখানে ম্যানহাটনের রাস্তায় শাড়ি পরিহিতা নারী খুঁজে পাওয়া ছিল সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার। এত খোলামেলা পোষাকের ভেতরেও মন পড়ে থাকতো শাড়ির ভাঁজে। হঠাৎ কখনো যদি কোন শাড়ি পরা মেয়ে হেঁটে যেতে দেখেছি এবং সেটা যত দূরেই হোক, দৌড়ে কাছে গিয়েছি। শুধু শাড়ি পরা সেই মানুষটিকে এক নজর দেখবো বলে। কখনো আমার দেশের নারী, কখনো ভারতের, কখনো বা শ্রীলংঙ্কার, কিংবা অন্য কোন দেশের নারীর কাছে ছুটে গেছি।
বয়স্ক নারীরা কৌতুহলি হয়ে জানতে চেয়েছেন, তুমি কী কিছু বলবে?
আমার বয়সি মেয়েরা প্রশ্ন চোখে জানতে চেয়েছে, আমাকে কিছু কি বলবেন?
আমি কপালের ঘাম মুছতে মুছতে হাসি মুখে বলেছি, 'না না তেমন কিছু না।
ম্যানহাটনের রাস্তায় যখন শাড়ি পরা কাউকে হেঁটে যেতে দেখি, তখন যেন মনে হয় হেঁটে চলেছে আমার প্রাণের স্বদেশ।
কেউ কেউ ভ্রু কুঁচকে আমাকে পাগল ভেবে কিছু না বলে চলে গেছে। আবার কেউ কেউ হাসি মুখে বলেছেন, আশ্চর্য মানুষ তো আপনি!
আজ থেকে সাতাশ বছর পূর্বে, প্রবাসী এক যুবকের এই ছিল প্রাণের আরাধনা। আপনারা যাঁরা দীর্ঘদিন প্রবাসে আছেন, তাঁরা বিষয়টি সহজেই অনুধাবন করতে পারবেন। দেশের মানুষের জন্যে, প্রিয় মাটির সোঁদা গন্ধের জন্যে, আমার মন তখন ভীষণ উৎগ্রীব। একটু বাংলা কথা শোনার জন্য, একটু বাংলা সংগীতের জন্য ছুটে বেড়িয়েছি কত!প্রবাসে না এলে বাংলা ভাষাকে, এভাবে হয়তো ভালোবাসার সুযোগ হত না।
দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, প্রিয় আত্রাই নদীর জন্য, সব সময় মনটা ব্যাকুল থাকতো। মনটা ছটফট করতো দেশের জন্য। তাই সর্বক্ষণ দেশীয় সংস্কৃতিতে ডুবে থাকতো মন।
২
এমনিভাবে শাড়ির উপরে দৃষ্টি আটকে থাকতে থাকতে একদিন আমাদের বিয়ে হলো। বউয়ের চমৎকার শাড়ি পরার স্টাইল আমাকে আটকে রাখতো। আমি মুগ্ধ নয়নে বউয়ের শাড়ি পরা দেখেছি, আর আপ্লুত হয়ে অনেক কবিতা রচনা করেছি।
আমার অনেক বন্ধুপত্নী এবং ভাবীরা বলতেন, আমরাও শাড়ি পরিধান করি কিন্তু তুহিন ভাবীর (আমার বউ) মত শাড়ি পরতে পারি না। তাঁর শাড়ি পরার ভেতরে, কোথায় যেন একটা আলাদা সৌন্দর্য সবসময় লুকিয়ে থাকে।
আমি হাসিমুখে মাথা নেড়ে সম্মতি জানাই ।
বিয়ের পর থেকেই আমি আমার বউয়ের শাড়ি পরার কাছে আটকে আছি! মুগ্ধ নয়নে চেয়ে চেয়ে দেখি, আর বউয়ের ডাকের অপেক্ষায় থাকি। একটু পরে বউয়ের সেই কাঙ্ক্ষিত ডাক আসে। আমি ছুটে কাছে যাই। না-না বউকে আলিঙ্গনের জন্য নয়। কাছে যাই, বউয়ের শাড়ির আঁচলের ভাঁজে সেফটিপিন লাগানোর জন্য। দারুণ ডিউটি তাই না? আমি খুব খুশি মনে সে ডিউটি পালন করতাম।
তবে প্রথম প্রথম হাত কাঁপতো খুব । মনে হতো এই বুঝি, ব্লাউজের নীচে বউয়ের শরীরে সেফটিপিন বিঁধে গেল।
সেজন্যে বউয়ের অনেক বকা-ঝকাও খেয়েছি। বকা খেতে খেতে এখন আমি দক্ষ মাঝি। শক্ত হাতে হাল ধরে, বউয়ের শাড়ির সুবাসিত হাওয়ায় উড়তে পারি, ডুবতে পারি...!
৩
নিউ ইয়র্কের আকাশে এমনি উড়তে উড়তে, ডুবতে ডুবতে চলছিল আমাদের সংসার জীবন। একদিন এক বিয়ে অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য "ওয়ার্ল্ড মেরিনাতে" আমরা। নিউ ইয়র্কে আপনারা যাঁরা থাকেন, তাঁরা এর সৌন্দর্য সম্পর্কে অবহিত আছেন। চমৎকার একটি নান্দনিক পরিবেশে জলাশয় ঘেঁষে, লাগোয়ারডিয়া বিমান বন্দরের অ্যারোপ্লেন ওঠা-নামা দেখতে দেখতে সেখানে গোধূলি নামে এক ভিন্নমাত্রার দৃষ্টিনন্দন আবহ নিয়ে! আজকেও তার ব্যতিক্রম নয়। ফুরফুরে মেজাজে গোধূলির নান্দনিকতা উপলব্ধি করছিলাম। ধীরে ধীরে পরিচিত বন্ধু-সজন আসা শুরু করেছে। এরকম অনুষ্ঠানে এই এক মজা। সবার সাথে এক প্রাঙ্গণে দেখা হয়ে যায়! আজকেও তার ব্যতিক্রম নয়। ব্যস্ত জীবনে অনেকদিন ধরে কারো সঙ্গে দেখাই হয়ে ওঠে না। তাই এরকম অনুষ্ঠান আমাদের জন্য এক মিলনমেলা হয়ে ওঠে। আজো সেই আশায় বউ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে, একটু আগে আগেই বিয়ে অনুষ্ঠানে এসেছি। এসেই ব্ল্যাক কফিতে চুমুক দিতে দিতে, পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মেতেছি। সেই এক জম্পেশ আড্ডা!নিউ ইয়র্ক শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গও ধীরে ধীরে বিয়ে অনুষ্ঠানে আসা শুরু করেছেন। অনেকের সঙ্গেই কুশল বিনিময় হচ্ছে। বর কনে এসেছে। বরের সাথে এসেছে বরের বন্ধুরা। আর কনের সাথে কনের বান্ধবীরা। সবাই স্টেজে বসে হই-চই করছে। ফটোসেশন চলছে। সবার হাসি হাসি মুখ।সবাই সেজেগুজে হাসি তামাশায় মত্ত । এরকম অনুষ্ঠানে আসলে আমার মনটা মুহূর্তেই রঙিন হয়ে ওঠে...!
৪
বিয়ে অনুষ্ঠানে বসে আছি, হঠাৎ খেয়াল হলো পাশের চেয়ারে বউ নেই। ভাবলাম সে হয়তো ওয়াশরুমে গেছে। কিন্তু অপেক্ষা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হওয়ায় আমার উৎকণ্ঠা বাড়তে থাকে। হঠাৎ দেখি বউয়ের সঙ্গে বউয়ের বিদেশিনী বান্ধবী সোনিয়া। কিন্তু এ কী! নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না। সোনিয়া শাড়ি পরেছে! বউয়ের নিখোঁজ হওয়ার কারণটি, এতক্ষণে আমার কাছে পরিষ্কার হলো।
শাড়ির সামনের কুচিটা সামলে নিয়ে ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে সোনিয়া। আমার নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করতে পারছি না। মিটমিট করে হাসছে সে। এদিকে হাসছে আমার বউ! আমি তখন মুহূর্তেই অপলক নয়নে এক ফর্সা বিদেশিনীর শাড়ির রূপ- সৌন্দর্যে অবগাহন করেছিলাম!
সোনিয়া আমার কাছে এসে হাসি মুখে বাঁকা নয়নে জিজ্ঞেস করলো, বলো তো কে বেশি সেক্সি? আমি না তোমার বউ?
সরাসরি এমন প্রশ্নের জন্য মোঠেও প্রস্তুত ছিলাম না।
তাই একটু সময় নিয়ে সোনিয়ার হাত ধরে পাশের চেয়ারে বসতে দিয়ে বললাম, দেখো সোনিয়া, সেক্স তো কারো পোষাকে থাকে না, সেক্স থাকে শরীরে। কাজেই সেটা এই মূহূর্তে আমার পক্ষে বলা বড় মুশকিল। আর তুমি যদি আজকের এই অনুষ্ঠানে শুধু সেক্সি দেখানোর জন্যই শাড়ি পরে থাকো, তাহলে সেটা তোমার ভুল। আমাদের শাড়ির ভেতরে শুধু সেক্স নয়, আরো অনেক কিছু থাকে।
সোনিয়া আমার চোখে চোখ রেখে বলল, যেমন?
আমি হাসতে হাসতে বললাম, দেখো সোনিয়া, শাড়ি যেমন আমাদের সংস্কৃতিকে বহন করে, তেমনি শাড়ি আমাদের নির্ভরতার পোষাক। শাড়ি নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিত্বের পোষাক এবং ভিন্ন রুচিতে আত্মবিশ্বাসীদের পোষাক।
সোনিয়া আমার মুখের দিকে চেয়ে বলল, কী রকম? আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না, আমাকে আর একটু খুলে বলবে প্লিজ।
পাশের টেবিলে গল্পেরত আমার এক পরিচিত খালাআম্মাকে দেখিয়ে দিয়ে বললাম, ঐ যে বয়স্ক মহিলার পরণের শাড়িটা দেখেছো?
সোনিয়া মাথা নেড়ে বলল, হ্যাঁ, দারুণ মিষ্টি!
বললাম, আসলেই, তবে মিষ্টি তিনি না যতটা, তার চেয়ে মিষ্টি তাঁর শাড়ির রঙ। তাঁর শাড়ির আঁচল। তোমার শাড়ির আঁচল এবং আমার বউয়ের আঁচলের মধ্যেও কিন্তু বিস্তর ব্যবধান। একটু থেমে অনুষ্ঠানে বর-কনের পাশে বসে থাকা মেয়েদের দিকে আঙুল তুলে বললাম, ঐ যে দেখ মেয়েরা শাড়ি পরেছে। ওদের শাড়িগুলি কিন্তু আমার মেয়ের আঁচল। পার্থক্যটা বুঝতে পেরেছ?
সোনিয়া উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল, সব মেয়েরাই দারুণ সুন্দর! অপূর্ব! দেখেছ বাবু?
আমি মাথা নেড়ে বললাম, অবশ্যই সুন্দর, তবে যে যার অবস্থানে থেকে।
সোনিয়া মুচকি হেসে বলল, সত্যি বাবু, আমি কখনো এভাবে ভাবিনি। আজকে তুমি আমাকে আর একটা নতুন ধারণা দিলে।
আমার কথা শেষ হয়েছে একটু আগে। সোনিয়া তখনো আমার মুখের দিকে চেয়ে আছে দেখে আমি হেসে বললাম, তবে শাড়ি অত্যন্ত ধারালো পোশাক জানো সোনিয়া?
সোনিয়া চোখ বড় করে বলল, সে আবার কী রকম?
হেসে বললাম, তোমরা তোমাদের পার্টিতে কি পোষাক পরবে তা নিয়ে ভীষণ ভাবনায় থাক তাই না? কোনটি মানাবে, আর কোনটি নয়, এ নিয়ে বড় হিমশিম খাও তোমরা।
সোনিয়া মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানালো।
আমি তখন বললাম, কিন্তু শাড়ি এমনি একটি পোষাক, যেটা তুমি পৃথিবীর যে কোন অনুষ্ঠানে চোখ বন্ধ করে নির্দ্বিধায় পরতে পারো।
সোনিয়া বাঁকা চোখে হাসতে হাসতে বলল, চোখ বন্ধ করে কেন বাবু?
আমিও হাসতে হাসতে বললাম, কারণ ছেলেরা যেন চোখ খোলা রেখে, এক দৌড়ে শাড়িপরা মেয়েটির কাছে গিয়ে হাত ধরতে পারে।
তুমিও দৌড়াও নাকি বাবু? তির্যকদৃষ্টিতে সোনিয়ার প্রশ্ন।
আমিও সেভাবেই উত্তরে বললাম, অবশ্যই দৌড়াই এবং আমৃত্যু দৌড়াব সোনিয়া....
আমাদেরকে হাসিতে ফেটে পড়তে দেখে বউ কাছে এসে বললো, আজকের সব সময়টুকু তুমি তো আমার বান্ধবীকে দিলে, আমার জন্যে ছিটেফোঁটা কিছু রেখো গো।
আমিও হাসতে হাসতে বললাম, তোমার জন্য তো সারাটা জীবন গচ্ছিত রেখেছি জান...
যাও, তোমার আর মিঠা কথায় চিড়া ভিজাতে হবে না- বলে বউ সোজা বর-কনের স্টেজের দিকে চলে গেল। আমি মনে মনে বললাম, বউ কিন্তু আজ রিয়েলি ফায়ার!
বউয়ের টিপ্পনিকাটার জবাব না দিয়ে সোনিয়াকে বললাম, শাড়িতে কিন্তু তোমাকে দারুণ মানিয়েছে। তুমি বিদেশিনী মেম, কিন্তু তোমাকে একদম বোঝাই যাচ্ছে না।
সোনিয়া হাসি মুখে বলল, তাই নাকি? আমি তো আমার বিয়েতে শাড়ি পরবো মনস্থির করেছি। সেজন্যেই আমি তোমার বউয়ের কাছে শাড়ি পরা শিখছি।
আমি বললাম, কিন্তু তোমার স্বামী যদি সেটা পছন্দ না করে?
কেন করবে না? বলে সে চেয়ার থেকে ওঠে গিয়ে পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা এরিখ (ওর বয়ফ্রেন্ড)-কে হাত ধরে হিড়হিড় করে টেনে এনে বলল, এরিখ মাই ডার্লিং সত্যি করে বলো, আমি দেখতে কেমন? সেক্সি? তোমার পছন্দ হয়েছে এ ড্রেস? আমাদের বিয়েতে আমি শাড়ি পরতে চাই মাই লাভ।
এরিখ হাসি মুখে হল ভর্তি মানুষের ভেতরেই সোনিয়াকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলো। ওদের কালচারে এটাই স্বাভাবিক।
এমনি হাজারো কথা, আর হাসি-তামাসায় কাটলো সময়। রাতের খাবার শেষে বর-কনের সাথে সোনিয়া ও এরিখ জড়াজড়ি করে ধরে নাচে অংশ নিল। ওদের চমৎকার দৃষ্টিনন্দন নৃত্যে মুগ্ধ হলো সকলে। গভীর রাত পর্যন্ত চললো সেই আনন্দ উৎসব।
৫
এবারে ঘরে ফেরার পালা। একে একে বর-কনের পরিবারের সাথে সবাই বিদায় নিচ্ছে।
সোনিয়া ও এরিখের কাছে আমি শুভ রাত্রি জানাতে গেলে, সোনিয়া আবারও বাচ্চাদের মতো বায়না ধরে বলে, প্লিজ, বলো না বাবু, আমাকে সত্যি সেক্সি দেখাচ্ছে কি না?
আমি হাসতে হাসতে বললাম, দেখাচ্ছে মানে, আজকে তোমাদের বাসায় কিন্তু ভূমিকম্প হবে!
সোনিয়া চমকে ওঠে বলে, বলো কী! ভূমিকম্প! সে আবার কেন?
আমি এরিখের দিকে চেয়ে বললাম, তুমি জানো না কিন্তু এরিখ নিশ্চয় জানে...
দুষ্টুমিপূর্ণ হাসি হাসতে হাসতে গাড়ি স্টার্ট করলো এরিখ। যতদূর দৃষ্টি যায় আমি ওদের গাড়ির পেছনের লাল বাতির দিকে তাকিয়ে রইলাম। মনে হলো সোনিয়াকে আর একটা ফোন করা দরকার। তাই মুঠোফোনটা পকেট থেকে বের করে সোনিয়াকে ফোন করলাম।
সোনিয়া একটু অবাক হয়ে বলল, হ্যালো বাবু, কী ব্যাপার? ফোন করেছ কেন?
আমি গম্ভীর হয়ে বললাম, শোনো সোনিয়া, আজ রাতে যদি সত্যি সত্যি তোমাদের বাসায় ভূমিকম্প হয়, তাহলে প্লিজ আমাকে একটা ফোন করো কেমন? আমি জেগে থাকবো..বলেই হো হো করে হেসে উঠলাম।
ফোনের ওপার থেকে সোনিয়াও হাসতে হাসতে বলল, তুমি খুব দুষ্টু আছো বাবু।
এমন সময়ে বউ খুব কাছে এসে আমার হাত ধরে বলল, অনেক রাত হল, ঘরে ফিরি চলো।
বউয়ের শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে লুকানো সুগন্ধির সুবাস নিতে নিতে, আমি যখন গাড়ি স্টার্ট করলাম, তখন নিউ ইয়র্কের অন্তরিক্ষে কৃষ্ণপক্ষের চাঁদের ভেতরে, সোনিয়ার শাড়ির আঁচল হাওয়ায় দুলছে অবিরাম...!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks