বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

খেরোখাতাঃ ডিসেম্বর ২০ ।। রহমান হেনরী



















খেরোখাতা: ডিসেম্বর ২০ 


প্রথম পৃষ্ঠা
দরোজা-জানালা, এমনকি, গবাক্ষহীন সেই প্রাসাদের অন্তরে দিগ্বিজয় আপনার। গোটা ভূখণ্ডের আলোকসমগ্র
কক্ষবন্দি করেছেন। একা মানুষ আপনি, কী করবেন এত আলো ও উত্তাপ? আলোলালায়িত গণরাত্রিগুলো
বৃত্তাকার; ক্রমশ কেন্দ্রিভূত হচ্ছে—
ভূখণ্ডময় রাত্রির অজগর আপনাকে বেষ্টন করবার আগেই, অন্তত কিছু আলো, অন্ধকারমূর্চ্ছিত মানুষদের জন্য, অবমুক্ত করুন!


দ্বিতীয় পৃষ্ঠা
ভূতের পেট ফেঁড়ে, দেখছি— সরিষা আর সরিষা!


তৃতীয় পৃষ্ঠা
প্রগতি— কুঁচকানো ত্বক। তার চিপা থেকে, উদাহরণস্বরূপ, বেরিয়ে আসছে: লুডুঘরের সাপ— এগিয়ে যাও, সাপকে এবার সাপের বিষেই রাঁধো! রাক্ষুসে শালিখ্য-সংকেত। ধানগুলো, পুনরায় ক্ষেতেই পালিয়ে যাচ্ছে— এসো, ধানকে এখন ধানের শীষেই বাঁধো!
স্বপ্ন হাতে লাফিয়ে ওঠো: পাহাড়ে, জঙ্গলে, মাঠেমাঠে; তামাদি দুঃখদিনের রোদনই সংগীত— কল্পিত সুর কব্জা করে ঠোঁট ও গলা সাধো!


চতুর্থ পৃষ্ঠা
দ্বিভাজিত অগ্নিশিখার মধ্যে শুয়ে আছি— আর, দূরে, শ্বেতকেশরেণু ঝরে পড়ছে, নির্বিকার— মাঠে মাঠে জমে থাকা তুষার আয়নায় হয়তো তোমারই মুখ, নির্লিপ্ত— একবিংশ নগরীর ধ্রুবসন্ন্যাসিনী, হয়তো তোমরই চোখ জ্বলে, দাউ দাউ— আর আমি আরণ্যক; চকিত প্লাবনে ভেসে যাই।
দ্বিভাজিত অগ্নিশিখার মধ্যে প্রবাহিত লাভা, তোমরই আভায় উদ্বেলিত— অগ্নিপাহাড়ে বসে, দেখে যাচ্ছি:
দূরতম তুষারপাতের দিন— তুমি যার অংশভাক কখনও হবে না;


পঞ্চম পৃষ্ঠা 
ঘটনা এই যে, বিপ্লবীরাই অনেক যোগ্য ছিলো বিপ্লবের চেয়ে; অথচ কিছুই ঘটে নি। পানীয়গুলো উৎকৃষ্ট ছিলো পানশালার তুলনায়; কিন্তু পরিবেশিত পানপাত্রগুলো চুমুকের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে পানসে হয়ে গেছে। যদিও সমগ্র রাত্রির তলদেশ জুড়ে, আমরাই কোরাসে গেয়েছিলাম: 'কাস্তেটা শান দাও বন্ধু'— তবু, উৎসব শেষ হয়েছে দুপুরেই, শ্মশান হয়ে গেছে জমায়েতস্থল, একটা অসমাপ্ত গানের শুরুটা কারা যেন গেয়ে উঠেছিলো; কিন্তু ভেস্তে গেছে আরেকটা শুরুর সম্ভাবনা। এখন অপেক্ষায় আছি; কিংবা ভুলে গেছি:
প্রতিটি আজকের থাকে আরও একটি আগামিকাল

1 টি মন্তব্য: