বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

সম্পাদকীয়ঃ ফেব্রুয়ারি সংখ্যা ।। ২০১৮ইং ।। সংখ্যা ১০।।

সম্পাদকীয়ঃ ফেব্রুয়ারি সংখ্যা ।।  ২০১৮ইং ।। 



ফেব্রুয়ারি মাস মানেই ভাষার মাস। ভাষা আন্দোলনের মাস। মায়ের মুখের শিখানো ভাষাকে স্বাধীন মুখের ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাবার মাস। ভাষার দাবীর জন্য যে ভাষার জন্য প্রাণ দিয়ে হয়েছে, নিরলস আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়েছে সেই ভাষাটাই আমাদের প্রাণের বাংলা ভাষা। যে ভাষার জন্য এদেশে ভাষা সংগ্রামী নামে একটি সমাজ চিন্তাশীল মানুষ গড়ে উঠেছিলো এবং ভাষা সৈনিক নামে এদেশে বহুল পরিচিত ও সমাদৃত সুশীল সমাজ আছে - এটাই আমাদের বাংলা ভাষার গৌরব এবং ঐতিহ্য। এতদভিন্ন পৃথিবীতে অন্য ভাষার জন্য এমন কোন ইতিহাস নেই, নজির নেই। নেই ভাষা শহীদ, নেই ভাষা সৈনিক। নেই রক্তের দাবি। কিন্ত আমাদের বাঙালীর সেটা আছে। রক্তের বদৌলতে জায়েজ করে নেয়া হয়েছে এই ভাষাকে -এটাই বড় আদালত। এটাই বড় রায়। তাই আর কোন হারাবার ভয় নেই। যা হারিয়েছি সেটা ভাষা শহীদদের রক্ত এবং গুটিকয়েক মানব সম্পদ। 

 সশ্রদ্ধভালোবাসা জানাই সেই সমস্ত ভাষা শহীদদের প্রতি, ভাষ সৈনিকদের প্রতি। যাঁদের কল্যাণে আমার মুখের ভাষাকে মায়ের ভাষা বলতে পারছি এবং মানতে পারছি। সালাম বরকত রফিক এদের আত্নার মাগফিরাত কামনা করছি। তাদের শরীর থেকে ঝরে যাওয়া রক্ত বৃথা যায়নি। রক্তের মূল্য  শুধু এই প্রাপ্তিতে মিশিয়ে দিলে তাদের অবমূল্যায়ন করা হবে। বরং এমন স্বীকৃতি দেয়া হোক যে, তাদেরকে বাংলাদেশ যতদিন বেঁচে থাকবে, বাংলা ভাষা যতদিন মানুষের মুখে মুখে ফুটবে ততদিনই আমরা তাদের কাছে ঋণী হয়ে থাকবো। কারন এর মূল্য হয়না। এর অবদান, উপকার গ্রাহ্যতা মাপা যায়না। চির ঋণী হয়ে থাকতেই আমাদের প্রাণের তৃপ্তি যেনো। শোধ হয়ে গেলে যেমন তার টানপেড়েন থাকেনা। তাই আমরা তাদের অবদানের বিষয়টা শোধ দিতে চাইনা - আমরা তাদের নিকট ঋনী হয়ে থাকি - এটাই আমাদের পরিতৃপ্তি। 


ঠিক এই মাসে আয়োজনটাও বরাবরের মতোই রাষ্ট্রীয়ভাবে বেশ জোরেসরে করা হয়ে থাকে। বাংলা একাডেমী কতৃক আয়োজন করা হয় বই মেলা। বই মেলার তাৎপর্য মূলত একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস ঐতিহ্যকে মানুষের মধ্যে জাগ্রত করা। ভাষার অহংকারকে তুলে ধরা, ভাষাকে পাবার জন্য তীতিক্ষার কথা মনে করিয়ে দেবার জন্যই বারবার বৎসর ঘুড়িয়ে ফেব্রুয়ারি আসে, একুশ তারিখ আসে।

বই মেলা এ মাসের গভীর ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। লেখক প্রকাশকদের মেলনমেলায় পরিনত হয়। আশা উদ্দীপনা এবং সৃজনশীলতার আবেগ আরো দ্বিগুন বাড়িয়ে দেয়।  এদেশে একারনেই কবি লেখক তৈরী হচ্ছে আশাব্যঞ্জকহারে। এটা বাঙালী জাতির বড় দায়বদ্ধতার দিক।

এরই সামান্যতম আয়োজন আমাদের "কুয়াশা"।
চলতে চলতে দশম সংখ্যা পার হলো। মানে দশ মাস পেরিয়ে বৎসর পাই পাই এরকম একটা সময় পার হয়ে গেছে। এখানে সকলের অধিকার সমান। সবাই লেখা দিতে পারে। তবে প্রকাশণার ক্ষেত্রে বাচ বিচারের তো কথা থাকেই। সে জন্য কিছু জনের মন খারাপ হতে পারে।  তবে লেখা মানসই হলে অবশ্যই যাবে একসময়।
সকলকে ধন্যবাদ....


দ্বীপ সরকার

সম্পাদক

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন