সোমবার, ১৪ মে, ২০১৮

শব্দযুদ্ধের খাতায় নিরঞ্জন ।। সকাল রায়


















শব্দযুদ্ধের খাতায় নিরঞ্জন

নিরঞ্জন দা’ মরে গেছে সেই কবে
আমার তখন সতের বছর বয়স। 
পূর্ণিমাভরা সন্ধ্যেয় তার চায়ের দোকানের পাশ দিয়ে যেতে দেখলেই বলতেন-
-আজ ভয়াবহ মন খারাপ, তোর কথার সমুদ্র থেকে কিছু শুনিয়ে যা।
আমি লাজমুখে দাঁড়াতাম গনগনে চুল্লির পাশে।
বলতাম, দাদা আরেকদিন বলব, কাজ আছে, বাড়ি যাই।
তিনি বলতেন-মাত্র পাঁচ মিনিট সময় নেব তোর
 
আমার সেই পাঁচ মিনিটের ঘোর...
মুখে যা আসত বলতাম। সব বানানো কথা, সব মিথ্যের ফুলঝুড়ি, সব আবেগী গল্প।
নিরঞ্জন দা’ সব শুনত, হেসে বলত তুই তো কবি হয়ে যাচ্ছিসরে...
আমি ঠিক জানতাম, 
কবি হওয়া সহজ নয়। 
অত প্রতিভার সমুদ্র আমার মাথায় নেই। 
তবুও তার কথায় হাসির ঝিলিক দিতাম। 
তারপর ধোঁয়াবৃষ্টির চা খেয়ে বাড়ি ফিরতাম।
 
কোনো কোনো দিন কলম নিয়ে বসতাম লিখতে-
কিন্তু কিছুতেই মনে পড়ত না, 
মন থেকে ভাসা সেইসব কথামালা, 
কিছুতেই লিখে উঠতে পারতাম না একটা কবিতা।
 
এখন নিরঞ্জন দা নেই!
তবুও পূর্ণিমা এলেই সেই রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে কবিতার মতো করে শব্দযুদ্ধ খেলি-
কিন্তু বাড়ি ফিরতেই সেই আগের মতোই সব ভুলে যাই। 
লিখতে পারি না একটাও কবিতা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন