সোমবার, ১৪ মে, ২০১৮

গল্পে কোন শেষ নেই ।। এ বি এম সোহেল রশিদ









গল্পে কোন শেষ নেই


আনাজপাতির ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা লাল টমেটো
ইশারায় ডাকে কাফন সাদা কাটিং বোর্ডের উপর 
কিছু বুঝার আগেই ওষ্ঠজোড়ায় লেপটে যায় নির্দ্বিধায়
কাঁচামরিচের ঝালে নয় কিংবা পেয়াজের ঝাঁজেও নয়
বৃষ্টি নোঙর ফেলে অবহেলিত রান্নাঘরে নিষ্কাম শূন্যতায়।
একলা ঘরে ভোজনের আয়োজনে
দু’মুঠো চাল না হয় ফুটিয়ে নিবো
বিরহ-আগুনে ব্যথার উনুনে বিষণ্ণ এই দুপুরে

এলোমেলো হাঁড়িপাতিলগুলো বড্ড বেহায়া
সুযোগ পেলেই নরম আঙুলের স্পর্শ খুঁজে
শাড়ির আঁচল আর বাতাসের দ্বন্দ্ব বোঝে
এদিক সেদিক অথবা নস্টালজিয়ার পুকুরে

মুরগির একহাঁটু ঝোলে, ছেড়ে দেবার আগেই
তেজপাতা ঘাড় ঘুরিয়ে বলে আমার রঙ নেই
হতাশাদের এমনেতেই কোন রঙ থাকতে নেই

নক্ষত্র রাজ্য থেকে ঠিকঠাক বেছে নিয়ে
কপালে লাগাতাম লাল টিপ নয় পূর্ণিমার চাঁদ
আর ........ কাছে যেতেই
তুমি রেগেমেগে দূরে ঠেলে বলতে হঠাৎ;
সামান্য খিদে পেলেই লিপস্টিক খেতে নেই,

ফুলকপি আর মটরশুঁটি সবজির রেসিপিতে শুধুই খুনসুটি
সামান্য একটা আলু বাড়িয়ে দেয় সদ্য সিঙ্গেল হওয়ার স্বাদ
সাথে আধকাপ গাজরকুচি, একমুঠো ডাল আর একটা ডিম
দিয়ে দিলাম কয়েকটা সিম; এ এক অমৃত ডিস, ঘুণপোকারা
স্মৃতিফ্রেমে তখনও ফিসফিস। আজ সারাদিন বন্ধ অফিস

গত ছুটিতেও তুমি ছিলে; ছিল ভুনা খিচুরি, টকবেগুণ, হাঁসভুনা
পোড়া মরিচ ভর্তা, শেষপাতে দই। আর ঘরজুড়ে ছিল সুখের হৈ চৈ
বৈশাখী ঝড়ে দু’জন দুজনার, তখন সময়টুকু ছিল শকুন্তলার
অরণ্যের মদিরায়, সুখ অর্ধেক তোমার, অর্ধেক আমার
এমন ছুটি কাটিয়েছি ক’টা? খুব একটা বেশী নয়, হাতেগোনা

সব গল্পের একটা শেষ থাকে, থাকে মধুর পরিণতি
রাজ্য জয়, কষ্ট জয়, মন জয়ের নানান কৌশলে
এগিয়ে যায় পৃথিবীর সব পৌরাণিক প্রেমিকজুটি
ছলে বলে ঐশ্বরিক আশীর্বাদে সুখের দোলাচলে;
অথচ আমাদের গল্পে কোন শেষ নেই, নেই কোন বিরতি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন