আযাদ কামালের ১০টি কবিতা।। 10 poems by azad kamal

আযাদ কামাল।। কবি



আযাদ কামালের ১০টি কবিতা

মুসাফির

আমি মুসাফির— এই রহস্য-পৃথিবীর!
স্বপ্নবুকে, উন্মুখ চোখে—
কখনো খুঁজি কবিতা...
কখনো কবিতার যৌবনবতী শরীর; 
শব্দের সংলাপে দিবানিশি—
রোদে পোড়ে— বৃষ্টিতে ভিজে
আমি কখনো শ্রমিক, কখনো প্রেমিক
প্রণয়ের মালা গাঁথি দূর-আগামীর।
আমি মুসাফির—
ভোরের অপেক্ষায় থাকি প্রতিদিন
আমারে অপেক্ষায়—
মুখোমুখি দাঁড়ায় শোকের কফিন!

কদমভেজা বৃষ্টিতে 

আষাঢ়-শ্রাবণ;
কদমভেজা বৃষ্টিতে—
মনযমুনায় কিশোর প্রাণের ঢেউ 
চোখের ভেতর চোখ রেখে যে 
তাকায় উদাস মনে...
সত্যি যদি তার মতো কেউ
বাঁশি বাজায় বৃন্দাবনে!
অপার সুখে-
জল-জোছনায় ভিজিয়ে তারে
রাখব এবার অতল গহিন বুকে।

কোথাও কি ফরেনি প্রেম

পরিবর্তন এসেছে আশ্চর্য! 
তবে, বুকের দীর্ঘ ক্ষত কি সেরেছে
নাকি যন্ত্রণার দাগ লেগে আছে
সমূহ বিশ্বাসে...
ব্যাকুল জনতা উন্মুখ চেয়ে আছে
আকাশের দিকে...
তবে, কোথাও কি ফিরেনি প্রেম
নাকি এখনও ভয় গোপন ত্রাসে!
ভালোবাসার চেয়ে বড়ো কিছু নেই
মানুষের চেয়ে মৌল কিছু নেই
প্রতিশোধ নয়— ভালোবাসা, বিস্ময়ে 
তবে, লেখা হোক নতুনের ইতিহাস।

কাব্যপাড়ার প্রেমিক 

বৃক্ষদেবী, শীল হাওয়ায় ছড়িয়ে দেয় 
সবুজ পাতার প্রেম...
প্রিয়ার ডাকে কিশোর ঘুমে স্বপ্ন ওড়ে 
মন-মগজে খেলা করে গন্ধ বকুল ফুল।
আকাশ নীলে পাখির ওড়াউড়ি 
ব্যস্তবাড়ির উঠোনজুড়ে ছায়া পড়ে তারই
দুঃখগুলো ভেসে যায় নদীর জলে
এক জনমের বাসর সাজাই কুসুমপ্রেমে। 
ভালোবাসার খসড়া হাতে—
ফুলের দেশে, পাখির দেশে যাই হারিয়ে 
দিবারাত্রি ঢেউ খেলে যায়
মন-যমুনায়, কাব্যপাড়ার প্রেমিক জানে। 

নয়ন আহমেদ এর কবিতা এখানে 
article of law and literature : click here
লতিফ জোয়ার্দারের কবিতা পড়ুন এখানে
nobel prizev:2025 on litterature here
ইসলাম তৌহীদের কবিতা পড়ুন এখানে
মহসিন খোন্দকারের কবিতা পড়ুন এখানে
গল্প বরফের ছুরি পড়ুন এখানে
প্রবন্ধ,উত্তরাধুনিক কাব্যধারার যাত্রাঃ মতিন বৈরাগী-এখানে


ও পথ আমারও

আমি জানি, আমার এ পথ সহজ নয়;
'দুর্গম গিরি কান্তার মরু'
সব পেরিয়ে তবেই আমার লক্ষ্য জয়!
আমি বৃত্ত ভাঙতে এসেছি 
চির নতুনের আহ্বানে—
তাই কারো কাছে নতজানু নই
আমি মানুষের পক্ষে সদা জেগে রই।
ও পথ আমারও, যে পথে তুমি হাঁটো
কে প্রথম আর কে দ্বিতীয় 
এই অনর্থ বিচারে কিইবা এসে যায়
স্বপ্ন দেখি মহাকালের ঠিকানায়...
এক অপ্রতিরোধ্য অভিযাত্রিক আমি।

এক নৈঃশব্দ যাত্রায়

ব্যস্ত শহরের ভিড় ঠেলে—
এই জনারণ্যে একাকী আমি
অনেকের সাথে খুব একা
আলোআঁধারি পথে এক নৈঃশব্দ যাত্রায়
অলৌকিক স্রোতে ভাসি—
গদ্যে-পদ্যে বহমান জীবন
ঝরা পালকের মতো খসে পড়ে
চেনা মুখের অশরীরী ছায়া 
আঁধারে ঢেকে দেয় স্বপ্নের ক্যানভাস!

মিছিলে মিছিলে অদ্ভুত আঁধার

আমাদের বিশ্বাস ছিল—
এই শহরে বৃষ্টি নামবে 
ভালোবাসবার- কাছে আসবার;
ধুলোবালি ওড়ে যাবে অন্য কোথাও 
সবুজ শ্যামলিমা ছেড়ে—
আমরা নিঃশ্বাস নেবো মুক্ত বাতাসে
 আনন্দে ওড়াব শান্তির পতাকা...
জোনাকিরা যোগ দেবে গণমিছিলে!
কিন্তু না—
মিছিলে মিছিলে যেন অদ্ভুত আঁধার 
পরাস্ত করে দিচ্ছে নাগরিক সভ্যতা!

অঙ্গীকার

প্রেমময় তুমি রৌদ্রস্নানে বৃষ্টি; এক মনোহর পাঠ
প্রগাঢ় চুম্বন তুলিতে আঁকি তোমার রহস্য-শরীর
কখনো জল-জোছনায় মাখামাখি প্রিয় মানচিত্র
কখনো হৃদয় উদ্যানে হেঁটে যায় আনন্দ-রোদ্দুর।
সুন্দরের নামতায় আত্মস্থ করি বেহুলা উদ্যান-
শুন্যে ভেসে বেড়ায় শাশ্বতকালের মেঘবালিকা
বিশ্বাসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমি এবং তুমিও
রক্ত ঝরার ভয়ে অদৃশ্য হতে থাকি হৈচৈ ভেঙে।
রোদ-বিকেলের মুগ্ধতা ছুঁয়ে হেঁটে যাবো বহুদূর
এই হোক আমাদের নবজীবনের দৃঢ় অঙ্গীকার। 

মৃত মানুষের কঙ্কাল!

ধেয়ে আসা ঝড়ো হাওয়া 
দেয়াল উপড়ে দিলো—
ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ল আগুন
পুড়ে ছাই হলো মানুষ
চিৎকার, চেচামেচি কেউ শুনল না
দৌড়ে পালাল টিকটিকি, তেলাপোকা 
বোতল থেকে বেরিয়ে এলো
ফুটন্ত জলের বুদবুদ—
হাঁপাতে হাঁপাতে
মানুষের চোখ উপুড় হয়ে পড়ল
মৃত মানুষের উপর...
ঝরে পড়া দীর্ঘশ্বাসে, জীবনে—
মৃত মানুষের কঙ্কাল ঝুলে আছে যেন! 

তোমার জন্যে

আমার সমস্ত ভালোবাসা 
তোমার জন্যে...
কতকাল ধরে খুব যত্ন করে
রেখেছি বুকের  বা পাশে—
একবার, বারবার স্পর্শ করে দেখো
কী উন্মাদনা ভেতরবাহির ! 
জলের ঢেউ ভেঙে 
আমি সহসাই পৌঁছে যাই 
তোমার চুম্বক উদ্যানে—
মূলত আমার সমস্ত ভালোবাসা 
তোমার জন্যে...
ভালোবাসার নীল গোলাপ
সে-ও তোমার জন্যে
                     শুধু তোমার জন্যে।

Post a Comment

Thanks

নবীনতর পূর্বতন