রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭

যদি সত্য বলি - আক্তারুজ্জামান লেবু

যদি সত্য বলি

সদ্য আঠারো পেরলো যে বোন

তার নরম স্তন ঢেকে রেখেছে যে সাদা মেঘের থান

তার ওপারে আমার দৃষ্টির স্খলন- যদি সত্য বলি

যদি সত্য বলি- দু চোখে আমার উলঙ্গ উর্বশী

কম্পিত ঠোটের চাপ- উন্মুক্ত উরুর মৃদু তাপ

তারপরে রাত্রি শেষের কাহিনী ধরে নিতে পারো

যদি সত্য বলি- সদ্য স্নাত ভেজা নারী আমার

বিষণ্ণতা বিরোধক রাতের ক্যানভাস- শরীরী সুর

নিশ্চিত শূন্যতার থেকে অধিক মধুময় শিউলি ফুল

যদি সত্য বলি- আমার নিস্তব্ধতা ঘুমন্ত ব্রোথেল/

ক্লান্তিময় নিয়ন্ত্রিত নির্গমন - ছেঁকে তোলা সুবেহ সাদিক

অপরাহ্নের ফেলে আসা সূর্যদয়ের থেকেও হারানো সময়

জানি,  যদি সত্য বলি- এই তুমিই

আমার হাতে ধরিয়ে দেবে ফণা তোলা সাপ

কোন এক আগুনমুখা দুপুরের কোল থেকে

ঘুমন্ত বিকেল...

স্বাক্ষী থাক কবিতা - রুপক চৌধুরী

স্বাক্ষী থাক কবিতা

এ কবিতা স্বাক্ষী হয়ে থাক,

ভূলোক আর গোলকে ক্ষণস্থায়ী

চলাচলের সন্ধিক্ষণে,

পৃথিবীর হিংস্র বুকে যে বসন্ত,

নিঃস্বার্থের একতারা বাজিয়ে

গায় নান্দনিকতার ভৈরবী,

তার অন্তরা বিমুগ্ধ চিত্তে আমিও

শুনেছি ।

তার শিমূল ফুলের প্রশস্ত পাপড়িতে,

বয়ে যাওয়া শিশিরের মন্দাকিনী,

কোন সাম্রাজ্যবাদের কলুষিত নিগড়ে

হয় না পরাহত,

যে গান শুনায় তার চির পোষা

কোকিল কালজয়ী কন্ঠে,

কোন কালোটাকার মোহন্ত করতে

পারে না,

সে সুরের পূঁজিবাদী খরিদ ।

শীতের জড়তা দগ্ধ বৃক্ষ শাখে,

যার আর্বিভাবে কিশলয় হাসে

প্রাঞ্জল চৈতন্যে,

পরমাণুবাদে আসক্ত উত্তপ্ত পৃথিবীতে

সদা,

গেয়ে যায় সজীবের নিঃস্বার্থ

বেহাগ,

সে সুরের ছন্দময় দীপালীতে আমিও

করেছি জ্যোৎস্না স্নান,

স্বর্গীয় কোমলতার ফুলেল স্নিগ্ধ পরশে,

এ কবিতা সাক্ষী হয়ে থাক ।

বিদঘুটে দেয়ালে কষ্টের চিত্রকর্ম- প্রতীক ওমর

বিদঘুটে দেয়ালে কষ্টের চিত্রকর্ম

একদিন তোরে ধমক দিয়ে বলে ছিলাম,
তুই কি আবারো বাঁকা চোখে তাকাবি?
কান ধরে মলা দিবো, এই ভেবে বলে ছিলি
না।

যমুনার দুই ধারে তখন সাদা কাশফুল
পুরোটা শরৎ জুড়ে থাকতো
বালি চরে মাঝে মাঝেই কাশফুলের নরম ছোঁয়ায়
শিহরণ লাগতো প্রাণে,
হারিয়ে যেতাম স্বপ্নের ভূবনে
তুই না তখন চিমটি কেটে দিতিস পিঠে
মনে পড়ে?

ধূলোয় ধূলোয় ধূলিময় হতো শরীর
তারপর স্রোতের সাথে গা ভাসিয়ে আধামরা নদীর
এপার থেকে ওপারে যেতাম
তপ্ত রোদ, তবুও শীতলতায় প্রাণ জুড়িয়ে যেতো।

একদিন ধূলো, কাশফুল, নদীর পানি সব কিছু ছেড়ে
ইট পাথরের শহরে চলে গেলি
আমিও গেলাম তোর উল্টো পথের আরেক শহরে।

কেটে গেল দীর্ঘ সতের বছর যোগাযোগহীন
তোর বাঁকা চোখে তাকানোর দৃশ্যটা এখন
রাত গভীর হলেই কেবল একাকি দেখি
কাশফুল, নদী আর বালুতে হারিয়ে যাই
তোরে ধমক দিতে গিয়ে নিজেই চমকে উঠি
জানালায় দেখি তখন কেবলি সোডিয়াম লাইট
বিদঘুটে দেয়ালে কষ্টের চিত্রকর্ম।

প্রতীক ওমর, সাতমাথা, বগুড়া
০১৭১৭৮৫২৬৮২