গুচ্ছকবিতা
সু শা ন্ত হা ল দা র
সু শা ন্ত হা ল দা র
তোমাকেই বলছি
তোমাকেই বলছি
কুণ্ঠিত গগনে কেন যে রেখেছিলে জোছনা ভাবিত রাত?
দেখো, নীলবর্ণা আকাশ
সঙ্গম অনলে পুড়ে যাচ্ছে এখন দাবানল বাতাস
কথা ত ছিল
দুর্যোধন চত্বরে লিখে যাব 'কৃত্তিবাস' ইতিহাস
কে শোনে কার কথা?
বোদলেয়ার ভোলা দিনে লিখা হলো অ্যালবিনাস আর ব্রুটাস
তোমাকেই বলছি
লাল-বৃত্ত ধারে কেন যে সবুজ রেখেছিলে বাহান্ন মনে করে?
এখন দেখো
নজরুল সহাবস্থানে সুকান্ত আর আসে না দাবানল মিছিলে!
অভিলাষ
দীর্ঘশ্বাস গভীর হলে
বেদনারা ঝনঝন করে উঠে বুকে,
কাকে যে কি বলি আর কে-ইবা শুনে?
'পাথরে ফুটিলে ফুল অঘ্রাণিতই থাকে কলি'
এরকম বিল্লপত্রে দেখেছি
শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে গ্যাছে জল না ভেজা পদ্ম-দল
যে অভিলাষ বুকে নিয়ে ঘুরেছি পৃথিবী
তারই গর্ভস্থ বুকে এখন দেখি পুজিত পুষ্পের আফোটা যোনি,
কি করে বলি
শত পদ্মে ঘিরে আছে আমার-ই বঙ্কিম পৃথিবী?
ভষ্ম প্রলয়
শরতের মেঘ ঝরেছে অভিমানে
কনককান্তি সূর্য্য বলেছিল, আগুন ধর্ম নিয়মে
পুড়েছে বুক আলোহীন চন্দ্র কিরণে
যে জীবন গড়েছে 'ফানুস' দেয়ালে দেয়ালে
সে-ও পোড়ে রতি ধূপ গন্ধ বিলায়ে
আমি কি পুড়েছি অনলদগ্ধ কুসুম ফাগুনে?
ওগো প্রেম!
ওগো জবা কুসুম সন্ধ্যা মালতী
জ্বলেছে আগুন প্রলয় গীতিতে আষাঢ়ে মেঘ শ্রাবণ প্রীতিতে
আমি কি জ্বলেছি খাঁখাঁ চৈত্রে দগ্ধ শ্রাবণ অগ্নিতে?
এখানে জ্বলে যাওয়া আগুন নিভে যায় বিকেলে,
সমাধিস্থ যারা আজও জ্বলছে মিনারে
তাঁদের জন্য রেখে গেলাম.....
আমার এই ভষ্ম প্রলয় পলাশডাঙার বাধন ছেঁড়া মিছিলে!
গল্প বরফের ছুরি পড়ুন এখানে
প্রবন্ধ,উত্তরাধুনিক কাব্যধারার যাত্রাঃ মতিন বৈরাগী-এখানে
প্রবন্ধঃ রাজনীতি ও সাহিত্য পারস্পরিক সম্পর্ক পড়ুন এখানে
কবি মজিদ মাহমুদের গুচ্ছকবিতা পড়ুন এখানে
প্রবন্ধ,নজরুলের রহস্য,পড়ুন এখানে
জননী আমার সংক্ষুব্ধ পতাকাতলে
এই যে প্রীতিসম্ভাষণ
বিরহ বিষাদ
যন্ত্রণাময় শোক সন্তাপ
দুঃখ নিনাদ
কার কাছে রেখে যাব
কার্তিক ঘেরা দেশে হেমন্ত বিস্তৃত জননী নিগৃহ যেখানে?
ফিরেছে যারা ঘরে
রক্তাক্ত সবাই সদলে
ক্ষতগুলো সব চৌচির
চৈত্র আঁকা বসন্ত ফাটলে,
কাকে যে কি বলি এই ঘোর লাগা অঘোর বিকেলে
জানি না বলেই কি জননী আমার সংক্ষুব্ধ পতাকাতলে?
এখানে প্রেম
লিখেছে ইতিহাস
পলাশ শিমুল রক্তজবার আখরে,
সে কথা যদি ভুলে যাই জননী দুর্দিনে
পঙ্কিলতায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত হবো পিতৃপুরুষ অভিশাপে!
ইমদাদুল হক মিলনের নুরজাহান উপন্যাস নিয়ে প্রবন্ধঃ পড়ুন
চানক্য বাড়ৈ এর কবিতা পড়ুন এই লিংক এ
বিনয় মজুদারকে উৎসর্গিত পিয়াস মজিদের কবিতা পড়ুন এখানে
poem by p.francis click here
অতটা বিচক্ষণ নই যে
ইশারা ইঙ্গিতেই বুঝে নেব
অনুরক্ত ঠোঁটে বিবাহ বিচ্ছেদ ভর করেছে,
এই যে পাহাড়ি মেঘ
কতটা ক্ষুব্ধ আষাঢ় যাপনে(?)
তা যদি জানতাম ঋতুবতী বসন্ত'র পূর্বরাগ শিৎকারে
তবে কি আর অনুর্বর মাঠে গিয়ে
খনন কসরতে ঘাম ঝরাতাম প্রস্তরিত লাঙ্গল কোদালে?
এতটাই বেকুব আমি
বাতাসের শনশন শব্দ শুনেই
আলিঙ্গনে ব্যস্ত হলাম ধানকাটা হেমন্ত যাপনে,
এখন দেখি অলক্ষুণে ঝড় এসেছে চৈত্র ক্রুদ্ধ হুঙ্কারে
যা হবার তাই হলো
গোলপাতার ছাউনি সমেত উড়ে গেল চাতাল দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে!
জপ তপ শুধু জননী জন্মভূমি
ঘুম থেকে উঠেই যদি দেখি
পথে পথে হলুদ সরষের ঘুড়ি টানা চৈত্র মিছিল
নদী সব পিঙ্গল সাদা
বৃক্ষের অবযবে চেয়ে আছে আমারই শোক সন্তপ্ত পোড়া ভিটার মাটি
যদি এমন হয়
পৃথিবীর সব কাকতাড়ুয়া বিদ্রোহে গিলেছে প্লেগ ভর্তি ভাটিকান সিটি
যদি প্রেমিক ছোঁয়া যুবতী বলে উঠে
'সব ম্লান, যদিওবা করেছে বাঁশি আগুন পোড়া আহুতি'
সব যদি পুড়ে যায় দৈন্য হবো একাকী?
এমনই দিন
সব ভুলে এখন জপ তপ শুধু জননী জন্মভূমি!
তবুও এসেছি মৃত্যুর পাদদেশে
তোমাকে তো বলা হয় নাই
শীত আসার আগেই
পিঁপড়ের দল ধর্মঘট ডেকেছে এখানে
যে পাখি বাড়ি ফিরছিল ভেজা পালক ঝাপটিয়ে
তারও পথ রুদ্ধ হলো দিনের শেষ তীরন্দাজ ব্লকেডে
আমাদের দিন কাটে ভয় ডরে, ফোঁসফোঁস শঙ্কাতে
মৃত্যুর পাদদেশ বলে
যে সন্ত্রাস জেঁকে বসেছে ভাগাড়ে
তারই রহস্যভেদ অনুসন্ধানে নেমে এসেছি ঘুটঘুটে অন্ধকার কবরে
তোমাকে তো বলা হয় নাই
রাবণ ফ্যাসাদে যুদ্ধ এখন নেপালে
'সুমিত্রা' বলে এতদিন বেসেছিলাম ভালো যারে
সে-ও দেখি 'হালুম' বলে ব্যাঘ্র চিৎকারে,
বড় লজ্জার এই 'প্রেম' সুনিপুণ বিরহকালে
তবুও এসেছি এই মৃত্যুর পাদদেশে
যদি কিন্নর স্বরে কেউ ভালোবেসে কাছে ডাকে!
সবাই বিপ্লবী হবে না
সবাই বিপ্লবী হবে না
কেউ কেউ গীর্জার পথেও হেঁটে যাবে সোজা,
মিছিল উড়িয়ে ভাঙা সাঁকোয় ধুলো এনেছিল যারা
পাঁজরার আগুনে সবাই পুড়ে গেছে তাঁরা
এখন ধূধূ মাঠ, মহাশূন্যতা
মরণ বিলের পাশেই পড়ে আছে কাতরতাশূন্য চিল শকুনের ডানা
এই যে প্রেমশূন্য বেঁচে থাকা, ভালোবাসাহীন কবিতা
একেই যদি জীবন বলে তাহলে মনে রেখ 'সবিতা'
রক্তেভেজা তলোয়ারেও একদিন নেমে আসবে মরিচা,
কি করে বলি
এখনও অশ্বখুর কাঁপিয়ে যুদ্ধের ময়দান প্রকম্পিত করে আরঙ্গজেবের ঘোড়া?
সবাই বিপ্লবী হবে না
কেউ কেউ ভাবলেশহীন চোখে চেয়ে দেখবে রামধনু রঙে আঁকা অস্তগামী সূর্য্য-ডোবা
আবার কেউ
অন্ধকার হাতড়ে খুঁজে নেবে নতুন দিনের প্রত্যাশা,
তবুও যদি সাইরেন বাজিয়ে ঘোষিত হয় ডমরু দামামা
কেউ কেউ মন্ত্রমুগ্ধ শ্লোক উচ্চারিতে ভুলে যাবে অকালবোধনে দেবী বন্দনা
এই যে নির্মাল্য রবি নজরুল আকুলতা
পোড় খাওয়া জীবন তবুও আশা করে ভালোবাসা,
কি করে বলি
পাঁজর পোড়া আগুনে জ্বলবে না আর কবিতার মতো সুকান্ত সবিতা?
ডেফোডিল সমাধি
স্বভাবে ক্ষত্রিয় হলেও অনার্য ভিক্ষুক আমি
রক্তচন্দন চাইতে আসিনি
এসেছি চাঁদ ধোয়া জলে ভরে উঠুক নীলক্ষা নদী
ফলিত বীজ যেন জননী তুষ্টিতে ভরে উঠে কৃষকের মাটি
আত্মবিহনে আমিও যেন বৃক্ষধ্যানে হরিতকী মিষ্টতায় অশ্বত্থ হতে পারি
তেমন কিছু চাইতে আসিনি
যদি প্রেম দাও
ভুলে যাব বল্কলে খোদাই করা কুড়াল কাহিনী
ব্যথা জর্জরিত মনে সুখাসনে বিরাজমান হবে সূর্য্যমুখী হাসি,
ক্ষত্রিয় হলেও ভুলে যাইনি
নিরস্ত্র প্রেমে গোলাপ বুকে ডেফোডিল সমাধি!
তোমাকেই বলছি
তোমাকেই বলছি
কুণ্ঠিত গগনে কেন যে রেখেছিলে জোছনা ভাবিত রাত?
দেখো, নীলবর্ণা আকাশ
সঙ্গম অনলে পুড়ে যাচ্ছে এখন দাবানল বাতাস
কথা ত ছিল
দুর্যোধন চত্বরে লিখে যাব 'কৃত্তিবাস' ইতিহাস
কে শোনে কার কথা?
বোদলেয়ার ভোলা দিনে লিখা হলো অ্যালবিনাস আর ব্রুটাস
তোমাকেই বলছি
লাল-বৃত্ত ধারে কেন যে সবুজ রেখেছিলে বাহান্ন মনে করে?
এখন দেখো
নজরুল সহাবস্থানে সুকান্ত আর আসে না দাবানল মিছিলে!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks