বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

গল্পঃ সংসার ।। সাইদুর রহমান




সংসার 

আজকাল পাকা সড়কে উঠতে উঠতেই হাঁপিয়ে যাই; যদিও সড়কটি বাড়ি থেকে খুব দূরে নয়। চৈতের দুপুর। অসুস্থ মালতিকে একা রেখেই বেরোতে হবে।  আরও মাইল খানেক সড়ক ধরে যেতে হবে লতিফের চায়ের দোকান পর্যন্ত; ওখানেই শুধু বাসগুলো থামে। মেয়ের বাড়ি বাসে এক ঘন্টার পথ। মেলেন্দ বাজার। বাসষ্ট্যান্ড থেকেও আবার মেঠো পথে ঘন্টা খানেক হাটতে হবে। মেয়েটাও নাকি অসুস্থ; বাচ্চা হবে পাশের বাড়ির কমলা জানালো। কমলা মেলেন্দ বাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আয়ার চাকরি করে। ছুটিতে তার মামার বাড়ি বেড়াতে এসেছে। মালতিকে খবরটা দিতেই আর কি ! শুরু হলো তোলপাড়; আমি এই বুড়ো বয়সে মেয়ের খোঁজ নিতে মালতির আবদার রক্ষা ছাড়া কোন উপায় পেলাম না।

-’ছাতাটি কোথায় রেখেছো, মালতি’ ?

তিন বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে ছুটিতে দেশে আসার সময় মীর বাড়ির নুরু এনেছিল আমার জন্যে। ও আমারই ছাত্র স্কুল বয়সের। মালতি বিছানায় আজ মাস হয়ে গেল পড়ে আছে। তবু মেয়ের বাড়ি যাবো শুনে, দ্যাখি ছাতাটি খুঁজতে শুরু করেছে। পেলো ঘরের কোণে ঘূণে খাওয়া ঢাকনা বিহীন কাঠের বাক্সে। কত ত্যানায় যে পেঁচানো। ছাতাটি খুলে দ্যাখে ইঁদুরে বড় বড় কয়েকটা ছিদ্র করে ফেলেছে। যে রুগ্ন মুখে এতক্ষণ হাসি দেখলাম, তার ফ্যাকাসে মুখে চমকে উঠেছি। চোখগুলোও ভেজা ভেজা।

-’এখন কি হবে গো’। সে হয়ত ভেবেছে, আমি আর যাবো না।

আমার কষ্ট হয় হোক, তবু বল্লাম:- ‘ যাবো যখন বলেছি একবার, রোদ প্রচন্ড আগুনের মতো হলোই বা, যবোই’।
শুকনো মুখে যেন জোর করেই হাসি মেখে আবার বিছানায় ঢলে পড়লো। আমি বালিশটার যে দিকে তুলো আছে সে দিকটা মাথার নিচে দিয়ে দিয়েছি। খুব দুর্বল শরীর। ঠিক মত নাওয়া খাওয়া নেই। আমি বুড়ো ছেলে হয়েও রান্নাবান্না কতটুকুই বা কি করতে পারি। মালতি যখন সুস্থ ছিল, তখন আমার ঝামেলাই ছিল না। আমাকে কখন কি খাওয়াবে তার কত চিন্তা ভাবনা।

-’ওগো শুনছো, তোমার মাথার কাছেই ভাত আর তরকারি যতটুকু রান্না করেছি তাই রাখা আছে; জল ভর্তি গ্লাসটিও। সময় মত যা পার খেয়ে নিও। আমার আসতে যদি দেরি হয়ে যায়’।

বছর খানেক হয়ে গেল, মেয়েটাও আসলো না। আর আমরা বুড়োবুড়ি দু’টি প্রাণীর কি যে অসহনীয় নিঃসঙ্গ জীবন কাটে। পাশেই অবশ্য ফকরুদ্দীন মোড়লের বাড়ি। ওদের সংসারে তো আমাদের মত আর অতো টানাটানি নেই। তাছাড়া আমরা হিন্দু ও গরিব পরিবার। অবসর ভাতা কয় টাকা আর পাই। দিন আনা দিন খাওয়ার মত। পারুল নামে তার একটি মেয়ে আছে। আমার এক সময়ের ছাত্রী এবং আমার মেয়ের বান্ধবীও বটে।

পারুল মেয়েটা খুব ভালো। জাত পাত যেন মানে না। ও মালতিকে রান্নাবান্নাতে, তরিতরকারি কেটে কুটে সাহায্য করতে প্রায়ই আসে। তার বড় ভাই অবশ্য এসব পছন্দ করে না। মালতি অসুস্থ্ হওয়ার পরেও খবরটা অন্তত রাখে। আর সুযোগ পেলেই আমাকে রান্নাবান্নাটা শিখিয়েও দিয়ে যায়। আজ পাঁচ ছয় দিন হলো আসলো না ও। বোধ হয় বড় ভাই শাসন করেছে। অথচ আজকেই ওর যে একটু দরকার অনুভব করলাম। মালতি একা। মাটির কলসি থেকে জল ভরে খাওয়ার শক্তিটুকুও যেন তার নেই। বের হবো দরজায় পা রেখেছি, মালতি মাথাটা তুলে বল্লো:

-’যদি তোমার স্বাস্থ্যে না কুলোয়, যেয়ো না গো’। দেখলাম গাল বেয়ে জল পড়ছে। আমিও কান্না থামাতে পারলাম না। আস্তে করে বাঁশের দরজাটা সরাতে সরাতে বলি: 
-’আসি। খেয়ে নিয়ো কিন্তু’।

পথ চলতে চলতে মোড়ল বাড়ির জাম গাছটির নিচে দাঁড়ালাম। ভাবছি, যদি পারুল মেয়েটার সঙ্গে দেখা হয়ে যেত। ঈশ্বরের কি ইচ্ছে, ঐ জাম গাছ থেকে তাড়াহুড়ো করে লাফিয়ে পড়লো পারুল। মেয়েটা বড় হাসি খুশী চঞ্চল; এখনও যেন কৈশোর ফুরোয় নি। গাছ থেকে নেমে পা ছুঁয়ে প্রণাম করে কাঁচুমাচু হয়ে দাঁড়ালো।

-’কোথায় যাচ্ছেন, স্যার’। কথাটি বলেই এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। আমি তো বুঝতে পেরেছি ব্যাপারটা।
-’যাচ্ছি, মেয়ের বাড়ি’।
-’ও ! উমার কাছে। কি গরম ! আগুনের মত রোদ; ছাতা নেই, স্যার ? একটু দাঁড়ান, একটা ছাতা দিই’।  
-’না না ছাতার দরকার হবে না। একটা কথা শুন, মা। বাড়িতে তোমার কাকিমা একা। সন্ধ্যে বেলায় একটু কুপি বাতিটা জ্বেলে দিয়ে এসো। ওর গায়ে একদম বল নেই, অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তেমন হুশও নেই। নয়ত অন্ধকারেই পড়ে থাকবে’।

-’আপনি ভাববেন না, স্যার। আমি চুপ করে হলেও যাবো’। একটু স্বস্তি পাওয়া গেল যেন। 

ছুটলাম বড় রাস্তার দিকে। মানুষ জন এমন কি একটা পাখি পর্যন্ত রাস্তায় নেই। এইটুকু রাস্তা হেটে দেখি মাথা থেকে ঝর ঝর করে ঘাম ঝরছে। লতিফের দোকানের কাছাকাছি যখন পৌঁছলাম, খোলা বারান্দায় বেঞ্চিতে মাথাটা উস্কো খুস্কো চুলে ভর্তি একটি ছেলে এই গরমেও বিড়ি টেনে টেনে আকাশের দিকে ধোঁয়া ছাড়ছে। পকেটের চশমাটা চোখে দিয়ে লক্ষ্য করে দেখলাম, এতো আমাদের ভরত দাদার ছেলে।

নাম মনে আছে ‘উজ্জ্বল’। কারণ এক সময় ও আমারই ছাত্র ছিল। পঞ্চম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়েছিলো ছেলেটি। তারপরও কয়েকবার ওকে ভরত দাদার সঙ্গে মেলান্দ বাজারে দেখেছি। কি ফুটফুটে চেহারা আর বড় নম্র ভদ্র। ভালো ছাত্রদের কথা শিক্ষকরা কখনও ভুলতে পারেন না। দাদার মুখে তার আরো কত গল্প শুনেছি, কোন বদভ্যাস নেই ওর। যখন কলেজে বি,এ পাশের রেজাল্টে প্রথম দশ জনের সেও একজন হয়েছিল, বৌদি সুভদ্রা সহ আমাদের বাড়ি এসেছিল; তাও বছর চারেক হয়ে গেছে। এরপর আর ভরত দাদার সঙ্গে আমার দেখা নেই। 

-’সে কি , তুমি কি ভরত দাদার ছেলে, উজ্জ্বল’ ? কথাটিও শেষ করতে পারলাম না; ভ্যাবাচেকা খেয়ে জলন্ত বিড়িটা পায়ের নিচে পিষে ফেল্ল। যেন আমি দেখতেই পাই নি। আমার চেহারার অনেক পরিবর্তন হয়েছে, তাও আরো এই রোদে, আমাকে কেউ আর আজ সুধীর বাবু বলবে না। তবু ছেলেটি থতমত খেয়ে পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে ভুলে নি। আমি আশ্চর্য, আমাকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো।

-’কি হয়েছে বাবা, বলবে তো ! দোকানদার লতিফ বল্ল: ‘দুই মাস হলো ভরত কাকা হার্ট এটাকে মারা গেছেন’। আমার শরীরে যেন কম্পন অনুভব করলাম।

-’বলো কি ! আমার এমন কপাল, দাদার মৃত্যু সংবাদটি আমি পেলাম না’। চোখ দিয়ে আমারও জল গড়িয়ে পড়লো। তিনি আমার শুধু দাদা নন, বড় কাছের মানুষ; একজন বন্ধুর মত। আমরা তো প্রায় একই বয়সের ছিলাম। তবে মাথায় সাদা চুল না থাকলে কেউ ভাবতেই পারবে না, তিনি ছেলে মানুষ না বুড়ো। তার গায়ে ছিল এই বয়সেও যেন সোনার রং। সংসারের দুঃখ দৈন্য মোটেই কাবু করতে পারে নি দাদাকে। 

-’চলুন না কাকা বাবু, মাকে একটু শান্ত্বনা দিয়ে যাবেন। মার না নাওয়া, না খাওয়া, না মুখে একটু হাসি, সেই দিন থেকে । আমি বারবার বলি, মা তুমি ভেঙ্গে গেলে আমি যাবো কোথায়’?
- ‘তুমি না বল্লেও আমি বৌদিকে না দেখে যাবো, ভাবছ’ ?

দোকানের ঠিক পিছনেই ক্ষেতের আলপথ ধরে আমি আর উজ্জ্বল হাঁটছি। প্রায় মিনিট পাঁচেক হেঁটে ওদের বাড়ি পৌঁছলাম। ছনের চোট্ট একটি ঘর। বাঁশের বেড়া। অবিকল আমাদের ঘরটির মত। বাইরে একটু উঠোন। উঠোনে দুইটি গরু বাঁধা। তাও এই ভর দুপুর রোদে। এই কাঠ ফাটা রোদে ওরা হয়ত পুড়ে যাচ্ছে। বোবা বলেই কাঁদতে পারছে না। কিন্তু দাদাকে আমি চিনি। খুবই নরম, দয়ায় ভরা মনটি। তিনি বেঁচে থাকলে এমনটি হতে পারত না। আগে বিরাট একটি কাঁঠাল গাছ ছিল এখানে। রোদে অন্তত একটু ছায়া পেতো গরুগুলো। অভাবের তাড়নায় হয়ত বিক্রি করতে হয়েছে। গাছের মুথোটি দেখে বুঝতে পারলাম, গাছটি সদ্য কাটা হয়েছে। বৌদি বরাবরই আমাকে সুধীর আর মালতিকে ‘সোনা দিদি’ বলে ডাকতেন। আমাদের পদশব্দ শুনেই ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন বৌদি।

-’ও, সুধীর’। আর কিছুই বলতে পারলেন না। শাড়ির আঁচলে মুখখানি চেপে ধরেছেন। আর চোখে যেন জল উপচে উঠেছে। আমার সবচেয়ে খারাপ অভ্যেসটি হলো, কারও দুঃখ অশ্রু দেখলেই ঠোঁট আর জিভ তাদের শক্তি হারিয়ে ফেলে। যেন বাকরুদ্ধ হয়ে যায় আমার। জড়িয়ে ধরলেন আমাকে। টেনে নিয়ে ঘরে বসালেন। এতক্ষণে উজ্জ্বল ঐ কাঁঠালগাছের মুথোর উপরে দাঁড়িয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে কাঁদছে।

-’আমি বিন্দুবিসর্গ কিছুই জানতে পারি নি, বৌদি। আজকেই জানলাম’। অন্যদিকে তাকিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বল্লেনঃ
-’কেন জানি তিন চার মাস যাবত প্রায় প্রতিদিন তোমাদের কথা বলতেন; সুধীরটাকে বহুদিন দেখি না। আগে বাজার টাজারে আমার দোকানে এসে বসত। যেন ভুলে গেছে আমাদের, ইত্যাদি’।
-’চাকরি শেষ হওয়ার পর, আমি আর কোথাও যাই না, বৌদি। তোমাদের কথা বারবার মনে হয়েছে। তা ছাড়া তোমার সোনা দিদির শরীর বর্তমানে খুব খারাপ। বিছানায় পড়ে গেছে। বছর আগে তো অসুখে বাম হাতটাই অবশ হয়ে গিয়েছিল’। 
-’কবে হলো এমন দিদির, কিছুই জানতে দিলে না গো, সুধীর !’

ছেলেটা রৌদ্র দাঁড়িয়ে কাঁদছে, ওকে আমি গিয়েই ঘরে টেনে নিয়ে আসলাম। আমার বুকের ভেতর হঠাত করেই চিন চিন করে উঠলো। মেয়ের বাড়িতে যাওয়ার শক্তি যেন হারিয়ে ফেলছি। আর শ্বাসকষ্ট তো অনেক দিনের। যখন মনে একটু অশান্তি নেমে আসে শ্বাসকষ্টটাও বেড়ে যায়। ঘরের কোণায় দেখলাম, দাদার ভ্রাম্যমান দোকান; বাঁশের বেতিতে বানানো খাঁচা। এই বয়সেও মাথায় করে নিয়ে যেতেন ঐ ওষধি দোকান, গ্রাম জনপদের সাপ্তাহিক ছোট ছোট বাজারগুলোতে। খবর কাগজে তৈরি হাজারো পুটলা রাখা ওখানে; কোনটায় সোহাগা, কোনটায় এক চিলতে কর্পূর, কোনটায় পটাশিয়াম পারমাঙ্গানেট, আরো কত কি। গ্রামেগঞ্জে কই ডাক্তার ? কবিরাজি ঔষধ আর এ রকম সৎ হৃদয়বান কর্মী ছাড়া আর কে বা আজকাল গরিবের পাশে থাকে। এ জন্যে ব্যবসাটা চলত ভালোই এবং ছোট তাদের সংসারটি কেটে যেত কোনভাবে। আর ছেলেটাও ছিল বড়ো মেধাবী। বৃত্তির পয়সা কড়ি যা পেতো, তাতে তো গ্র্যাজুয়েশনটা শেষ করতে পেরেছে কৃতিত্বের সাথেই। বৌদিকে আর ছেলেটিকে কিভাবে যে প্রবোধ দেব বুঝতে পারছি না। 

-’বৌদি, তুমি যদি ভেঙ্গে পড়, ছেলেটির কি দশা হবে, ভেবে দেখেছো’ ?
-’’সুধীর ! জানো, উজ্জ্বল চার পাঁচ জায়গায় লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেছে। মৌখিক পরীক্ষার ডাকও এসেছে। ব্যাস, ঐ পর্যন্তই। সার্টিফিকেটের আজকাল আর যেন দাম নেই। মামা কাকা থাকলে আর সার্টিফিকেটের দরকার হয় না। আমাদের কি গতি হবে, একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া কেউ জানে না’।
উজ্জ্বল ডুকরে তখনও কাঁদছিল। আমি নিস্তব্ধ নির্বাক হয়ে গেলাম। কোন কিছুই আর বলতে পারলাম না। বৌদিকে বল্লামঃ 
- ‘আমার একটু উঠতে হয়, বৌদি !’
-’সে কি, গরিব হয়েছি বলে, এক মুঠো ভাত খাওয়াতেও পারবো না, সুধীর ?’
- ‘ মেদেনীপুর যাবো। উমা মেয়েটা নাকি অসুস্থ। মালতির আবদার একবার যাই ওখানে’।

উজ্জ্বল বল্লো আজ নাকি বাস সমিতির ধর্মঘট। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত। আমার শরীরটা আরও নিস্তেজ হয়ে গেল যেন। মালতিকে তবে কি বলবো ? ওতো কাঁদতে কাঁদতে মরেই যাবে। আমার শ্বাসকষ্ট ও স্বাস্থ্যের অবনতিতে ভয় পেয়েই উজ্জ্বলকে বল্লেনঃ
-’তোর কাকাকে পৌঁছে দিয়ে আয়, খোকা’।

তখন গোধূলি বেলা। অন্ধকার হতে বাকি নেই। আমাকে যেন শিশুর মতই হাত ধরে ধরে হাঁটছে উজ্জ্বল। ফিরছি আর ভাবছি, কোনদিন মালতিকে মিথ্যে বলি নি, আজকে ঐ টুকু মিথ্যে ‘উমা ভালোই আছে’ বল্লে পাপ হবে না। ছমছম অন্ধকার ছেয়ে গেছে ততক্ষণে। বৌদি ছেলেটিকে সঙ্গে না দিলে রাস্তায়ই পড়ে থাকতাম হয়ত।
ঘরটির যখন কাছাকাছি, দেখলাম ঘরে আলো নেই। মনে প্রশ্ন জাগলো, তাহলে কি পারুলকে আসতে দেয় নি ওর বড় ভাই ? ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার ভয়ে নিঃশব্দে ঘরে ঢুকে আমি কুপি বাতিটা জ্বালাতেই দ্যাখি, মালতি তাকিয়ে আছে। খাবার ঐ ভাবেই পড়ে আছে। জলের গ্লাসটা কাত হয়ে পড়ে রয়েছে। বিছানা, বালিশটা ঐ জলেই সিক্ত। উজ্জ্বল দুই হাতে প্রণাম করলো। তবু নিরুত্তর মালতি। আমার দিকে পলকহীন দৃষ্টি।
-’মালতি, উমা ভালোই আছে। চিন্তা করো না’। 

উজ্জ্বল হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। আমি জড়িয়ে ধরে বল্লাম, মালতি, শেষে তুমিও আমাকে ছেড়ে গেলে।  


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন