মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০১৭

পাঁচটি ছড়া - সৈয়দ শরীফ


 পশুপাখির ডাক

   

গরু ডাকে 'হাম্বা-হাম্বা'

ছাগল ডাকে 'ম্যা'

মোরগ ডাকে 'কুক্কুরুকু'

ভ্যারাও ডাকে 'ভ্যা' !

কোকিল ডাকে 'কুহু-কুহু'

পায়রা 'বাকুম-বাক'

শালিক ডাকে 'কিচিরমিচির'-

'কা-কা' ডাকে  কাক ! 

শেয়াল ডাকে 'হুক্কাহুয়া'

বিড়াল ডাকে 'মিঁউ'

ব্যাঙও ডাকে 'গ্যাঙর-গ্যাঙর'

টুনটুনি 'পিঁউ' 'পিঁউ'

খুকির ঈদ

'ঈদ মোবারক' কলতানে

ঈদের খুশি লাগলো প্রাণে

কী যে,

আজকে খুকি পণ করেছে

রাঁধবে সেমাই নিজে ! 

সেমাই রেঁধে ঘুরতে যাবে

নাগরদোলায় উড়তে যাবে

হি হি,

সঙ্গে যাবে বান্ধবীরাও

টিনা, মীনা, মিহি ! 

ঘোরা শেষে আসবে ফিরে

বান্ধবীরাও তাদের নীড়ে

ছুটবে,

স্বজনদেরও সাথে সবাই

ঈদের মজা লুটবে !

     খোকা গেলো কই?

     

     আজ রেঁধেছি মাংশ ভুনা

     সঙ্গে আছে রুই,

     ডাকছি তোরে, খোকা আমার-

     কই পালালি তুই?

     সেই সকালে বের হয়েছিস

     এখন কোথায়? বল, 

     জানিস খোকা? সকাল থেকে-

     খাইনি কোনো জল ! 

     রাগ করে না লক্ষ্মী আমার

     জলদি বাড়ি ফেরো, 

     নইলে যে মা যাবে চলে

     পাবে না'কো টেরও ! 


 ঘোড়ার ডিমের খোঁজে

                    

আজকে খোকা বের হয়েছে ঘোড়ার ডিমের খোঁজে,

ঘোড়ার তো ডিম পাড়তে মানা, জানতো না তা' ও যে ! 

বের হয়েছে যখন খোকা, আনবে সে ডিম নিয়ে,

ভয় ঠিকই পায়—  আটকে নি যায়, ডিমটা আনতে গিয়ে !

সাহস করে ভাসায় দিলো নদীর মাঝে ভেলা,

পাচ্ছে না তো, যাচ্ছে ঠিকই — খুব দ্রুত'ই বেলা ।

নদীর কূলে দেখলো খোকা- বিরাট গোল এক কী যে, 

সেই দেখাতেই মারলো সে ঝাঁপ, তাই যে গেলো ভিজে !

যাচ্ছে খোকা নদীর তীরে জোরসে সাঁতার কেটে,

হঠাৎ সে হায় পড়লো ঢুকে বিরাট মাছের পেটে !

বের হলো সে নখের ধারে মাছের উদর ছিঁড়ে, 

অবশেষে উঠলো খোকা সেই নদীটার তীরে !

গোল সেগুলো কী হবে? হায়, সেটাই খোকা ভাবছে,

ভেবে-ভেবে ভয়টি পেয়ে থরথরিয়ে কাঁপছে !

একটু কাছে গিয়ে খোকা বলছে 'এটাই ডিমটি'

তাই সে হঠাৎ মারলো জোরে নিজ শরীরে চিমটি !

ধরতে গিয়ে বুঝলো খোকা এটা তো এক পাথর,

ডিম না পেয়ে হলো শেষে হতাশাতেই কাতর ।


ছিলো এখন নেই

ওইখানে এক সাঁকো ছিলো

অনেকরকম ঝাঁকও ছিলো

পাখি এবং হাঁসেদের,

একটি কুঁড়েঘরও ছিলো

আমার বন্ধু রাশেদের । 

ঘরের পাশে পুকুর ছিলো

ছোট্ট একটি কুকুর ছিলো

ওইখানে,

কুকুরটিকে বলতো রাশেদ

'দই খা নে' । 

এখন তো আর কুকুরও নেই

ঘরের পাশে পুকুরও নেই

বিল্ডিংয়ে-

ইয়া বড় দালান হলো 

ঝিল ডিঙে ! 

বন্ধুটি-ও 'সাহেব' হয়ে

মাঝে-মাঝে গায়েব হয়ে

গ্রাম ছাড়ে,

অনেক টাকা বখশিশও দেয়

চামচারে !

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন