নাসির ওয়াদেন এর কবিতাগুচ্ছ
হরিণেরা
ফেলে আসা মৃত মৃগয়াভূমি হতে
পাথরে পাথরে জন্মানো ঘাস দেখি,
রোয়াকে থাকা আভিজাত্য অহংকার ঝাড়ে,
খুঁটে খুঁটে খায় অলীক কৌতূহল।
বারান্দার রোদে জন্ম কালের আকাঙ্ক্ষার
আলো রঙের বাতাসে নাচে কাশের দোদুল।
বাসি মাংস খাওয়া হয় না কতকাল
মৃগয়ার কচি কচি রক্তমাংসের স্বাদ,
এখনো দাম্পত্য কলহেই কাটে দিনরাত।
কার কাছে যাব? কার হাতে জবা?
হরিণেরা রমণী নয় কেন? হয় না বিধবা
সিঁথিতে সিঁদুর নেই, তবুও সে সধবা।
শস্য পুরাণ
গা গতরে ফুলে ফলে ভরে উঠে মাঠ
অনাবৃষ্টি হলে বাঁধ দিই প্রকৃতির বুকে
প্রচুর বৃষ্টি হলে খাল কেটে খুলি কপাট
এতে আনন্দ আছে,এতেই পড়েছি অসুখে।
কিলবিল করে শস্য,কোলাহল কৃতি
দানাশস্য মাথা তুলে করে প্রতিবাদ
গুচ্ছ গুচ্ছ ফল-পাতার কিরীটি
সুখ আনে, সমৃদ্ধি আনে, চলে বাদানুবাদ।
ভালোবাসা চিরকাল মাথা তোলে, আবহমান
শস্যের দাপটে বলিয়ান,যত মূর্খ,নির্বোধ
ভালোবাসা নিয়ে লড়াই বেঁধেছে, গানের গান
সুর তোলে শস্য ডাকে, গড়ো প্রতিরোধ।
স্থবিরতা
মৃত মানুষেরা গতজন্মে করেছিল পাপ
এ জন্মে শুধুই গাছ হয়ে জ্বলে
সবুজ হাড়ের ভেতর কংক্রিটের ছায়া
ইচ্ছাগুলো খুঁটে খুঁটে খায় মানুষ
লোভী খিদেগুলো মরুময়, শুধু মায়া।
ভালোবেসে গাছ নদী হলে, যাই কাছে
গহনে অবগাহনে বিশুদ্ধ মনের শান্তিরা
আগুনে আগুনে পোড়ে বে-পাড়া
পড়শির ঘরে জ্বলে প্রেমের আগুন
সবকিছু মৃত, কে দেয় কাকে সাড়া।
পথে-বিপথ ধরে যন্ত্রণাগুলো যায় হেঁটে
বেঁচে আছি, দুঃখে আছি,সব যাবে কেটে।
রমণী
রমণীকে পাশে নিয়ে ঘুমায় রাত্রির
রতনে রতন চেনে, কচু চেনে কে ?
আহ্লাদে আহ্লাদে কাটে দুর্মর তিমির
পথের ধুলোয় বিষ কে চেনে কাহাকে।
আস্থাগুলো দিন দিন ছিন্ন হতে হতে
প্রেমগুলো গিলে খাচ্ছে ধর্ষণের স্বাদ
অভিমান মনোরথে বেড়াতে বেড়াতে
নির্লজ্জ আত্মীয়তা ঘটায় বিবাদ।
বুক ছুঁয়ে ছুঁয়ে হিমালয় হয়ে উঠি, খুঁজি
যেটুকু বাকি আছে,পাঠ করে নিখুঁত ঠিকুজি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন