গুচ্ছকবিতা
সোহরাব হোসেন
সোহরাব হোসেন
শিউলিফোঁটা সকাল
এই ভাদ্রে সোনালী রোদে পাকছে কতই তাল,
প্রেমিকের ডাকে প্রেয়সী হাঁটে শিউলিফোঁটা সকাল।
কাশবনে শারদ কুমারী ভালবাসার রঙ ছড়ায়,
কিশোর মনে যুগলপ্রেমের স্রোত বয় শারদ পূর্ণিমায়।
হতাশায় যমুনার চর
ঐ যে দেখছেন যমুনার বুকে বিশাল চর,
আমি ঐ চর বলছি - মনে বড় দুঃখ হতাশা নিয়ে,
এ বর্ষায় প্রবল আশা উচ্ছলতায় উদগ্রীব ছিলাম
ভরা বন্যায় ভেসে যাবে আমার বুক আর
উন্মাদ যৌবন জোয়ারে ঠান্ডায় হবে জবুথবু -
কিন্তু না তা আর হলো না ; কিঞ্চিৎ বৃষ্টিতে কি
মিটবে এ যৌবন পিপাসা ?
যদিও বর্ষা হলো তবে হতাশা আমার রয়েই গেল !
আজও আমি আশায় আছি ভরা বর্ষার
অথচ শরৎ সমারোহে ফুটেছে কাশফুল !
আর কি হবে তেমন বর্ষা, ভাসাবে আমার বুক !
জীবন সংসার
স্বাভাবিক মনুষ্যত্বের প্রতিটি ধাপেই হও দন্ডায়মান,
মানবিক আচরণে দৃশ্যমান রুপে হও প্রতিভাববান।
অসামাজিক সমালোচক যতটাই হোক আলোচিত, তবে,
অবাধ্য সঙ্গ, অবাধ্য চেতনা, সততই হয় বর্বরোচিত।
তুমি ক্লান্ত, তুমি পরিশ্রান্ত, সুতরাং নুয়ে যেওনা তুমি ;
অন্ধকারের সমস্ত পথ মাড়িয়ে আজি হও অগ্রগামী।
অগ্রসর পানে বাঁধা যতই হোক শক্তিশালী -
মনে রেখো, ওটা অন্ধকারে নিমজ্জিত হতাশার কালি।
অতএব উঠে দাঁড়াও নতুন করে, দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে,
দেখবে তোমার দিকে আলোকবর্তিকা আসছে ধেয়ে।
কম বলো, কম খাও, কমেই আছে তৃপ্তি,
বেশি বলে হবেনা তুষ্ট তাতে নেই সুদৃষ্টি।
কখনো একাকীত্ব কখনো প্রতারনা ও অবৈধ অর্থে লোভ,
এসব তোমায় পিছু টানছে আর বাড়ছে অযথা ক্রোধ !
ধৈর্য্য ধরো ধীর স্থির হও, তাতেই লুকিয়ে আছে শান্তি,
অহেতুক ক্ষমতা ও হিংসা জীবন সংসারে আনে অশান্তি।
শ্রাবনের সকাল বিকাল বৃষ্টি
বৃষ্টি যেন অঝোর ধারায়, কখনো টিপটিপ,
কখনো বাঁধাহীন ঝারছে তো ঝরছেই,
থামার নেই কোনো অবকাশ !
বাহিরে কদম ডালে শালিক দুটো ভিজছে,
ভিজছে কিশোর কিশোরীর উচ্ছলিত মন,
হোক না বৃষ্টি পত্রপল্লবে মাঠঘাট সারাক্ষণ।
ভিজে ঘাস তৃণলতার টইটম্বুর স্নান,
ভিজে মজবুত বেশ উর্বর ভুমির প্রাণ।
অথচ শালিকের বাসা বুননের হয়নি সময়,
খাদ্য আহরণে ব্যস্ত শ্রাবনের সকাল বিকাল -
কিন্তু বাবুই পাখি, নিজ বাসায় শুধুই বলছে ;
নিরব নিদ্রায় রই ,আরো খানিকটা বৃষ্টি হোক !
বৃক্ষরাজিরা দুলছে নড়ছে মৃদু হালকা বাতাসে,
নয়তো এ মেঘ উড়ে যাবে অন্য কোন আকাশে।
ক্লান্তিতে শিল্পী হৃদয়
বলবো বলবো করে কেটে গেল কতটা দিন, মাস।
অযথা চিন্তার ভীড়ে সুতরাং না বলাটাই এখন উত্তম ;
কারণ বলার ধৈর্য্যটা যদিও আমার মস্তিষ্কে আর নেই।
অতঃপর আজও আফসোসে পিছনে ঘুরে হাঁটি ;
অতীত শব্দরা যেন কেবল'ই একবুক স্মৃতিতে ভরা !
ভাবতে ভাবতেই বেল গড়িয়ে খাঁড়া দুপুর খা খা রৌদ্র,
নিমিষেই বিস্তার দক্ষিণা বাতাসে পুবালি মেঘের তেজ,
সহসা মস্তিষ্ক জুড়ে নেমে এলো ঝিরিঝিরি বৃষ্টির শব্দ।
হঠাৎ করেই শব্দরা তাল ছন্দ হারিয়ে পতনেই নিশ্চুপ !
সুরে জেগেছে বেসুরে টান ক্লান্তিতে বিষন্ন শিল্পী হৃদয় ।
অবশেষে বলার মতো সময় ধৈর্য্য হারিয়ে নিরাকার !
--
| |||||||||||||||
| |||||||||||||||
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks