বুধবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৮

চারুমিত্র এবং আধ ভেজা প্রাক্তন ভোরের নদী ।। পূর্ব মিজান

















চারুমিত্র এবং আধ ভেজা প্রাক্তন ভোরের নদী 

চারুমিত্র,আপনার চোখ পেরুলেই
চোখে পড়ে বনস্পতি বৃন্দাবন,
রূপসী রমণীদের গোলাপী বারান্দা।
আর ঐ পাশে আপনার ইশকুল বালিকারা
রুমালে তুলে নিচ্ছে সবুজ অরণ্য
এবং এক্কাদোক্কা শৈশবের নদী।
চারু,আপনি রাধা কিংবা রাই হতে চাইলেও
আমি চাই আপনি চারুমিত্রই হোন।
চারুমিত্র,এখন শুনোন
এটা ছিলো অন্য পাড়ার সুভদ্রা আর উত্তরা দিদিদের
স্পর্শকাতর শীতকালীন গল্প।
তখনো তাদের ঠোঁটে ঝুলছিলো গোলাপী হাওয়াই মিঠাই
চক্ চকে ভেজলিনের বিজ্ঞাপন।
আজকাল কেউ কেউতো তাদের বুকে খোঁজে
উষ্ণতা ভরা স্টার জলসার সিরিয়াল।
চারুমিত্র,আপনি নিশ্চয় জানেন
মালতীবালা ইশকুলের গন্ডি শেষ করে
ঐপাড়ার নতুন বৌদিরা শুনে
প্রেমিক পুরুষের সাইকেলে বাজানো
বিরহী রিংটোন।
আর হে চারু,আর কেউ না জানলেও
সুভদ্রাদি জানে
তামাটে আঙুলে গোলাপী আঙুল ঘষেই চালিয়ে যেতে হয়
প্রেমিকের সাথে গোপন প্রণয়।
আচ্ছা চারুমিত্র,ওটা যাই হোক
আর এটা?
এটা হচ্ছে আপনার আঙুলে
কুয়াশা জড়ানো ভারিক্কি গল্পের দিন
আর ঠোঁটে ফাল্গুনের লাল পান্ডুলিপি।
পান্ডুলিপি?!
ওযে পান্ডুলিপি নয়গো....
ওযে ইতিহাস.....
মোঘল,সামন্ত রাণীদের জ্বলজ্বলে ইতিহাস!
এই এমন ইতিহাস যে
বাতাসে দুলে উঠা আপনার শাড়িতে
চর্যাপদ,অজস্র রোদ্দুর আর.....
আর চুলে....?
নরম হাতের ঈশারাই ঢের বেশি টের পাই
উড়ে যাচ্ছে মখমল সীমাহীন অন্ধকার,আরো অন্ধকার......
চারুমিত্র,আপনার কণ্ঠে ভৈরবী গান শুনে
মেদহীন প্রেমে হেলে পড়ছে আমার সমস্ত বোধ।
উনত্রিশ কিংবা তিরিশ নয়
উনিশ থেকে বিশে পা দিয়ে
আপনি আগামী সিলেবাসে দারুণ স্বপ্ন আঁকেন।
শাড়ির ভাজে ভাজে মলাট করা দুপুর,
পেন্সিলে আঁকা হলদে রোদ্দুর।
চারুমিত্র,আপনার বোকা বোকা অমরত্ব পাওয়া চোখ
আমাকে প্রতিনিয়ত খুন করে।
আর বুকে?
অপরিসিম বেনামি ছায়াপথ
বৃক্ষপুরাণ।
চারুমিত্র,আপনি বিশ্বাস করুন
আপনার চোখ পেরিয়ে গেলেই
আবার আমার চোখে পড়ে
আপনার চোখের ভেতর আধ ভেজা প্রাক্তন ভোরের নদী।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন