জন্মদিন স্মরণে কবিতা।। মতিন বৈরাগী।। poems by matin boiragi.kuasha

মতিন বৈরাগী।। কবি।। প্রাবন্ধিক


গুচ্ছকবিতা
মতিন বৈরাগী

গোধুলির নাচ


গোধুলির দিগন্তের কাঁচে আঁকা সূর্যাস্তের শেষ ছায়ার মায়াটুকু,
মুছে যাওয়া কোনো শিল্পীর শেষ রেখাটান
কত রঙের ক্ষণিক খেলা, কত আনন্দ–বেদনা- ঝলক,
কত মায়া, মায়াবী অনুভব।
প্রতিটি রেখার বাঁকে বাঁকে সময় হাঁসফাঁস করে ওঠে,
আরেক ছবি দুর্ভেদ্য, অভেদ্য, কঠিন।
পুরোনো দৃশ্য সরতে সরতে খুলে যায় জটিল বিন্যাস
রূপায়নের ভয় ও বিস্ময়।
কখনও মনে হয়, আলোর মোহন দ্যোতিত বিভা
বিভ্রমের জল ও শিলার ধাঁধা
অন্ধকার ঝাপসা করে ভাবনার রীতিবিন্যাস,
সব দীপ্তি, সব গৌরবগীতি;
মুছে যেতে থাকে রঙে-রাঙানো বর্ষা–বিপ্লব–আনন্দ–রেখার টান।
ঠিক তখনই মিশকালো নরকদানব ঢেলে দেয় কালো-কালিরঙ
আর গ্রাস করে সব শিল্পবোধ, হৃদয়াবেগ,
সীমানা, সীমান্ত, মানুষের বিশ্বাস।
 কেউতো কাছে নেই
তবু কণ্ঠস্বরে চমকে উঠি:
“কিছু কি বুঝতে পারছো?”
শানকির বিত্তবানরা হাসতে হাসতে ক্ষুরে শান দেয়,
নিচুদের বুক চিড়ে বের করে নিতে
ন্যায়ের নকশা।
রাইটারগণ  লিখছেন নতুন সনদ, নতুন আইন,
নতুন শাসন।
হয়তো,
তাদের নিজেরই অজান্তে লিখছে আরেক রক্তদিনের আগাম ইতিহাস
তারপর আরও খানিক পরে স্তব্ধতার ভারে ঢেকে গেলে
সবুজের শালিকের গান
তখনই শুরু হবে ‘ভরতনাট্যম’,
আর সুর হবে বেহুলার বাসররাতের করুণ বিলাপ।

সেই পথ ছিল একা 

যেই পথ দিয়ে তুমি চলে গোছো সেই পথ ছিল একা 
সেই পথে ছিল শীতের ঝরা পাতা বিকেলের 
দুটি পাখি কেঁদেছিলো, ছিল না গোধুলি 
পথ জুড়ে নিঃসঙ্গতা, ছিল হাহাকার 
একটি কাঠবিড়ালি খুঁটে নিলো বিষণ‣আহার 
তুমি চলে গেছো - 
ঘনায়মান অন্ধকারের দিকে; চলে গেছো সন্ধ্যার শীত পেরিয়ে  
হাওয়ায় রেখে বেদনা-আঙুল 
পথ ছিল দাঁড়িয়ে তোমার দু’চোখে জীবন আকুল 
রেখে গেলে হৃদয়ের কান্নাধ্বনি মায়া 
সেই পথ ঝরা পাতার শয্যায় রয়ে গেছে -

মাসুদ মুস্তাফিজের কবিতা পড়ুন এখানে
অমিত চক্রবর্তীর কবিতা পড়ুন এখানে
বড় ও বিখ্যাত কবির কবিতা পড়ুন এখানে
জিয়াবুল ইবন এর কবিতা পড়ুন এখানে
কাজুও ইশিরোগুরের উপন্যাস বিশ্লেষন প্রবন্ধ পড়ুন এখানে
শূন্য ও আকাশের প্রতি পড়ুন এখানে
অনলাইন সাহিত্যের গুরুত্ব পর্যালোচনা পড়ুন এখানে
এমরান হাসানের কবি পড়ুন এখানে
পোয়াতি ধানের কবিতা পড়ুন এখানে
দুরুত্বের অদেখা প্রাচীর পড়ুন এখানে
শারদুল সজল এর কবিতা পড়ুন এখানে
নকিব মুকশি'র কবিতা পড়ুন এখানে
ভাবুক মাস্টারের পাথর পড়ুন এখানে
কবিতার বরপুত্র আসাদ চৌধুরি এখানে পড়ুন
বাস্তুহারা তারার ইশতেহার পড়ুন এখানে
সুশান্ত হালদারের কবিতা পড়ুন এখানে

হয়তো 

হয়তোএকটা ভাবনা ওখানে থেমে থাকে 
একটা বনরেখায় একটা দুপুর 
কিংবা কেয়াপাতায় একটা ফড়িং তিরতির কাঁপে, 
নড়ে যায় প্রাণকথা। 
আড়মোড়া ভাঙে একটা দিন: নিশীথের দিকে। 
চুপিসারে নড়ে জারুল জামরুল। 
হয়তোসেইক্ষণ বলেছিল; এইসব ভালো নয়; 
কোথাকার অচেনা বাতাস উড়িয়ে দেয় মরা পাতা, 
প্রলম্বিত প্রহরের এক হিম রাত্রি 
কথা হয়ে জাগে। 
দরজা খোলা নেই; তবু যেতে হবে। 
স্নিগ্ধ নীলিমার আংরাখা আকাশের। 
সাদা কফিনের ছায়া কণ্ঠ হয়ে ভাসে স্মৃতির মতো 
পথরেখা, খেয়াঘাট অখড়ার ঢোল 
সেই আলো কবে ঝরে গেছে। 
হয়তো-বা এইসব ভাবনা প্রতিদিন কবিতায় 
শব্দ হয়ে আসে।

English article read here
english poem's here read
english article here
poem by timur khan here
article of law and literature : click here
nobel prizev:2025 on litterature here
poem by p.francis click here

প্রতিজ্ঞা বিক্রি হচ্ছে 

ঝুমুর গাছটার পাতা দুলছে - বিষদাক্রান্ত পত্রগুল্ম
পানি লাগবে, পানি
দূর বনে ক্রান্তির আর্তধ্বনি
প্রতারণার খোয়াবনামাই লিখবে ইতিহাস 
লোভ হাসছে গরুহাটের ইজারাদাররাইতো নেতা
গালবেয়ে ঝরছে তার লোভের লালা 
পৌর-রাক্ষসদের ফুসফাস
রাজনীতির কতরকম হাসি; ক্যানেস্তারায় গুন্টাগ্রাস 
কফিনে তার অস্তিত্বহীনতার নখর-আঁচর
দিগন্তে ফুটে আছে রক্তরঙা জুলাইল জবা

বেদনায় ফেটে যাওয়া স্বপ্নরাঙা প্রজাপতির বুক থেকে
রক্তবৃষ্টি:
বৃষ্টি নয়; ও হলো মরা আর  ভবিষ্যত কান্নার সুদাসল
বাতাসে  ইহুদির বারুদ মিসাইল

বিশ্বাস ঘাতকদের গোলটেবিল রক্তের সক্রামিত রক্ত-
উত্তরাধিকারীত্বের জ্যামিতিক সংখ্যাবৃদ্ধি
তামাদির প্রতিশ্রুতি,বীরগণ বিভ্রান্ত আবোল-তাবোল বক্তৃতা
প্রাণ যায় মানুষের
থু রাজনীতি, ধিক তোকে, ধিকততোধিক
বলে সবকতিকীন পাশ ফিরে শোয়
ঘোড়াটা তার বহুকাল সোয়ারহীন জঙ্গলের পাতায়
মিশে আছে হাড়গোড়
হাঁটতে হাঁটতে পরিশ্রান্ত সূর্য প্রতিজ্ঞা
টলটল করছে লোনাপানির ছোপ

মন থেকে মনে কেবল দ্বিধার ওঠা নামা
বুঝিবা রক্তশূন্যতার প্যাথালজি-- চিন্তিত হেমাটোলজিষ্ট
টাইটানরা লাফাচ্ছে ফুটপাতের কুত্তা,
চাঁদা আর দখলের বাংলাদেশ পাচারে পাচারে জীর্ণ
আত্মপরিচয়
মধুর ক্যান্টিনে বীরত্বের সম্মেলন
আমাজানের পিরহানা সাঁতরাচ্ছে

দলবাজিতে উৎসুক কাব্যকোবিদগণ
সত্তা ও অস্তিত্ব সংগ্রাম: নাকি ক্রিমিকীটে ভূরিভোঁজ?
হাহাকারে চৌচির ভাষার জমিনরেখা
মুছে যাচ্ছে দর্শনআকাঙ্খা : আশা থমকে আছে--
দাওয়ায় বসে হুক্কা টানছে ছমির আলী
ছমির আলী জানে না
বেঈমান নিধনে আরও কতটা পথ হাঁটতে হবে
অন্তরসত্তায় ছাইচাপা আগুন
শানকির অভিজাতরা
চুরি পাচার আর মাদকের চারা রুয়ে জলদিচ্ছে
আইনের জন্মদাতা জনতার আব্বাহুজুর
জনতা ঘুমিয়ে আছে, আবার সেই সর্বনাশা ঘুম

ফুরুত ফুরুত হুক্কার শব্দ, 
শব্দ যেন ক্রমেই ভাঙছে শব্দকে

নবীন সেন, আমাদের নবীন কাকু
হঠাৎ সে দেখে মরে পড়ে আছে,
আর কুকুরগুলো হৈ হৈ করছে রাস্তায়

ছমির আলী মরে গেছে।
মাথাটা তার ফুটো হয়ে ঝরছে তরল,
আকাশে ভাঙ্গাচুরা পোঁকে খাওয়া জীর্ণশীর্ণসূর্য
বাংলাদেশ উলঙ্গ হচ্ছে রে 
দৃশ্যে দৃশ্যে চেনামুখগুলো নরকের মতো
দুর্গন্ধ অভিজাত গুলশান বনানী বারিধারা 
এতো দুর্গন্ধ কেন? 
ওরা কি পচে যাওয়া পশুর গোত্র?

সকালের আলো আর নেই, দুপুরের প্রখরতাও না
চুপি চুপি নবীনকাকু বলছে
সাবধান রক্ত চলে যাবে সওদাগরী কারখানায়,
মদ বানাবে আর মৌজ করবে দেশপ্রেম
অদ্ভূত রাজনীতির চ্যাঙরামি,লম্বা হচ্ছে দেশপ্রেম
দ্যাখো দ্যাখো
যে হাত একদিন আকাশ ছুঁইতে চেয়েছিল,
সেই হাতই বিক্রি করছে প্রতিজ্ঞা।
ব্রুটাস ব্রুটাস 
টাইরেসিউস চিৎকার করছে রাস্তায়-- খুন হবে
রক্তাক্ত হবে নদীস্রোত
পাখিরা উড়ছে ডানা ঝাপটিয়ে
ভাষাই যেন নির্মাণ করছে  
স্বাধীনতা গণতন্ত্র আর সাম্য সংগ্রামের কুরুক্ষেত্র।

পাহাড়টা ভেঙে পড়ার মতো তখনও দুলছিলো


1 মন্তব্যসমূহ

Thanks

  1. ধন্যবাদ সম্পাদক মহোদয়কে। মতিন বৈরাগীর কবিতা পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks

নবীনতর পূর্বতন